প্রতারণার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে প্ল্যাটফর্মকেই: ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা

‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিত যে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো প্ল্যাটফর্মে প্রতারকদের বিজ্ঞাপন থাকবে, ওই প্রতিষ্ঠানকেই প্রতারণার ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন এক ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা। ক্রর্মবর্ধমান সাইবার প্রতারণা মোকাবেলায় বৃহত্তর চেষ্টার অংশ হিসেবে এমনটাই চান তারা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2022, 07:12 AM
Updated : 2 Feb 2022, 07:13 AM

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাজ্যে সাইবার প্রতারণা ও জালিয়াতির হার বেড়েছে লক্ষণীয় মাত্রায়। একে ডিজিটাল মহামারীর সঙ্গে তুলনা করছেন কেউ কেউ।  

যে ব্যাংক সেবাগ্রাহকরা নিজেদের নিরাপত্তা অটুট রাখতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেন, তাদের কেউ প্রতারণা বা জালিয়াতির শিকার হলে, সেক্ষেত্রে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছে স্থানীয় ব্যাংকগুলো। কিন্তু সামাজিক মাধ্যম আর অন্যান্য অনলাইন সাইটের ব্যবহারকারীরা নিয়মিত প্রতারণার শিকার হলেও, এ খাতে এমন কোনো বিধিনিষেধ বা নীতিমালা নেই বলে রয়টার্সের কাছে মন্তব্য করেছেন ট্রেজারি কমিটি’র চেয়্যারম্যান মেল স্ট্রাইড।   

“সরকারের উচিত এমন কোনো ব্যবস্থা খুঁজে বের করা যা দূষণকারীকেও ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করবে।”

“অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো এই জিনিসগুলো হোস্ট করে, কিন্তু ক্ষতিকর জিনিসগুলো সরাতে যথেষ্ট করে না তারা। অন্যদিকে তারা ঠিকই আর্থিক সুবিধা পেতে থাকে কারণ তারা বিজ্ঞাপনী আয় পাচ্ছে।”-- যোগ করেন স্ট্রাইড।

আইনপ্রণেতাদের এমন বক্তব্যের মুখে প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ব্রিটেনে ফেইসবুক, টুইটার ও মাইক্রোসফটের প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘ট্রেডইউকে’।

সম্প্রতি আর্থিক অপরাধ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওই ট্রেজারি কমিটি। ওই প্রতিবেদনেও অনলাইনে প্রতারণার শিকারদের ক্ষতিপূরণ দিতে প্ল্যাটফর্মগুলোকে দায়বদ্ধ করতে সরকারের কাছে জোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ রয়েছে, ডিসেম্বর মাসেই আর্থিক সেবার বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য ব্রিটেনের ‘ফাইন্যানশিয়াল কনডাক্ট অথরিটি’র অনুমোদন বাধ্যতামূলক করতে ফেইসবুক, টুইটার ও মাইক্রোসফট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার কথা জানিয়েছে টেকইউকে।  

তবে এই পরিবর্তনগুলোর জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়নি এবং অন্যান্য শীর্ষ প্ল্যাটফর্মগুলো একই পথ অনুসরণ করছে না বলে উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে। সাইবার প্রতারণা মোকাবেলা চেষ্টা একটি মন্ত্রণালয় বা নির্দিষ্ট কোনো মন্ত্রীর অধীনে নিয়ে আসা প্রয়োজন কি না এবং সাইবার প্রতারণা মোকাবেলায় প্ল্যাটফর্মগুলো যথেষ্ট তৎপর কি না, সেই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত বা প্রতিক্রিয়া জানায়নি যুক্তরাজ্য সরকার।

অক্টোবর মাসে প্রকাশিত রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকিং প্রতারণার বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ব্রিটেন। ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসেই ব্যাংকিং খাত থেকে প্রতারণার মাধ্যমে  একশ’ কোটি ডলার চুরি হয়, যা ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।