লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, মেটা’র নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী, ১৩ বছরের কম বয়সী, অর্থাৎ শিশুদের অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি নেই ফেইসবুকে।
শিশুদের উদ্দেশ্যে পরিচালিত কোভিড টিকা নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধে ফেইসবুক আরও কঠোর নীতিমালা প্রচলন করছে বলে খবর জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট। কোভিড টিকা নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধে ফেইসবুক নীতিগত কড়াকড়ি আরোপ করেছিল ২০২০ সালের শেষ দিকে। তবে সেবার আলাদা করে উল্লেখ ছিল না শিশুদের কথা।
সাম্প্রতিক সময়ে মুনাফার লোভে শিশু ও কিশোরবয়সীদের মানসিক স্বাস্থ্য অগ্রাহ্য করার অভিযোগ উঠেছে ফেইসবুকের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটির সাবেকর কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেনের ফাঁস করা তথ্য অনুযায়ী, কিশোর বয়সীদের উপর ইনস্টাগ্রামের বিরূপ প্রভাবের বিষয়টি ফেইসবুকের নিজস্ব গবেষণাতে উঠে এলেও সেই বিষয়টি আমলে নেননি প্রতিষ্ঠানটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ফাঁস হওয়া নথিপত্র বিশ্লেষণ করে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে পড়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটি। চাপের মুখে শিশুদের জন্য ইনস্টাগ্রামের আলাদা সংস্করণ, ‘ইনস্টাগ্রাম কিডস’ স্থগিত করতে বাধ্য হয় তারা।
সম্প্রতি মূল প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে ফেইসবুক। বলা হচ্ছে, চলতি বিতর্ক আর সমালোচনা থেকে দূরত্ব তৈরির কৌশল হিসেবে মূল ফোকাস সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি, নাম পাল্টে ‘মেটা’ হওয়া তারই অংশ।
সাম্প্রতিক এক ব্লগ পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও)-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের কথা জানিয়েছে মেটা।
শিশুদের জন্য ক্ষতিকর কন্টেন্ট ও কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে মিথ্যাচার বন্ধের লক্ষ্যে ওই দুই সংস্থার সঙ্গে জোট বাঁধার কথা বলেছে প্রতিষ্ঠানটি। কোভিড -১৯ টিকা শিশুদের জন্য নিরাপদ নয়, অপরীক্ষিত বা অকার্যকর বলে ইঙ্গিত করছে এমন সব পোস্টকে বিবেচনা করা হবে শিশুদের জন্য ক্ষতিকর কন্টেন্ট হিসেবে।
এ ছাড়াও ব্যবহারকারীদের নিউজ ফিডে ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় মেটা বারবার মনে করিয়ে দেবে যে শিশুদের জন্য কোভিড-১৯ টিকার অনুমোদন মিলেছে। টিকা কোথায় পাওয়া যাবে, সেই তথ্যও চলে আসবে ব্যবহারকারীদের ফিডে।
মহামারীর শুরু থেকে কোভিড-১৯ এবং এর টিকা নিয়ে ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম উভয় প্ল্যাটফর্মে দুই কোটি ভুয়া তথ্য সম্বলিত পোস্ট মুছে দেওয়ার দাবি করে আসছে মেটা।
তবে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ বলছে, মেটা’র দাবি আর ফাঁস হওয়া নথিপত্রের থেকে পাওয়া তথ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য নেই। ফাঁস হওয়া নথিপত্র অনুযায়ী, কোভিড টিকা নিয়ে মিথ্যাচার মোকাবেলার সক্ষমতা বা প্রস্তুতির কোনোটিই নেই মেটা’র।
মেটা এধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকলে প্রতিষ্ঠানটি আরও আগেই এমন পদক্ষেপ নিত বলে মন্তব্য করেছে ভার্জ।