সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা সংযুক্ত আরব আমিরাতের হ্যাকার!

যুক্তরাষ্ট্রের আইন ভেঙে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে হ্যাকিং অপারেশন চালানোর অভিযোগ স্বীকার করেছেন তিন সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা। কম্পিউটার প্রতারণা, ডিভাইসে প্রবেশ করে প্রতারণা এবং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ লঙ্ঘনের অভিযোগ নিস্পত্তি করতে অভিযুক্তরা ১৭ লাখ ডলার জরিমানা দিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন আইনজীবীরা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2021, 08:04 AM
Updated : 16 Sept 2021, 08:04 AM

বিবিসি জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সার্ভার, কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোন হ্যাক করেছিলেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার ওই সাবেক কর্মীরা। তবে নাম গোপন রাখা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

এই প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি অভিযুক্ত এবং আরব-আমিরাতের মুখপাত্ররা।

চলতি বছরেই বিতর্কিত ইসেরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপের নির্মিত ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে অন্য দেশের সরকারি কর্মকর্তা, বিরোধী দল এবং সংবাদকর্মীদের উপর নজরদারি চালানোর অভিযোগ উঠেছিলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে। 

মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে-- যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মার্ক বায়ার, রায়ান অ্যাডামস এবং দেশটির সাবেক নাগরিক ড্যানিয়েল গেরিক প্রাথমিক অবস্থায় ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রাফিক ইন আর্মস রেগুলেশন (আইটিএআর)’ মেনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের হয়েই আরব আমিরাতের সরকারি সংস্থাকে সাইবার সেবা দিতেন।

ওই নীতিমালা অনুযায়ী, যে কোনো হ্যাকিং অপারেশন শুরু করার আগে মার্কিন সরকারের অনুমতি নিয়ে হয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদের। কোনো মার্কিন নাগরিক, স্থায়ী বাসিন্দা এবং দেশটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বা সম্পদের উপর সাইবার আক্রমণ বারণ ওই নীতিমালার অধীনে। 

বিবিসি জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিন মার্কিন নাগরিক ২০১৬ সালে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের একটি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে হ্যাকিং কর্মকাণ্ড শুরু করেন যা কেবল মধ্যপ্রাচ্যের ওই দেশটির জন্যই লাভজনক ছিলো; সেক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স বা অনুমতি কোনোটাই নেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

পরবর্তী তিন বছরে, ‘কারমা’ এবং ‘কারমা ২’ নামের দুটি অত্যাধুনিক জিরো-ক্লিক কম্পিউটার হ্যাকিং এবং তথ্য সংগ্রহকারী ব্যবস্থা দাঁড় করান অভিযুক্তরা। হ্যাকিংয়ের টার্গেট মূল ব্যক্তি কোনো কিছু না করলেও তার ডিভাইসে ছড়িয়ে পড়তো ম্যালওয়্যার।  এতে ভূক্তভোগী হয়েছেন একটি মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তৈরি ডিভাইসের কয়েক হাজার ব্যবহারকারী। ভূক্তভোগী প্রতিষ্ঠানটির নামও গোপন রেখেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। 

মার্কির বিচার বিভাগ বলছে, আরব আমিরাতের ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে সাবেক গোয়েন্দা কর্মীরা অবৈধভাবে বিভিন্ন মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যক্তিগত ও দাপ্তরিক তথ্য চুরির পথ করে দিয়েছিলেন।

“ভাড়ায় কাজ করা হ্যাকার এবং যারা এসব কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করেন তাদের মার্কিন আইন অনুযায়ী অপরাধী হিসেবে বিচারের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত”-- মন্তব্য করেছেন মার্কিন বিচার বিভাগের ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি ডিভিশন’-এর দায়িত্বে থাকা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মার্ক লেসকো।  

মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, আর্থিক জরিমানা, আরব-আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং ভবিষ্যতে আর কখনো মার্কিন সরকারের নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স না চাওয়ার শর্তে অভিযুক্তদের আইনি ছাড় দেওয়া হয়েছে।