মার্কিনীদের স্পর্শকাতর ডেটা কিনছে দেশটির ট্রেজারি বিভাগ

মার্কিন নাগরিকদের ‘স্পর্শকাতর ডেটা’ কিনছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। চার মাস ধরে বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান বাবেল স্ট্রিটের কাছ থেকে ব্যবহারকারীদের ডেটা কিনতে এখন পর্যন্ত তিন লাখ ডলার খরচ করেছে মার্কিন সরকারের নির্বাহী বিভাগটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2021, 02:09 PM
Updated : 7 Nov 2021, 02:09 PM

এর আগে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাগু‌লোসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহারকারীদের স্পর্শকাতর ডেটা সরবরাহ করে খবরের শিরোনাম হয়েছিল বাবেল স্ট্রিট। প্রতিষ্ঠানটি লিংকডইন প্রোফাইলে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এআই সক্ষমতার ‘ডেটা-টু-নলেজ’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে যার কার্যালয় ওয়াশিংটন ডিসিতে।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট জানিয়েছে, তদন্তের প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে দুটি চুক্তির অধীনে চার মাস ধরে ডেটা সংগ্রহ করেছে মার্কিন সরকারের কোষাগার বিভাগটি। এর মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে এ বছরের জুলাই মাসে। অলাভজনক সংবাদমাধ্যম ইন্টারসেপ্ট বলছে, ওই চুক্তির অধীনে ‘অফিস অফ ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল’ (ওএফএসি) তদন্তকারীরা বাবেল স্ট্রিটের ‘লোকেট এক্স’ টুলের মাধ্যমে থেকে মোবাইল অ্যাপের অবস্থান ডেটায় প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন।

ওই চুক্তিতে অনুসারে, তথ্যগুলো ওএফএসি’কে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগে সহায়তা করবে। এনগ্যাজেট বলছে, মার্কিন সরকারের কার্যনির্বাহী বিভাগটি কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ‘ফোর্থ অ্যামেন্ডমেন্ট’ বা চতুর্থ সংশোধনীকে অবজ্ঞা করে ডেটা সংগ্রহ করছে।

যথাযথ প্রমাণ বা আদালতের সমন ছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাসী ও ধরপাকড় থেকে মার্কিন নাগরিকদের রক্ষা করে চতুর্থ সংশোধনী। বাবেল স্ট্রিটের কাছ থেকে মার্কিন কোষাগার বিভাগ যে ডেটা কিনছে তা বেনামি হলেও ওই ডেটার সঙ্গে নির্দিষ্ট ব্যক্তির যোগসূত্র খুঁজে বের করা তদন্তকারীর জন্য কঠিন কিছু নয় বলে জানিয়েছে এনগ্যাজেট।

দ্বিতীয় চুক্তিটি হয়েছে এ বছরের সেপ্টেম্বরে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগকে (আইআরএস) একটি টুল দিয়েছে যার মাধ্যমে ‘পাবলিক ডিজিটাল মিডিয়া রেকর্ড’ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। সোজা কথায়, সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট ও ফোরাম আলোচনার মতো অনলাইন কার্যক্রম দেখে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করবে আইআরএস।

এ রকম কন্টেন্ট দেখা আইনত বৈধ। তবে, ব্যাবেল স্ট্রিটের কাছে ব্যবহারকারীদের বায়োমেট্রিক ডেটাও চেয়েছে মার্কিন কোষাগার বিভাগ; যেমন- ঠিকানা ও বৈবাহিক অবস্থা যা দিয়ে একজন ব্যক্তির প্রোফাইল দাঁড় করানো সম্ভব।

এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মার্কিন সরকার “আক্রমণাত্মক নজরদারি”র পরিধি বাড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন টেক ইনকোয়্যারি প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক পোলসন।

এনগ্যাজেট জানিয়েছে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে নতুন আইন পাশের চেষ্টা করছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। প্রস্তাবিত আইনে ব্যবহারকারীদের ডেটা ক্রয়ের জন্য আদালতে অনুমতি নিতে হবে সরকারি সংস্থাগুলোকে। নতুন আইন হলে ব্যবহারকারীদের স্পর্শকাতর ডেটা সংগ্রহ করার আগে সরকারি সংস্থাগুলোকে অন্তত “আইনি পরীক্ষায় পাশ করতে হবে” বলে মন্তব্য করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইটটি।