দেশটির সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘দ্য ন্যাশনাল প্রেস অ্যান্ড পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ নিশ্চিত করেছে-- ভিডিও গেইম খেলার অনুমতি মিলবে কেবল রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে।
অন্যদিকে, শিশুরা যেন ওই সময়ের বাইরে গেইম খেলার সুযোগ না পায়, নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেটি নিশ্চিত করতে বলেছে সংস্থাটি।
চলতি মাসের শুরুতেই ভিডিও গেইম-কে “আধ্যাত্মিক আফিম” বলে আখ্যা দিয়েছিলো চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম।
বিবিসি জানিয়েছে, অনলাইন গেইমিং প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর সরকারি নজরদারিও বাড়বে বলে জানিয়েছে চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর আগে শিশুদের অনলাইন গেইমিংয়ের অভ্যাস ৯০ মিনিটে সীমাবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো চীন সরকার। ছুটির দিনে যা বেড়ে তিন ঘণ্টায় দাঁড়াতো।
শিশুদের উপর মাত্রাতিরিক্ত অনলাইন গেইমিংয়ের প্রভাবের বিষয়টি চীনের কর্তৃপক্ষের কাছে যে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে সেটাই পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
জুলাই মাসেই চীনের সরকার সমর্থিত সংবাদপত্র ইকোনমিক ইনফর্মেশনে ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, অনলাইন গেইমিংয়ে আসক্ত হয়ে পড়ছেন দেশটির কিশোররা এবং এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তাদের ওপর।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর, বাজারে চীনের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন গেইম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দামে ধস নামে। শিশরা যেন কেবল নির্দিষ্ট একটি সময়ে ভিডিও গেইম খেলার সুযোগ পায়, সেটি নিশ্চিত করতে ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহারের ঘোষণা দেয় গেইম নির্মাতা টেনসেন্ট।
বিবিসি জানিয়েছে, বেইজিং দেশের তরুণদের উপর প্রযুক্তি খাতের বিনিয়োগ ও ক্রমবর্ধমান প্রসারের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত।
সম্প্রতি গেইমিং শিল্প বাদেও অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের উপর চীন সরকারের চাপ বেড়েছে। নতুন প্রজন্মের উপর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কায় সরকারি রোষের মুখে পড়েছে টেনসেন্ট, ডিডি এবং আলিবাবার মতো প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। নতুন আইন ও নীতিমালা আরোপ করে প্রযুক্তি শিল্পের উপর নিয়ন্ত্রণ আরও জোরালো করতে চাইছে চীন সরকার।
নতুন নিয়ম-নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে চীনের সরকার ‘ইতিবাচক প্রভাব’ তৈরি করতে চাইছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। পাশপাশি, তরুণদের বেইজিংয়ের ভাষায় “সঠিক মূল্যবোধ” শেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
অভিভাবকদের অনেকে গেইমিং নিয়ে কড়াকড়িতে খুশি হলেও চীনের ওয়েইবো সামাজিক মাধ্যমে জোরালো সমালোচনা চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।