মিথ্যাচারের দায় ‍ব্যবহারকারীর- সাফ কথা শীর্ষ মেটা কর্মকর্তার

প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলো নয়; অনলাইনে মিথ্যাচার, ভুয়া ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচারের দায় ব্যবহারকারীদের উপর বর্তানো উচিত বলে মনে করেন মেটা প্ল্যাটফর্মসের শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু বসওয়ার্থ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2021, 08:27 AM
Updated : 14 Dec 2021, 08:27 AM

সম্প্রতি ‘অ্যাক্সিওস অন এইচবিও’-তে দাওয়া এক সাক্ষাৎকারে সামাজিক মাধ্যমে কেউ তার ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতে চাইলে, মেটা সেটি ঠেকানোর কেউ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বসওয়ার্থ। “প্রত্যেক ব্যক্তি নিজেই সিদ্ধান্ত নেন তারা কী বিশ্বাস করবেন, আর কী বিশ্বাস করবেন না। তারাই সিদ্ধান্ত নেন যে তারা কী শেয়ার করবেন আর কী করবেন না।”-- অ্যাক্সিওসে বলেন বসওয়ার্থ। প্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে সমাজব্যবস্থা, রাজনীতি, ব্যবসা ও সংবাদমাধ্যমের সংঘাতের মতো বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে তথ্যচিত্র কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানটি।

সঠিক তথ্য প্রচারের চেষ্টার পরেও করোনা মহামারীর ভ্যাকসিন নিয়ে ব্যবহারকারীর দ্বিধা বাড়াতে মেটা ভূমিকা রাখছে কি না, সে প্রসঙ্গে বসওয়ার্থের মত– একটি গণতন্ত্র যেখানে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে, সেখানে মানুষ পছন্দমতো যে কোনো তথ্য খুঁজে নিতে পারেন। “আপনাদের সমস্যা ওই মানুষগুলোর সঙ্গে। আপনাদের ফেইসবুকের সঙ্গে কোনো সমস্যা নেই। সেটার দায় আপনি আমার উপর চাপাতে পারেন না।

২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের কথিত কারচুপি, করোনা মহামারী, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে মিথ্যাচার ও ভুয়া তথ্য প্রচারের সহজ সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ফেইসবুক তথা মেটার বিরুদ্ধে। প্ল্যাটফর্মটিতে উগ্র-ডানপন্থী মিথ্যাচার অন্য যে কোনো সূত্রের মিথ্যাচারের চেয়ে বেশি বিস্তার পায়– সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। 

ব্যবহারকারীর ফিডে নির্ভরযোগ্য তথ্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সম্প্রতি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে মেটা। নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমে দুইশ’ কোটির বেশি মানুষকে কোভিড-১৯ নিয়ে সঠিক তথ্য জানানোর দাবি করছে ফেইসবুক। ২০২০ সালেও আলাদা ‘লেবেল’ কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীদের নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল প্রসঙ্গে জানান দিয়েছে সাইটটি।

তবে, ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ সমালোচকরা অভিযোগ তোলেন– সামাজিক মাধ্যমে ভ্যাকসিন নিয়ে প্রচারিত মিথ্যাচারে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভাকসিন নিয়ে সৃষ্ট দ্বিধার ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।

বসওয়ার্থ বলছেন, গবেষকদের একীভূত জ্ঞান সত্ত্বেও, যথেষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বাস্তবিক সত্য নির্ধারণ করে ব্যবহারকারীদের মত প্রকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার সক্ষমতা মেটার নেই। “কোনটা মিথ্যাচার, আমাদের সেটি নির্ধারণের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এবং আমার মতে এটাই ঠিক আছে।” 

২০২১ সালে মেটার প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তার পদটিতে কাজ শুরু করবেন বসওয়ার্থ। বরাবরই প্রতিষ্ঠানের ‘ব্যবসায়িক বিস্তার’ কেন্দ্রিক মনোভাবকে সরব সমর্থন দিয়ে এসেছেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠানের অ্যালগরিদম “আসলে মানবসত্ত্বার চাহিদাকেই প্রকাশ করছে” বলে দাবি তার।