মঙ্গলে জৈব অণুর সন্ধান পেয়েছে নাসার পার্সিভিয়ারেন্স রোভার

মহাকাশ গবেষকদের জন্য উত্তেজনাপূর্ণ নানা ঘটনা ঘটছে মঙ্গলের জেজোরো আগ্নেয়গিরি মুখে। ছবি তোলা আর নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি গ্রহটির ভূতত্ত্বের নানা গোপন বিষয় আবিষ্কার করছে নানার পার্সিভিয়ারেন্স রোভার, সেই তালিকায় আছে জৈব অণুও।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2021, 11:37 AM
Updated : 19 Dec 2021, 11:37 AM

আগ্নেয়গিরি মুখের পাথর আর ধূলিকণার অণুতে কার্বনের উপস্থিতি চিহ্নিত করতে পেরেছে পার্সিভিয়ারেন্স রোভারের শার্লক (স্ক্যানিং হ্যাবিটেবল এনভায়রনমেন্ট উইথ রামান অ্যান্ড লুমিনেসেন্স ফর অর্গানিক্স অ্যান্ড কেমিকেলস) নামের যন্ত্রপাতি।

তবে, মঙ্গলে ‘জৈব অণু’ আবিষ্কারের খবরে উচ্ছসিত হওয়ার সুযোগ কম বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট। পার্সিভিয়ারেন্স রোভারের মূল উদ্দেশ্য হলো মঙ্গলের বুকে প্রাচীন জীবাণুর চিহ্ন খোঁজা। কিন্তু নাসা বলছে, “জৈব অণুর সন্ধান পাওয়ার মানে এই নয় যে, জেজেরোতে এক সময় প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। জৈবিক ও অ-জৈবিক উভয় পদ্ধতিতেই ওই জৈব অণুর সৃষ্টি সম্ভব।”

মঙ্গলের ভিন্ন একটি অঞ্চলে ‘গেল’ আগ্নেয়গিরি মুখে কাজ করছে নাসার কিউরোওসিটি রোভার।  জৈব যৌগের সন্ধান পেয়েছে এই রোভারটিও। তবে নাসার রোভারগুলোর কোনোটিরই আবিষ্কার মঙ্গলে অতীতে কোনো সময়ে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল– এমন অকাট্য প্রমাণ দেয় না।

পার্সিভিয়ারেন্সের জৈব অণু আবিষ্কারে উত্তেজিত হওয়ার মতো কিছু নাসা না পেলেও ভূতাত্ত্বিক নানা বিষয় নিয়ে ঠিকই উত্তেজিত হচ্ছেন গবেষকরা। জেজেরো আগ্নেগিরির মুখে প্রাচীন লেকটির তলদেশ লাভা প্রবাহ থেকে সৃষ্টি হয়েছিল বলে নিশ্চিত হয়েছেন তারা।

আগ্নেয়গিরির মুখে থাকা একটি পাথরে লাভা শীতল হয়ে পাথরের পরিণত হওয়ার সময় সৃষ্ট ক্রিস্টাল চিহ্নিত করেছে পার্সিভিয়ারেন্স রোভার।

“পাথরটি পরবর্তীতে পানির প্রবাহে পরিবর্তিত হয়েছে কয়েকবার। ভবিষ্যতের গবেষকদের জন্য গুপ্তধনের খনির মতো কাজ করবে পাথরটি যা থেকে জেজেরোর অতীত ঘটনা ও তার দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে পারবেন গবেষকরা। মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠে যখন পানি ছিল সেই সময়টা আরও ভালোভাবে বুঝতে ও গ্রহটির শুরুর দিককার ইতিহাস উন্মোচন করতে পারবেন তারা।”-- মন্তব্য করেছেন পার্সিভিয়ারেন্স প্রকল্পের গবেষক কেন ফারলে।

পাথরটি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে পার্সিভিয়ারেন্স। আর রোভার থেকে নমুনাগুলো পৃথিবীতে আনতে নতুন মিশনের পরিকল্পনা করছে নাসা। কাজটি জটিল হলেও পৃথিবীর গবেষণাগারে নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করতে পারলে তা থেকে মঙ্গল মানব প্রাণ ধারণের উপযোগী কি না, সম্ভবত সে প্রশ্নের উত্তর মিলবে।