চাইলেই ফেইসবুক-ইউটিউব লাইভ বন্ধ করতে পারি: মোস্তাফা জব্বার

ফেইসবুক কিংবা ইউটিউবের মতো সোশাল মিডিয়ায় লাইভ ভিডিও প্রচার চাইলেই বন্ধ করার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনের দাবি করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2021, 05:25 PM
Updated : 27 Oct 2021, 05:25 PM

বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপে তিনি বলেন, “আমাদের যে প্রযুক্তি আছে, তাতে কোনো সাইট আমরা তাৎক্ষণিক বন্ধ করতে পারি কারও উপর নির্ভর করতে হয় না।

“এখন প্রশ্ন হচ্ছে সোশাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি? সোশাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তি অর্জন করেছি যে প্রযুক্তি দিয়ে ইচ্ছা করলে ফেইসবুকের ভিডিও বা লাইভ বন্ধ করতে পারব বা ইউটিউবের লাইভ বন্ধ করতে পারব। সেই সক্ষমতা অর্জন করেছি।”

“যখন কোনো সমস্যা হবে, তখন প্রয়োগ করতে সক্ষম হব,” বলেন তিনি।

দেশে ফেইসবুক কিংবা ইউটিউব সচল রেখে লাইভ বন্ধ করার কথা বলেছেন কি না, তা মন্ত্রীর এ কথায় স্পষ্ট নয়।

তবে পরে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে বোঝার সুযোগ রয়েছে যে লাইভ বন্ধে ফেইসবুক কিংবা ইউটিউব পুরোপুরি বন্ধের কথা বলেছেন তিনি।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, “সহজ উপায় কি ফেইসবুক-ইউটিউব বন্ধ করে দিতে পারি। মাথা ব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলা সমাধান নয়। যেটা প্রয়োজন, মাথা ব্যথা হয়েছে ওষুধ দিয়ে সারাতে হবে। এজন্য এসব বন্ধ করা হয়নি।”

সম্প্রতি কুমিল্লা ও রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার আগে ফেইসবুক লাইভে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। তখন নির্দিষ্ট এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সোশাল মিডিয়ায় ‘অপপ্রচারমূলক’ নানা তথ্য থাকার অভিযোগ করে এলেও তার অনেকগুলোই সরাতে সক্ষম হয়নি সরকার।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ফেইসবুক ও ইউটিউব তাদের ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ অনুযায়ী চলে। তারা উপলব্ধি করে না বাংলাদেশের সঙ্কট বা সমস্যাগুলো।

তবে বর্তমানে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগে উন্নতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে তাদের সাথে প্রতি মুহুর্তে যোগাযোগ হয়, এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

“কুমিল্লাসহ অন্যান্য ঘটনায় দৃষ্টান্ত দিতে পারি। রিপোর্ট করা ৩০০ লিংকের মধ্যে ২৬৬টি লিংক বন্ধ করে দিয়েছে, আগে যেটা হত তারা হয়ত ১০টি বন্ধ করত।”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে গণমাধ্যম, মানবাধিকার গোষ্ঠীসহ পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে মোস্তফা জব্বার স্বীকার করেন যে আইনটির কিছু অপব্যবহার হয়।

তিনি বলেন, “আমি লক্ষ্য করেছি কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ আইনের অপব্যবহার হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনেরও অপব্যবহার হয়েছে। এটি অপব্যবহার রোধ করতে হবে।”

তবে আইনটি রাখার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য সঙ্কটে আছি। সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো একটি দিক মাত্র। সমস্ত কিছুই যখন ডিজিটাল হচ্ছে, সেই তথ্য নিরাপত্তা দিতে না পারলে উল্টো বিপদ ডেকে আনবে।”

অবৈধ মোবাইলে সেট বন্ধের উদ্যোগ নিলেও তা থেকে সরে আসার কারণ জানতে চাইলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “তাৎক্ষনিকভাবে বন্ধের যে সিদ্ধান্ত ছিল তা থেকে সরে আসার কারণ হচ্ছে এটি উপকারের চেয়ে অপকার বেশি করছে জনগনের ভোগান্তি বাড়ছে। দেশে টু জি সেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি, তাদের নিবন্ধনের সক্ষমতা নেই। আমরা মাঝে মধ্যেই অবৈধ সেট বিষয়ে অভিযান চালাই, অবৈধ সেট বন্ধের সক্ষমতা আমরা তৈরি করেছি।”