স্কুল ছুটিতে বানানো এনএফটি বেচে লাখপতি ১২ বছরের শিশু

স্কুল ছুটির সময় ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক বানিয়ে দুই লাখ ৯০ হাজার পাউন্ড সমমূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি কামাই করেছে লন্ডনের ১২ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। ‘উইয়ার্ড হোয়েল’ নামের ডিজিটাল আর্টওয়ার্কগুলো অনলাইনে বিকিয়েছে নন-ফানজিবল টোকেন বা এনএফটি হিসেবে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2021, 10:21 AM
Updated : 27 August 2021, 10:21 AM

এনএফটির একটি বড় সুবিধা হলো, একে ডিজিটাল টোকেনে রূপান্তর করে মালিকানার ডিজিটাল সার্টিফিকেট তৈরি করা যায়। ফলে মূল ধারার অনেক শিল্পীই এখন সৃস্টিকর্মের ডিজিটাল সংস্করণ অনলাইনে বিক্রি করছেন এনএফটি হিসেবে। এতে পাইরেসির হাত থেকে রেহাই মিলছে শিল্পীদের।

বিবিসি জানিয়েছে, প্রযুক্তি বাজারে লেনদেনের এই অভিনব পন্থার সুযোগটাই  নিয়েছে ১২ বছর বয়সী বেনইয়ামিন আহমেদ। অথচ ওই ঘটনার আগে প্রচলিত কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও ছিলো না তার। ক্রিপ্টোকারেন্সি ইথেরিয়ামের বিনিময়ে নিজের ‘উইয়ার্ড হোয়েল’গুলো বিক্রি করেছে আহমেদ।

এনএফটির লেনদেনের মাধ্যমে ক্রেতার হাতে সাধারণত ডিজিটাল শিল্পকর্মের মূল কপি বা তার কপিরাইট যায়। ফলে ইন্টারনেটে ওই শিল্পকর্মের অনেকগুলো কপি থাকলেও মূল বা আসল কপি থাকে একটাই।

তবে এর একটি নেতিবাচক দিক হলো, ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক বা শিল্পকর্মগুলোর মূল কপির কোনো ব্যাকআপ থাকে না। আর মূল কপিটি যে ডিজিটাল ওয়ালেটে রাখা হয়েছে, হ্যাকিংয়ের ফলে সেখান থেকেও বেহাত হয়ে যেতে পারে শিল্পকর্মগুলো।

বেনইয়ামিনের বাবা ইমরান একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বলে জানিয়েছে বিবিসি। পাঁচ ও ছয় বছর বয়সেই বেনইয়ামিনের আর তোর ছোট ভাই ইউসুফকে কোডিংয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি।

“শুরুর দিকে ব্যাপারটা মজার খেলার মতো ছিলো-- কিন্তু বুঝতে পেরে গিয়েছিলাম যে ওরা বিষয়টা ভালোভাবেই নিচ্ছে। তাই এরপর থেকে এতে আরও জোর দেওয়া শুরু করি আমরা। এখন এটা প্রতিদিনই হয়, তবে একাজ চাপিয়ে দেওয়ার মতো নয়, আপনি বলতে পারবেন না যে আপনি তিন মাসে কোডিং শিখে ফেলবেন”, বিবিসিকে বলেন ইমরান।

এখন ছুটির দিনেও ২০ থেকে ৩০ মিনিট কম্পিউটার কোড নিয়ে ব্যস্ত থাকে আহমেদ পরিবারের সন্তানরা।

বিবিসি জানিয়েছে, ‘উইয়ার্ড হোয়েল’ বেনইয়ামিনের দ্বিতীয় ডিজিটাল শিল্পকর্ম। প্রথমটি বেচলেও এতো বড় আকারের আয় আসেনি সেটি থেকে।

একটি জনপ্রিয় মিম আর পিক্সেল আর্ট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ইমোজির আদলে তিন হাজার ৩৫০টি ‘উইয়ার্ড হোয়েল’-এর প্রোগ্রাম লিখেছিলো বেনইয়ামিন।

আপাতত সুপারহিরোদের নিয়ে একই রকমের প্রোগ্রাম লিখছে বেনইয়ামিন। আর উইয়ার্ড হোয়েল নিয়ে পানির নিচের গেইম বানাতে পারলে সেটাও মন্দ হবে না বলে জানিয়েছে ওই শিশু।

অন্যদিকে বেনইয়ামিনের বাবা ইমরান “শতভাগ নিশ্চিত” যে কপিরাইট লঙ্ঘন করেনি তার সন্তান। সন্তানের শিল্পকর্মগুলোর সঠিক ব্যবহার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনজীবী নিয়োগ করেছেন তিনি; বেনইয়ামিনের শিল্পকর্মগুলোর ট্রেডমার্ক করানো যায় কি না, সে বিষয়েও পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি।

আর শিশুদের উদ্দেশ্যে বেনইয়ামিন বলছেন, “অন্য শিশুদের জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে যে তারা এই ক্ষেত্রে ঢুকতে চাইলেও জোর করে কোডিং শেখার প্রয়োজন নেই। তোমার রান্না করতে ভালো লাগলে রান্না করো, তোমার নাচতে ভালো লাগলে নাচো। তবে সেটা নিজ ক্ষমতার সবটুকু দিয়ে করতে হবে”।