নিজ খরচে আইএসএসের পথে জাপানের শতকোটিপতি

জাপানের শতকোটিপতি ইউসাকু মায়েজাওয়া রওনা হয়েছেন মহাকাশে। এক দশকের মধ্যে এই প্রথম কোনো ‘সাধারণ নাগরিক’ নিজ খরচে মহাকাশ পর্যটনে যাচ্ছেন।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2021, 01:08 PM
Updated : 8 Dec 2021, 01:08 PM

কাজাখস্তানে রাশিয়ার কসমোড্রোম থেকে বুধবার বাংলাদেশ সময়ে বেলা ১:৩৮ মিনিটে সয়ুজ ক্যাপসুলটির উৎক্ষেপণ হয়ে সকাল সন্ধ্যা ৭:৪১ নাগাদ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে ডক করার কথা রয়েছে।

‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন ( আইএসএস)’-এ ১২ দিনের যাত্রায় মায়েজাওয়ার সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন অভিজ্ঞ রাশিয়ান নভোচারী ও মিশন প্রধান আলেকজান্ডার মিসুরকিন, মায়েজাওয়ার প্রোডাকশন অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং ভিডিওগ্রাফার ইয়োজো হিরানো। মহাকাশ স্টেশনের চারপাশে ভাসতে ভাসতে ফ্যাশন মোগল হিসেবে পরিচিত মায়েজাওয়ার ফুটেজ ধারণ করবেন হিরানো।

“মহাকাশে জীবন কেমন সেটা জানার জন্য আমি বরাবরই কৌতূহলী। ফলে, আমি নিজেই খুঁজে বের করছি এবং আমার ইউটিউব চ্যানেলে বিশ্বের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার পরিকল্পনা করছি।” – সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে বলেছেন মায়েজাওয়া।

গত এক দশকে বিশ্বব্যাপী মহাকাশ শিল্পে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে, এই মিশনকে তারই উদাহরণ হিসেবে দেখছে সিএনএন। এই ধরনের মহাকাশ পর্যটন মিশন এর আগেও ঘটেছে। এই শতকের শুরুতেই রোমাঞ্চ সন্ধানী ধনীদের জন্য আইএসএস-এর উদ্দেশ্যে আটটি মিশন পরিচালিত হয়েছে। এর সবগুলোর আয়োজক ছিল মার্কিন মহাকাশ পর্যটন প্রতিষ্ঠান ‘স্পেস অ্যাডভেঞ্চার্স’। প্রতিষ্ঠানটি ওই মিশনগুলোর জন্য ব্যবহার করেছে রাশিয়ান সয়ুজ ক্যাপসুল। কিন্তু, ২০১১ সালে নাসার স্পেস শাটল প্রোগ্রাম বন্ধ হওয়ার পর রাশিয়ার সয়ুজ নভোযানটি হয়ে ওঠে পেশাদার নভোচারীদের জন্য একমাত্র বাহন। ফলে থমকে যায় মহাকাশের পর্যটন মিশনগুলো।

কিন্তু এখন, ইলন মাস্কের স্পেসএক্স মহাকাশে পণ্য ও নভোচারী বহন শুরু করায় সয়ুজের ওপর চাপ অনেকটাই কমেছে।

আইএসএস-এ এরইমধ্যে কয়েকজন নতুন নভোচারীকে স্বাগত জানিয়েছে। এর মধ্যে এক রাশিয়ান অভিনেত্রী ও এক পরিচালক অক্টোবরে মাসের ১২ দিন কাটিয়েছেন স্পেস স্টেশনটিতে।

জাপানি ই-কমার্স সাইট জোজোটাউনের উদ্যোক্তা মায়েজাওয়া এই মিশনের জন্য কত খরচ করেছেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। স্পেস অ্যাডভেঞ্চার্সও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি। তবে, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান টম শেলি সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন, আইএসএস-এ এর আগের মিশনগুলোয় যাত্রীদের দুই থেকে চার কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। বর্তমান অর্থমূল্যে এটি পাঁচ থেকে ছয় কোটি ডলার হবে বলে যোগ করেন তিনি।

মায়েজাওয়া ও হিরানো, উভয়ের জন্যই এটি প্রথম মহাকাশযাত্রা। ফ্লাইটের জন্য তিন মাসের প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে তাদের। প্রশিক্ষণ চলাকালীন মায়েজাওয়া বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সবসময়ই কিছু না কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।

“২০০১ সালে যখন শতকোটিপতি ডেনিস টিটো মহাকাশ ভ্রমণ করেন,তখন তার প্রশিক্ষণ বেশ দীর্ঘ ছিল। এটি সম্ভবত ছয় মাস বা তারও বেশি ছিল, কারণ তার আগে কেউ এটি করেনি।”

মায়েজাওয়া, হিরানো এবং মিসুরকিন ১৯ ডিসেম্বর আইএসএস থেকে ফিরে আসার কথা রয়েছে। সব পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে, তারা কাজাখস্তানের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় অবতরণের জন্য প্যারাশুট ব্যবহার করবেন। সয়ুজের সব ফ্লাইটে এভাবেই ফেরের নভোচারীরা।