কোভিড মহামারীতে কিউআর কোডের ব্যবহারে বেড়েছে অনেক। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন রেস্তোঁরা হাতে হাতে মেনু পৌঁছানোর বদলে তুলে দিয়েছে কিউআর কোড। সেটি মোবাইল ফোনের অ্যাপ দিয়ে স্ক্যান করে নিজের ফোনের পর্দাতেই মেনু দেখা সম্ভব।
আর এসব কারণেই নড়েচড়ে বসছে সাইবার অপরাধীরা, দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে শুরু করেছে। স্ক্যামাররা নিজেরা ক্ষতিকারক কিউআর কোড তৈরি করছে যা গ্রাহকের অজান্তেই বিভিন্ন তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদের সাইট সিনেট। এইসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে ব্যাংকিং বা ব্যক্তিগত তথ্যের মতো বিষয়।
অ্যাপ সিকিউরিটি কোম্পানি ‘এফ৫’-এর নিরাপত্তা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাঞ্জেল গ্রান্ট। তিনি বলেন, “যখনই কোনো নতুন প্রযুক্তি আসে, সাইবার অপরাধীরা সেটিকে কাজে লাগানোর উপায় খোঁজার চেষ্টা করে।” আর এ বিষয়টি কিউআর কোডের মতো প্রযুক্তির বেলায় বিশেষভাবে সত্য। লোকজন জানেন এই প্রযুক্তি কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তবে এর খুঁটিনাটি তারা নাও জানতে পারেন, তিনি বলেন। “আর এসব কারিগরি জ্ঞান না থাকার কারণে মানুষকে বিভ্রান্ত করা সহজ।"
কিউআর কোডের পুরো নাম কুইক রেসপন্স কোড। ১৯৯০-এর দশকে জাপানে উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তির প্রথম ব্যবহার ছিল মোটরগাড়ি শিল্পে উৎপাদন পরিচালনায়। এখন যে কেউ চাইলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন পছন্দসই কিউআর কোড।
জাল কিউআর কোড হয়তো আপনার ফোনে গোপনে ম্যালওয়্যার ডাউনলোডের মতো কিছু করবে না। তবে এগুলো আপনাকে নিয়ে যেতে পারে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড বা অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে এমন ওয়েবসাইটগুলিতে।
অন্য যে কোনও ফিশিং স্কিমের মতোই ক্ষতিকারক উদ্দেশ্যে কিউআর কোডগুলি ঠিক কতোবার ব্যবহার করা হয় তা জানা অসম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে পরিমান ফিশিং স্ক্যাম হয় একটি ছোট শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করছে কিউআর কোড স্ক্যাম। তবে কিউআর কোডের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য স্ক্যাম সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘বেটার বিজনেস ব্যুরো’।
বিভিন্ন সংবাদ আর সচেতনতামূলক বার্তার কারণে অনেকেই এখন জানেন যে, ইমেইলে ফিশিং লিঙ্ক এবং সন্দেহজনক অ্যাটাচমেন্ট থাকতে পারে, যতোই মনে হোক না কেন মেইলগুলো কোন ব্যাংক থেকেই এসেছে। তবে, এই সতর্কতা সাধারণত কিউআর কোড স্ক্যান করার সময়ে থাকে না।