ডিভাইস ও অ্যাপে ডার্ক মোড চালু করবেন যেভাবে: পর্ব ১

ডিভাইস বা অ্যাপের ফিচার হিসেবে ‘ডার্ক মোড’ এখন আর বিরল কিছু নয়। এতে চোখের উপর স্ক্রিনের তীব্র নীল আলোর চাপ যেমন কমে, তেমনি দীর্ঘায়ু হয় ডিভাইসের ব্যাটারি। অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, পিসি এবং ম্যাকসহ প্ল্যাটফর্ম ভেদে প্রায় ডিভাইস বা অ্যাপেই এখন ডার্ক মোড সুবিধা মেলে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2021, 12:33 PM
Updated : 16 Nov 2021, 12:33 PM

ডার্ক মোডের বিভিন্ন কথিত ‘উপকারিতা’ কতোটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত, সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকলেও ফিচারটির ব্যবহারকারীদের কাছে এর কদর কিন্তু কম নয়। চোখের জন্য আরামদায়ক বলে ডার্ক মোডের সুনাম করেন এর ব্যবহারকারীরা, দীর্ঘ সময় ডিজিটাল ডিভাইসের স্ক্রিনের দিতে তাকিয়ে কাজ করতে হলে ডার্ক মোড এক্ষেত্রে ‘সাপেবর’ বলেও আখ্যা দেন কেউ কেউ।

চোখের উপর চাপ কমানোর লক্ষ্যেই হোক বা ফিচার হিসেবে এর কার্যকারিতার বিচারে হোক, ডার্ক মোড ব্যবহারে আগ্রহী হতে পারেন ব্যবহারকারীদের যে কেউ। তবে প্ল্যাটফর্মভেদে ফিচারটি চালু করার উপায় সম্পর্কে অবগত নাই থাকতে পারেন পাঠক। বিভিন্ন অ্যাপ বা প্ল্যাটফর্মে ফিচারটি চালু করার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ওয়্যার্ডের প্রতিবেদনের আলোকে।

আইওএস

আইওএস ডিভাইসের ক্ষেত্রে আইফোন এক্সএস বা পরের মডেলগুলোর ওএলইডি ডিসপ্লেতে ডার্ক মোড বেশি কার্যকর। এক্ষেত্রে স্ক্রিনের পিক্সেলগুলোকে কালো না করে সরাসরি বন্ধ করে রাখে ফিচারটি, এতে বাঁচে ব্যাটারি খরচ।

আইওএস ডিভাইসে ডার্ক মোড চালু করার সহজতম উপায় হচ্ছে হোম স্ক্রিন থেকে সোয়াইপ করে কন্ট্রোল সেন্টারে যাওয়া। তারপর ব্রাইটনেস স্লাইডার চেপে ধরে রেখে স্ক্রিনের বাম পাশে নিচের দিকে থাকা ‘অ্যাপিয়ারেন্স’-এ ট্যাপ করে ডিভাইসের থিম লাইট মোড থেকে ডার্ক মোডে পরিবর্তন করে নিতে হবে।    

ডার্ক মোডের জন্য আলাদা বাটন যোগ করার সুযোগও আছে আইওএস ডিভাইসে। এ জন্য প্রথমে যেতে হবে সেটিংসে, সেটিংস থেকে কন্ট্রোল সেন্টার খুঁজে নিয়ে সেখান থেকে যেতে হবে কাস্টোমাইজ কন্ট্রোলে। ডিভাইসের আলোর তীব্রতা এক ট্যাপে কমিয়ে আনতে চাইলে এই ফিচারটি কাজে আসবে ব্যবহারকারীর।

আইওএস ডিভাইসে ডার্ক মোড চালু করার আরেকটি উপায় হচ্ছে সেটিংস পরিবর্তন করা। ‘ডিসপ্লে অ্যান্ড ব্রাইটনেস’-এ ট্যাপ করে পছন্দমতো ‘লাইট’ বা ‘ডার্ক’ অপশন বেছে নিতে পারবেন ব্যবহারকারী। নিচের টগল বাটনে ট্যাপ করে ডার্ক মোড স্বয়ংক্রিয়ও করে নিতে পারবেন ব্যবহারকারী।

অ্যান্ড্রয়েড:

অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ক্ষেত্রে ‘ডার্ক মোড’-কে ‘ডার্ক থিম’ বলেই আখ্যা দেয় গুগল। এক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো, একবার ডার্ক থিম চালু করে ফেললে গুগলের নির্মিত সবগুলো অ্যাপের কালার স্কিমও পাল্টে যায়, অর্থাৎ ডার্ক মোড এক সঙ্গে কার্যকর হয় গুগলের সবগুলো অ্যাপে।

তবে অ্যান্ড্রয়েডে ডার্ক মোড এসেছে ২০১৯ সালের নভেম্বরে। তাই অ্যান্ড্রয়েড ১০-এর চেয়ে পুরনো অপারেটিং সিস্টেম বা পুরনো ফোনে মিলবে না এই ফিচারটি। 

অ্যান্ড্রয়েডে ডার্ক মোড চালু করতে প্রথমে যেতে হবে সেটিংস অ্যাপে। তারপর ‘ডিসপ্লে’-তে ট্যাপ করে ‘অ্যাডভান্সড’ ট্যাপ করতে হবে। এখান থেকে ডার্ক মোড ইচ্ছে মতো চালু করতে বা বন্ধ করতে পারবেন ব্যবহারকারী।

এ ছাড়াও, বারবার ফিচারটি চালু বা বন্ধ করতে না চাইলে নোটিফিকেশন বারে জুড়ে দিতে পারেন কুইক সেটিং। এ জন্য স্ক্রিনের উপর থেকে নিচে সোয়াইপ করে কুইক নোটিফিকেশন স্ক্রিনটি খুলতে হবে, তারপর এডিট করার জন্য পেন্সিল আইকনে ক্লিক করে এডিট করে নিতে হবে যে সেখানে কোন সেটিংসগুলো থাকবে। স্ক্রল করে নিচে নেমে ডার্ক থিম খুঁজে বের করে ড্র্যাগ করে নিতে হবে পছন্দসই স্থানে।

ম্যাক:

অ্যাপলের দাবি, “কাজের মনোযোগ রাখা সহজ করে ম্যাকের ডার্ক মোড, কারণ আপনার কন্টেন্ট স্ক্রিনে গুরুত্ব পায় আর পেছনে পড়ে যায় কন্ট্রোল ও অন্যান্য উইন্ডোগুলো।” অ্যাপলের দাবির বৈজ্ঞানিক প্রমাণ খোঁজার সুযোগ কম থাকলেও ব্যবহারকারীদের মতে ডার্ক মোড চোখের উপর যে চাপ কমায়, সে বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ম্যাকওএস মোহাভি এবং পরের সংস্করণগুলোর যে কোনো অ্যাপল প্রোগ্রামে ডার্ক মোড ব্যবহারের সুবিধা পাবেন ব্যবহারকারী। মেইল, ফাইন্ডার এবং নোটসের মতো অ্যাপলের নিজস্ব প্রোগ্রামের পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষীয় যে অ্যাপগুলো ফিচারটি গ্রহণ করেছে তাদের ক্ষেত্রেও চলবে এটি।

ম্যাক কম্পিউটারে ডার্ক মোড চালু করতে প্রথমে স্ক্রিনের উপরের বাম কোণ থেকে অ্যাপল মেনুর সিস্টেম প্রেফারেন্সে যেতে হবে। অপারেটিং সিস্টেমের বাহ্যিক ‘লুক’ ও ডার্ক মোডে পরিবর্তনের ফিচারগুলো পাওয়া যাবে এখানেই। এক্ষেত্রে তিনটি আলাদা অপশন পাবেন ব্যবহারকারী। লাইট মোড আর ডার্ক মোডের পাশাপাশি দিনের সময়ভেদে কম্পিউটার যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইট মোড থেকে ডার্ক মোডে বা বিপরীতমুখী পরিবর্তন করে নেয়, সেটা ঠিক করে দেওয়ার সুযোগও পাবেন ব্যবহারকারী।