‘ক্রেতা নিরাপত্তার স্বার্থে’ সামাজিক মাধ্যম ছাড়লো প্রসাধনী ব্র্যান্ড

একাধিক সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্মে নিজেদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রসাধনী পণ্যের উৎপাদক, ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা ‘ল্যাশ (Lush) রিটেইল লিমিটেড’। প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণ ব্যবহারকারীদের “আরও নিরাপদ পরিবেশ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ” না নেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে অ্যাকাউন্টগুলো।

প্রযুকিত ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2021, 08:51 AM
Updated : 23 Nov 2021, 08:53 AM

খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন প্রণালীর প্রশ্নে যারা আমিষ ও প্রাণিজ পণ্য এড়িয়ে চলেন তাদের জন্যই প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি ও বিপণন করে ল্যাশ। প্রাণি হত্যা ছাড়া যেসব খাবার পাওয়া যায়, অনেকেই উদ্ভিজ্জ খাবারের পাশাপাশি সে সব খাবার খান, যেমন দুধ বা মধুর মতো খাবার। এরা ভেজিটিরিয়ান নামে পরিচিত। আরেক শ্রেণির লোকজন প্রণি থেকে পাওয়া কোনো খাবারই খান না বা এমন পণ্য ব্যাবহার করেন না। এরা ভিগান নামে পরিচিত।

ল্যাশের দাবি অনুসারে এদের সব পণ্যই হাতে তৈরি ও ভেজিটেরিয়ান এবং শতকরা ৮৫ ভাগ পণ্য ভিগান। প্রাণি অধিকার প্রশ্নে অতীতেও নৈতিক অবস্থান নেওয়ার নজির রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

সম্প্রতি ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় সাধারণ ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য অগ্রাহ্য করার অভিযোগ উঠেছে মেটা প্ল্যাটফর্মের মালিকানাধীন ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের বিরুদ্ধে; একই বিতর্ক আছে টিকটক ও স্ন্যাপচ্যাটের কার্যক্রম ঘিরেও। বিতর্ক ও সমালোচনার জেরে ওই প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বিশ্বের ৪৮টি দেশে প্রসাধনী পণ্যের উৎপাদক ও খুচরা বিক্রেতা ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানটি।

ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং স্ন্যাপচ্যাট অ্যাকাউন্ট বন্ধ করলেও ইউটিউব আর টুইটারে “আপাতত” সক্রিয় থাকবে ল্যাশ।

“অন্যত্র যোগাযোগের আরও ভালো মাধ্যম নির্মাণে”র কথা বলছে প্রতিষ্ঠানটি।

এর আগেও একবার যুক্তরাজ্যের বাজারের জন্য পরিচালিত সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে সদিচ্ছা থাকলেও মহামারীর লকডাউন চলাকালীন ক্রেতাদের সেবা দিতে তারা সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোতে ফিরতে বাধ্য হয়েছিল বলে সে সময় জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সামাজিক মাধ্যমের গুরুতর প্রভাব আমলে নেওয়া হচ্ছে না। “জলবায়ু পরিবর্তন যেভাবে আমলে না নিয়ে কয়েক দশক ধরে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমের বিরূপ প্রভাব নিয়েও একই ঘটনা ঘটছে বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি।

বিবিসি জানিয়েছে, ‘ল্যাশ কসমেটিক্স নর্থ আমেরিকা’র ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ৪০ লাখের বেশি ফলোয়ার আছেন। ফেইসবুকে প্রতিষ্ঠানটির ওই অঞ্চলের ফলোয়ারের সংখ্যা ১২ লাখ।

এই প্রসঙ্গে ‘ল্যাশ’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক কন্সট্যান্টিন বলেন “আমি সারা জীবন আমার পণ্যে ক্ষতিকর উপাদানের ব্যবহার এড়িয়ে চলেছি। কিন্তু এখন সামাজিক মাধ্যম যে আমাদের ঝুঁকির মুখে ফেলছে তার জোরালো প্রমাণ আছে। আমি আমার ক্রেতাদের ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাই না, তাই সময় এসেছে এটাকে হিসাবের বাইরে নিয়ে যাওয়ার।”

সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলো “বেস্ট প্র্যাকটিস গাইডলাইন” নিয়ে আসবে এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালা আইন হিসেবে পাশ হওয়ার আশাও প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।