ঘুষ ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে জানুয়ারিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তিনি ২০৭ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন, যা তার সাজার অর্ধেকের বেশি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
একই মামলায় দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক গুয়েন-হাই ঘুষ ও দুর্নীতির দায়ে এখনও কারাগারে রয়েছেন।
লি কার্যত ২০১৪ সাল পর্যন্ত তার দাদার প্রতিষ্ঠিত স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের প্রধান ছিলেন।
জেল থেকে বেরিয়েই লি উপস্থিত সাংবাদিকদের একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়েছেন। “আমি অনেক উদ্বেগের কারণ হয়েছি। আমি গভীরভাবে ক্ষমা চাইছি,” লি বলেন।
“আমি আমার জন্য সমালোচনা, উদ্বেগ এবং উচ্চাশা’র কথা শুনছি। আমি কঠোর পরিশ্রম করব।”
৫৩ বছর বয়সী লি’কে উচ্চ আদালত আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল।
অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক সমর্থনের বিনিময়ে সে সময়ের দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্কের বন্ধু চোই সুন-সিল পরিচালিত দুটি অলাভজনক সংস্থায় তিনি প্রায় পৌনে চার কোটি ডলার দান করেছেন। সে সময় স্যামসাংয়ের দুটি প্রতিষ্ঠানকে একত্রীকণের প্রক্রিয়া চলছিল এবং এর মাধ্যমে পারিবারিক মলিকানাধীন এই ইলেকট্রনিক সাম্রাজ্যে লি’র একচ্ছত্র প্রভাব নিশ্চিত হয়।
রায়ে আদালত বলেছে, লি “সরাসরি ঘুষ দিয়েছেন” এবং উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে তিনি “প্রেসিডেন্টকে তার ক্ষমতা ব্যবহারে প্রভাবিত করেছেন।”
আদালত লি’কে ঘুষ, অর্থ আত্মসাৎ এবং সাড়ে ৫৭ লাখ ডলারের অপরাধমূলক আয় গোপন করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে।
দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় বলছে, লিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বেলায় তারা “দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি এবং বিশ্ব বাজারে মহামারীর প্রভাবকে” বিবেচনায় নিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের দপ্তর জানিয়েছে, তার মুক্তি দেওয়া হয়েছে “জাতীয় স্বার্থে” এবং বিষয়টি “অনুধাবনের অনুরোধ” রয়েছে ওই বিবৃতিতে।
“আমরা ভালভাবেই জানি যে, ভাইস-চেয়ারম্যান জে ওয়াই লি'র প্যারোলের পক্ষে ও বিপক্ষে মতামত রয়েছে। যারা বিরোধিতা করছে তারাও ভুল বলছেন না।”
“অন্যদিকে, অনেক লোক এই গুরুতর সংকটে তার প্যারোলের আহ্বান জানিয়েছে, তারা আশা করছে, তিনি সেমিকন্ডাক্টর এবং ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে দেশকে সহায়তা করবেন।”
ব্যবসায়ীক কার্যবলীতে পাঁচ বছরের বিধিনিষেধের উল্লেখ রয়েছে লি'র প্যারোল শর্তাবলীতে। ফলে, তিনি স্যাসাংয়ের পরিচালনায় কতোটা জড়িত হতে পারবেন সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।
সরকারি অনুমোদন ছাড়া তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না।
লি'র বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং স্টক ম্যানিপুলেশনের অভিযোগে তদন্ত চলছে। সেখানে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে ফের কারাগারে যেতে হতে পারে।