ফেইসবুকের নিষিদ্ধ তালিকায় ‘বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট’ সাত নাম

চার হাজারেরও বেশি ব্যক্তি এবং দলকে বিপজ্জনক বলে মনে করে সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট ফেইসবুক। এসব ব্যক্তি ও সংগঠনের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী, স্বশস্ত্র সামাজিক আন্দোলন এবং কথিত সন্ত্রাসীদের নাম রয়েছে। ওই তালিকায় অন্তত সাতটি নাম রয়েছে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2021, 01:11 PM
Updated : 14 Oct 2021, 05:25 AM

মার্কিন এই সামাজিক মাধ্যম প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে এই তালিকা তৈরি করলেও কখনোই এটি প্রকাশ্যে আনেনি। অলাভজনক সংবাদসংস্থা দ্য ইন্টারসেপ্ট মঙ্গলবার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির মতে, এটিই ফেইসবুকের সেই কালোতালিকা।

এই তালিকাভূক্ত ব্যক্তি, সংগঠন এবং তাদের পক্ষে বা সম্পর্কে কোনো কনটেন্ট ফেইসবুক তার প্ল্যাটফর্মে থাকার অনুমতি দেয় না।

তালিকার অর্ধেকের বেশি নামই কথিত বিদেশী সন্ত্রাসীদের যারা প্রধানত মধ্যপ্রাচ্য অথবা দক্ষিণ এশীয় এবং মুসলিম। প্রতিবেদনে ইন্টারসেপ্ট বলছে, এই তালিকা এবং ফেইসবুকের নীতি থেকে এটা স্পষ্ট যে “সামাজিক মাধ্যম প্রতিষ্ঠানটি প্রান্তিক গোষ্ঠীর উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে”।

ইংরেজি বর্ণানুক্রমিক তালিকায় বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট প্রথমেই রয়েছে আল মুরসালাত মিডিয়া যেটি ইসলামিক স্টেটের মিডিয়া উইং এবং এর কর্মপরিধী বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া। আনসারুল্লাহ বাংলা তালিকাভূক্ত রয়েছে আল কায়েদা কেন্দ্রীয় কমান্ডের অঙ্গসংগঠন হিসেবে। একই শীর্ষ সংগঠনের অধীনে রয়েছে হারকাত উল জিহাদ-ই-ইসলামী ও জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ। ইসলামিক স্টেটের অধীনে বাংলাদেশে কাজ করছে ইসলামিক স্টেট বাংলাদেশ। মিডিয়া উইংয়ের অংশ হিসেবে ইসলামিক স্টেটের অধীনে আল মুরসালাত মিডিয়া ছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানে বিস্তৃত শাহাম আল হিন্দ মিডিয়া। এর বাইরে তরিকুল ইসলাম নামে আরো একটি নাম রয়েছে যার সংশ্লিষ্টতা জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের সঙ্গে।

বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট সাতটি নামই টেরর বা সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট বলে তালিকাভূক্ত রয়েছে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা সবচেয়ে কঠোর।

ইন্টারসেপ্ট-এর প্রতিবেদন অনুসারে ফেইসবুকে পোস্ট করা কোনো কনটেন্টের বিষয়ে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে সে বিষয়ে ফেইসবুকের একটি তিন ধাপের সিস্টেম রয়েছে। ওই সিস্টেম অনুসারেই প্রতিষ্ঠানটি ঠিক করে কোনো বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে ফেইসবুক কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে।

তালিকায় সন্ত্রাসী, ঘৃণামূলক এবং অপরাধী সংগঠনগুলি সবচেয়ে কঠোর স্তরের অংশ “টিয়ার ওয়ান”। সবচেয়ে কম নিষেধ্জ্ঞা আরোপ করা ধাপ হচ্ছে টিয়ার থ্রি। এর মধ্যে রয়েছে স্বশস্ত্র সামাজিক আন্দোলন। এই আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই “ডানপন্থী এবং মার্কিন সরকার বিরোধী মিলিশিয়া, যা কার্যত সম্পূর্ণ শ্বেতাঙ্গদের সংগঠন” বলে উঠে এসেছে ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদনে।

এই তালিকা প্রকাশের পরপরই ফেইসবুকে সন্ত্রাস দমন ও বিপজ্জনক সংগঠনের জন্য নীতিমালা বিষয়ক পরিচালক ব্রায়ান ফিশম্যান একাধিক টুইটে বলেছেন, ইন্টারপ্টের এই তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয়। তিনি বলেন, “তালিকা ক্রমাগত আপডেট করা হয়”।

বিপজ্জনক ব্যক্তি ও সংগঠন বিষয়ে নীতি আরোপের ক্ষেত্রে “আরও স্বচ্ছ হওয়ার” চাপ রয়েছে ফেইসবুকের ওপর। জানুয়ারি মাসেই প্রতিষ্ঠানটির ‘ওভারসাইট বোর্ড’ এই তালিকা প্রকাশ করার কথা বললেও ফেইসবুক তার বাস্তবায়ন এখনও করেনি।