‘ডিসইনফর্মেশন ডজন’ নিয়ে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ ফেইসবুকের

‘ডিসইনফর্মেশন ডজন’ নিয়ে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফেইসবুক। হোয়াইট হাউজ থেকে কোভিড মহামারী নিয়ে ভুয়া খবর প্রচারের অভিযোগে ১২ জনকে চিহ্নিত করার এক মাস পর এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2021, 12:52 PM
Updated : 19 August 2021, 12:52 PM

সামাজিক মাধ্যমে কোভিড সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ভুয়া খবর ও ভুল তথ্য প্রচারের পেছনে মূল হোতা হিসেবে ১২ জনকে দায়ী করেছিলো হোয়াইট হাউজ। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ হোয়াইট হাউজের এমন মতামতকে “বন রেখে গাছের দিকে নজর দেওয়া” বলে অ্যাখ্যা দিলেও, মুছে দিয়েছে ওই ১২ জনের ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট।

বুধবার ওই ১২ জনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণায় ফেইসবুকের কন্টেন্ট নীতিমালা বিষয়ক প্রেসিডেন্ট মোনিকা বিকার্ট বলেন, “কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে যে কোনো আকারের ভুল তথ্য যা আমাদের নীতিমালা লঙ্ঘন করে, আমরা যে মান রক্ষার চেষ্টা করি তার জন্য অবাঞ্ছিত--এবং নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণে আমরা ওই ১২ জনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ডজনের বেশি পেইজ, গ্রুপ, ফেইসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট মুছে দিয়েছি।”

এ ছাড়াও, ওই ১২ জনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও দুই ডজনের বেশি পেইজ, গ্রুপ এবং অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিকার্ট।

‘ডিসইনফর্মেশন ডজন’ হিসেবে পরিচিত ওই ১২ জনকে সর্বপ্রথম মার্চ মাসে চিহ্নিত করে ‘সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেইট’ নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।

ওই প্রতিষ্ঠানের তৈরি প্রতিবেদনের সূত্র ধরে, চিহ্নিত ব্যক্তিদের সামাজিক মাধ্যমটির প্ল্যাটফর্মে থাকতে দেওয়ায় কারণে জুলাই মাসে ফেইসবুকের কড়া সমালোচনা করেছিলো হোয়াইট হাউজ।

“সামাজিক মাধ্যমে ১২ জন মানুষ টিকা বিরোধী ভুয়া তথ্যের ৬৫ শতাংশ সৃষ্টি করছেন।”-- বলেছিলেন হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জেন সাকি। বুধবার ‘ডিসইনফর্মেশন ডজন’ নিয়ে ফেইসবুক সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ার পরও থামেনি হোয়াইট হাউজের কড়া সমালোচনা।

এই প্রসঙ্গে এক হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র সিএনএনকে বলেন, “মহামারী চলাকালীন জনস্বাস্থ্য রক্ষায় যে কাজগুলো হচ্ছে, সেক্ষেত্রে সততা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কী পরিমাণ ভুয়া তথ্য তাদের প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত হচ্ছে, সেই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এখনও এড়িয়ে যাচ্ছে ফেইসবুক”।

“মার্কিন নাগরিকরা যেন নিজেদের এবং প্রিয় মানুষদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সঠিক তথ্য পায়, এই কাজটি সঠিকভাবে হচ্ছে কি না সেটি নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব -- এই কারণে সরকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, মিডিয়া প্রতিষ্ঠান এবং ফেইসবুকের মতো অন্যান্য বড় সূত্রগুলোর উপর এই মৌলিক প্রত্যাশা পূরণে চাপ দিয়ে যাবে।”-- যোগ করেন তিনি।

জুলাই মাসেই ওই চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছিলো ফেইসবুক। তবে ওই সময়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমটি ওই দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব লিংক এখনও মুছে দেয়নি বলে জানিয়েছে সিএনএন।

এই প্রসঙ্গে বুধবারের ঘোষণায় বিকার্ট বলেন, “বাকি অ্যাকাউন্টগুলো নীতিমালা ভঙ্গ করে এমন কোনো কন্টেন্ট পোস্ট করছে না। অ্যাকাউন্টগুলো অল্প কিছু নীতিমালা লঙ্ঘনকারী কন্টেন্ট পোস্ট করেছিলো, যা আমরা মুছে দিয়েছি অথবা আর সক্রিয় নেই”।

টিকা নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের সঙ্গে জড়িত অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে একটির মালিক রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র। টিকা-বিরোধী প্রচারণার পরিচিত মুখ তিনি। ইনস্টাগ্রাম তার অ্যাকাউন্ট মুছে দিলেও ফেইসবুকে তার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

এই প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির এক মুখপাত্র সিএনএনকে বলেন, “আমরা সব প্ল্যাটফর্ম থেকে একযোগে সব অ্যাকাউন্ট মুছে দেই না। কারণ ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্টগুলো ভিন্ন ভিন্ন বিষয় নিয়ে পোস্ট দিতে পারে”।