এআই-এর ব্যর্থতার অভিযোগ মানতে রাজি নয় ফেইসবুক

বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট মোকাবেলায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির ব্যর্থতার অভিযোগ নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছে ফেইসবুক। প্রতিষ্ঠানটির দাবি-- শেষ তিন প্রান্তিকে প্ল্যাটফর্মটিতে বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট কমেছে ৫০ শতাংশ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2021, 08:38 AM
Updated : 18 Oct 2021, 08:38 AM

ফেইসবুকের এআই অ্যালগরিদম বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট চিহ্নিত করতে কার্যকর নয় বলে মার্কিন সিনেটে অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন। তার কাছ থেকে পাওয়া অভ্যন্তরীণ নথি বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব অ্যালগরিদম প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত সকল বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্টের একটি ভগ্নাংশ চিহ্নিত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন খোদ ফেইসবুক প্রকৌশলীরা।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন বলছে, “সমস্যা হচ্ছে, সকল বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট চিহ্নিত করার মতো মডেল আমাদের নেই, এমনকি এমন কন্টেন্টের সিংহভাগ চিহ্নিত করার মতো মডেল সম্ভবত ভবিষ্যতেও থাকবে না আমাদের”-- ২০১৯ সালে লেখা একটি নোটে এই মন্তব্য করেছিলেন ফেইসবুকের একজন জেষ্ঠ্য প্রকৌশলী ও গবেষক।   

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট বলছে, কন্টেন্ট মডারেশন প্রসঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই সমালোচিত হয়ে আসছে ফেইসবুক। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ৬ জানুয়ারির সহিংসতার ঘটনা যেন ঘি ঢেলেছে ওই সমালোচনার আগুনে।

কিন্তু, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের বিরোধিতা করে ফেইসবুক দাবি করছে, শেষ তিন প্রান্তিকে প্ল্যাটফর্মটিতে বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট কমেছে ৫০ শতাংশ এবং সমগ্র কন্টেন্ট ভিউয়ের মাত্র ০.০৫ শতাংশ বা ১০ হাজার ভিউয়ের মধ্যে কেবল পাঁচটি হচ্ছে ওই বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট।

“ফাঁস হওয়া নথিপত্র থেকে ডেটা নিয়ে এমনভাবে গল্প তৈরি করা হচ্ছে যেন বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট মোকাবেলা করতে আমরা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করি তা কার্যকর নয় এবং আমরা ইচ্ছা করে আমাদের অগ্রগতি ভুলভাবে উপস্থাপন করছি”-- এক ব্লগ পোস্টে মন্তব্য করেছেন ফেইসবুকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গায় রসেন।  

রসেন আরও বলেন, “আমরা আমাদের প্ল্যাটফর্মে বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্ট দেখতে চাই না, আমাদের বিজ্ঞাপনদাতারাও সেটি দেখতে চায় না। এমন কন্টেন্ট মুছে দেওয়ার কাজ নিয়ে আমরা স্বচ্ছতা বজায় রেখেছি।”

ফ্রান্সেস হাউগেনের ফাঁস করা নথি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নানা দিক থেকে চাপের মুখে পড়েছে ফেইসবুক। ব্যবহারকারীদের মানসিক স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে ফেইসবুকের আন্তরিকতার অভাব নিয়ে অভিযোগ উঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে তৎপর হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইনপ্রণেতা ও নীতিনির্ধারকরা।  

চলতি মাসেই মার্কিন সিনেটের এক সাবকমিটির কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন ফ্রান্সেস হাউগেন। ফেইসবুকের পণ্য “শিশুদের ক্ষতি করে, সামাজিক বিভক্তি বাড়ায় এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করে” বলে অভিযোগ করেন তিনি। হাউগেনের অভিযোগের বিপরীতে ফেইসবুক কাণ্ডারী মার্ক জাকারবার্গের দাবি, “মিথ্যা চিত্রায়ন” করা হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানের।