ফেইসবুকে তিন বছর ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করার পর সোফি ঝ্যাং ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি থেকে চাকরি হারান। ওই সময় দীর্ঘ এক মেমো লিখেছিলেন ঝ্যাং, যার মূল বক্তব্য ছিল-- ছোট এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাজারে ভুয়া ও বিদ্বেষপূর্ণ কন্টেন্টে প্রচার বন্ধে ফেইসবুক যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
‘কাজ সন্তোষজনক নয়’ বলে চাকরিচ্যুত করার কথা তাকে সে সময় ফেইসবুক জানিয়েছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনএন। তার লেখা মেমোর ভিত্তিতে সর্বপ্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাজফিড নিউজ। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান।
সম্প্রতি সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঝ্যাং জানান, ৫ অক্টোবর সিনেট সাবকমিটিতে ফ্রান্সেস হাউগেন সাক্ষ্য দেওয়ার পর অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের দ্বিপক্ষীয় সমর্থন দেখে সাহস পেয়েছেন তিনি।
হাউগেনের মতো তিনিও ফেইসবুকের অভ্যন্তরীণ নথি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঝ্যাং। “মার্কিন আইনের ব্যত্যয় করে এমন সম্ভাব্য অপরাধী কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত নথিপত্র আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়েছি আমি। আমি যতোদূর বুঝতে পারছি, ওই তদন্ত এখনও চলছে”, রোববার টুইট করেছেন ঝ্যাং।
তবে, কোন ধরনের বা কোন সংস্থার হাতে তিনি নথিপত্র তুলে দিয়েছেন-- সিএনএনের এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি ঝ্যাং। অন্যদিকে, এই প্রসঙ্গে সিএনএনের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এক এফবিআই মুখপাত্র। “এফবিআই সাধারণত জনসাধারণের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ বা তথ্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করে না, নিশ্চিত করে না বা অস্বীকারও করে না।”
ফেইসবুকের বিরুদ্ধে ঝ্যাংয়ের মূল অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের ব্যবহারকারীদের জন্য নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে নিপীড়ন বা বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ বন্ধে ফেইসবুক আন্তরিক নয় এবং প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপও নেয় না প্রতিষ্ঠানটি। ফেইসবুকের সর্বশেষ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির ৯০ শতাংশ সেবাগ্রহিতাই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাইরে থাকেন।
ঝ্যাংয়ের অভিযোগের বিপরীতে সোমবার এক ফেইসবুক মুখপাত্র দাবি করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নিরাপত্তা খাতে কয়েকশ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে ফেইসবুক।
“২০১৭ সাল থেকে আমরা ৫০টির বেশি দেশ থেকে উঠে আসা ১৫০টি নেটওয়ার্ক ভেঙে দিয়েছি যেগুলো জনসাধারণের মধ্যে বিতর্ক প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। আমাদের হিসাব বলছে যুক্তরাষ্ট্রে নিপীড়ন বন্ধে যতোটা তৎপর, সেই একই গুরুত্ব দিয়ে বাইরের দেশেও নিপীড়ন মোকাবেলা করি আমরা।”