রক্ষণশীল মূল্যবোধকে ‘প্রশ্রয় দেয়’ টুইটারের অ্যালগরিদম

রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচার বেশি করে টুইটারের নিজস্ব অ্যালগরিদম। কোনো তথ্য ফাঁসকারী সাবেক কর্মীর মাধ্যমে নয়, নিজস্ব গবেষণার ভিত্তিতে এই তথ্য প্রকাশ করেছে মাইক্রোব্লগিং সাইটটি নিজেই।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2021, 10:33 AM
Updated : 24 Oct 2021, 10:33 AM

তবে, অ্যালগরিদম রক্ষণশীল ভাবধারাকে কেন প্রশ্রয় দিচ্ছে, সেই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।

রাজনৈতিক কনটেন্টে ‘অ্যালগরিদমিক অ্যাপ্লিফিকেশন’ বা অ্যালগরিদেমর পরিবর্ধন নিয়ে গবেষণার ফলাফল পোস্ট করা হয়েছে টুইটারের নিজস্ব ব্লগে। গবেষণা থেকে টুইটার আবিষ্কার করেছে, ডানপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো “বামপন্থী রাজনীতির তুলনায় বেশি অ্যালগরিদমিক অ্যাপ্লিফিকেশন” পায়।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, ২০২০ সালে ১ এপ্রিল থেকে ১৫ অগাস্টের মধ্যে কয়েক লাখ টুইট বিশ্লেষণ করেছে মাইক্রোব্লগিং সাইটটি। টুইটগুলোর উৎস কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, স্পেইন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ও নির্বাচিত রাজনীতিবিদগণ। এর মধ্যে জার্মানি বাদে বাকি সবগুলো দেশের ক্ষেত্রেই নিজস্ব অ্যালগরিদম ডানপন্থী ভাবধারাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে নিশ্চিত হয়েছে টুইটার।    

তবে টুইটার বলছে, অ্যালগরিদম ডানপন্থী মূল্যবোধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে ডেটা থেকে যে ইঙ্গিত মিলছে, তার পেছনের কারণ জানা নেই তাদের। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, “এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন, কারণ, সাধারণ মানুষ আর এই প্ল্যাটফর্মে মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল এটি।” 

তবে, এই সমস্যার পুরো দায়ভার শুধু অ্যালগরিদমের উপয় নাও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন গবেষক স্টিভ রাজি। বিভক্তি বাড়ায়, সামাজিক মাধ্যমে এমন কন্টেন্টের ভাইরাল হওয়ার প্রবণতা নিয়ে গবেষণা করেন তিনি।  

নিজস্ব গবেষণার ভিত্তিতে রাজি জানিয়েছেন, সামাজিক মাধ্যমে যে প্রবণতাটি পরিষ্কার, সেটি হল যে কোনো রাজনৈতিক দল বা মূল্যবোধকে নিয়ে নেতিবাচক কন্টেন্টেই ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বেশি সাড়া পাওয়া যায় ফেইসবুক ও টুইটারে। 

রাজি’র মন্তব্যের ভিত্তিতে ভার্জ ধারণা করছে, টুইটারে হয়তো ডানপন্থী কন্টেন্টগুলো সাধারণ ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়াশীল হতে বেশি উদ্বুদ্ধ করে, যার ফলে ‘অ্যালগরিদমিক অ্যাপ্লিফিকেশন’ ঘটে। সাইটটি আরও বলেছে, টুইটারের অ্যালগিরদম হয়তো নির্দিষ্টভাবে ডানপন্থী মূল্যবোধকে প্রশ্রয় না দিয়ে বরং নেতিবাচক বা বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্টকেই প্রশ্রয় দিচ্ছে।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, টুইটারের গবেষণায় যে দেশগুলোর কন্টেন্ট বিবেচনা করা হয়েছে, তার মধ্যে কেবল জার্মানীতে একটি ভিন্ন ধারা পরিলক্ষিত হয়েছে। ভার্জ বলছে, এর পেছনে রয়েছে ফেইসবুক, টুইটার এবং গুগলের সঙ্গে জার্মান সরকারের আলাদা সমঝোতা। প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বিদ্বেষদুষ্ট কন্টেন্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলার সমঝোতা রয়েছে জার্মান সরকারের।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্নভাবে ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া প্রভাবিত করে নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে বাক-বিতণ্ডা ঠেকানোর চেষ্টা করেছে টুইটার। ২০২০ সালে নতুন একটি ফিচার নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা শুরু করেছিলো টুইটার-- কোনো পোস্টে রূঢ় ভাষায় উত্তর দিতে গেলে ব্যবহারকারীকে সতর্ক করে দেয় ওই ফিচারটি। বাক-বিতণ্ডা শুরু হবে মনে হলেই ব্যবহারকারীকে সতর্কবার্তা দেওয়ার একটি ফিচারের পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে চলতি বছরেই।