ইতিহাসের অন্যতম শীর্ষ ডিডিওএস আক্রমণ ঠেকিয়েছে মাইক্রোসফট

প্রতি সেকেন্ডে ২.৪ টেরাবিট ইন্টারনেট ট্রাফিকের ‘ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস (ডিডিওস)’ আক্রমণ প্রতিহত করেছে সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফট। আক্রমণের মূল ভুক্তভোগী ছিল ইউরোপে মাইক্রোসফটের অ্যাজিওর ক্লাউড কম্পিউটিং সেবা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2021, 07:36 AM
Updated : 13 Oct 2021, 07:36 AM

এর আগে প্রতিষ্ঠানটির ওপর সর্বশেষ ডিডিওএস আক্রমণের তুলনায় ১৪০ গুণ বেশি শক্তিশালী ছিল এবারের আক্রমণটি।

স্মরণকালের বৃহত্তম ডিডিওএস আক্রমণ হিসেবে দেখা হয় ২০১৭ সালে গুগলের ওপর ঘটা একটি আক্রমণকে। সেবার প্রতি সেকেন্ডে ২.৫৪ টেরাবিট ইন্টারনেট ট্রাফিকের ডিডিওএস আক্রমণ প্রতিহত করেছিলো সার্চ জায়ান্ট প্রতিষ্ঠাানটি।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, এবারের ডিডিওএস আক্রমণের ঘটনা ঘটেছিলো অগাস্ট মাসে। ১০ মিনিটের বেশি সময় ধরে থেমে থেমে চলেছে ওই আক্রমণ। আক্রমণের এক পর্যায়ে ইন্টারনেট ট্রাফিক ২.৪ টেরাবিট ছাড়িয়ে গিয়েছিলো।

ডিডিওএস আক্রমণের ক্ষেত্রে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো সার্ভারে, একসঙ্গে এতো বেশি ইন্টারনেট ট্রাফিক পাঠানো হয় যে সার্ভারটি তা সামাল দিতে পারে না এবং এর ফলে অফলাইনে চলে যায় ওই ওয়েবসাইট বা ইন্টারনেটনির্ভর সেবাটি। আগে একটি উৎস থেকে এই আক্রমণ চালানো হতো এবং সেটির নাম ছিল ডিওএস বা ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস আক্রমণ।

এই একই কাজ যখন বিভিন্ন উৎস থেকে একযোগে চলে তখন আক্রমণের তীব্রতা অনেক বাড়ানো সম্ভব হয় এবং বিভিন্ন উৎস আক্রমণের কাজটি ভাগ করে নেয় বলে একে বলা হয় ডিডিওএস বা ‘ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস’।

ডিডিওএস আত্রমণে সাধারণত বটনেট বা ছোট সফটওয়্যার প্যাকেজ ব্যবহৃত হয়। ওই বটনেটওয়ালা কম্পিউটারগুলো আদতে সাধারণ কম্পিউটার যাতে ম্যালওয়্যার বা অন্য কোনো ক্ষতিকর সফটওয়্যারের সংক্রমণ ঘটিয়ে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে একজন হ্যাকার। 

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, কয়েক টেরাবিট ডিডিওএস আক্রমণ মোকাবেলা করার সক্ষমতা আছে মাইক্রোসফটের অ্যাজিওর ক্লাউড কম্পিউটিং সেবার। তাই, ২.৪ টেরাবিট ইন্টারনেট ট্রাফিক আক্রমণের মধ্যেও কার্যকর ছিলো সেবাটি।

এই প্রসঙ্গে মাইক্রোসফটের অ্যাজিওর নেটওয়ার্কিং দলের জেষ্ঠ্য প্রকল্প ব্যবস্থাপক আমির দাহান বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, জাপান ও চীনের প্রায় ৭০ হাজার সূত্র থেকে ওই ডিডিওএস ট্রাফিকের উৎপত্তি”।

ডিডিওএস আক্রমণের ভুক্তভোগীর নাম প্রকাশ করেনি মাইক্রোসফট। আক্রমণের আড়ালে হ্যাকাররা ম্যালওয়্যার সংক্রমণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার সিস্টেমে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে থাকতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ভার্জ।

এর আগে ২০২০ সালে ২.৩ টেরাবিট ইন্টারনেট ট্রাফিকের ডিডিওএস আক্রমণের শিকার হয়েছিলো অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস)। তারও আগে ২০১৮ সালের সার্চ মাসে ১.৭ টেরাবিট ইন্টারনেট ট্রাফিকের ডিডিওএস আক্রমণের শিকার হয়েছিলো নেটস্কাউট আর্বার।