অ্যাপ স্টোরের লাগাম টানতে নতুন মার্কিন আইন বিবেচনায়

বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ স্টোরের লাগাম টানতে নতুন আইনের প্রস্তাব রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের তিন সিনেটর। আইনটির বাস্তবায়ন সম্ভব হলে বাজারে অ্যাপল ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের অত্যাধিক নিয়ন্ত্রণ ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2021, 11:18 AM
Updated : 12 August 2021, 11:18 AM

আইনের প্রস্তাবনা সামনে আনতে ডেমোক্রেটিক সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেনথাল এবং এমি ক্লোবুচার জোট বেঁধেছিলেন রিপাবলিকান সিনেটর মার্শা ব্ল্যাকবার্নের সঙ্গে। অ্যাপের জন্য ভিন্ন মূল্য নির্ধারণ করা বা ভিন্ন অ্যাপ স্টোর ব্যবহারের কারণে যাতে অ্যাপগুলোকে সাজা পেতে না হয় সে ব্যবস্থা করবে প্রস্তাবিত আইনটি।

“অনেক দিক থেকেই অ্যাপল ও গুগলের এই লুণ্ঠনমূলক হয়রানিকে অত্যন্ত আপত্তিকর মনে হয় আমার কাছে।” – বুধবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন ব্লুমেনথাল। তিনি আরও বলেন, “তাদের ক্ষমতা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যেখানে তারা উদ্ভাবনের কণ্ঠরোধ ও শ্বাসরোধ করে গোটা অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলছে।”

“খুব শীঘ্রই” একই ধরনের খসড়া আইন ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে দেখার প্রত্যাশা করছেন বলেও জানান ব্লুমেনথাল।

গোটা বিষয়টিই অ্যাপলের জন্য অনেক বড় একটি ব্যাপার। প্রতিবেদনে রয়টার্স উল্লেখ করেছে, স্মার্টফোন বাজার বড় হয়ে ওঠার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপ স্টোর এখন পাঁচ হাজার তিনশ’ ৮০ কোটি ডলারের ব্যবসায়ে দাঁড়িয়েছে।

অ্যাপল বলেছে, তাদের অ্যাপ স্টোর “অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের নজিরবিহীন চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে যা এখন ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ২১ লাখেরও বেশি চাকরিতে সমর্থন যোগাচ্ছে।”

গুগল এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে, তাদের মুখপাত্র আগের এক প্রাতিষ্ঠানিক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে প্রায়শই আগে থেকেই দুই বা ততোধিক অ্যাপ স্টোর লোড করা থাকে এবং অ্যাপ বিক্রেতারা চাইলে গুগলের প্লে স্টোর ব্যবহার না করেই ডাউনলোড করার সুযোগ দিতে পারেন।

প্রস্তাবিত আইনটির প্রশংসা করেছে স্পটিফাই, টাইল এবং এপিক। প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ট্যাগ প্রযুক্তির মাধ্যমে হারানো বস্তু খুঁজে দেওয়ার সেবা দিয়ে আসছিল টাইল। এ বছরের শুরুতে প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্য ‘এয়ার ট্যাগস’ আনা নিয়ে অ্যাপলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।

একই ধরনের আইনের প্রস্তাবনা উঠেছে দক্ষিণ কোরিয়াতেও। গুগল গত বছর জানিয়েছে, দেশটিতে সুনির্দিষ্ট কিছু ইন-অ্যাপ লেনদেন প্রক্রিয়া নিয়ে আসবে এবং গেইমিং সংশ্লিষ্ট নয় এমন ডিজিটাল কন্টেন্ট থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন গ্রহণ করবে তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাপ স্টোরের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং ডেভেলপারদের কাছ ১৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ কমিশন সংগ্রহ নিয়ে নিয়ন্ত্রকদের তোপের মুখে পড়েছে অ্যাপল। অ্যাপ স্টোর প্রশ্নে এপিক গেইমসের সঙ্গে আইনি লড়াই চলছে মার্কিন এ প্রযুক্তি জায়ান্টের। বর্তমানে একজন ফেডারেল বিচারক ফোর্টনাইট নির্মাতা এপিক গেইমসের দায়ের করা মামলার রায় জানানোর লক্ষ্যে সাক্ষ্য পর্যালোচনা করছেন।

শুধু অ্যাপল নয়, গুগলের বিরুদ্ধেও প্লে স্টোরের রেওয়াজ প্রশ্নে মামলা ঠুকেছে এপিক। এ ছাড়াও প্লে স্টোর নিয়ে মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর অ্যাটর্নি জেনারেলদের বড় একটি দলের দায়ের করা মামলার মুখে পড়েছে গুগল। তাদের অভিযোগ, অ্যান্ড্রয়েড ফোনে নিজেদের অ্যাপ স্টোরের আধিপত্য বজায় রাখতে অবৈধ অনুশীলন চালাচ্ছে মার্কিন এ সার্চ জায়ান্ট।