স্যাটেলাইট নির্মাতা সোয়ার্ম টেকনোলজিস কিনেছে স্পেসএক্স

স্যাটেলাইট নির্মাতা সোয়ার্ম টেকনোলজিসকে কিনে নিচ্ছে স্পেসএক্স। মালিকানা হাতবদলের এই ঘটনায় স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটির একশ’ ১২০টি স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে স্পেসএক্সের হাতে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2021, 11:27 AM
Updated : 10 August 2021, 11:27 AM

স্পেসএক্সের জন্য তুলনামূলক ছোট একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান কিনে নেওয়া একটি ‘বিরল’ ঘটনাই বলা চলে। সাধারণত স্পেসএক্সের কর্মীরাই প্রতিষ্ঠানের জন্য রকেট নির্মাণ করেন। প্রয়োজন হলে চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার ইতিহাসও আছে স্পেসএক্সের।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি)’-তে সোয়ার্ম টেকনোলজিস স্যাটেলাইট ও অ্যান্টেনা লাইসেন্সের মালিকানা হাতবদলের আবেদন করার পর প্রকাশ পেয়েছে ওই ঘটনা। ওই আবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিগ্রহণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে ১৬ জুলাই।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট দ্য ভার্জ জানিয়েছে, সোয়ার্ম অধিগ্রহণকে বিবেচনা করা হচ্ছে স্পেসএক্সের কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স বাজারে প্রবেশের মাধ্যমে অলাভজনক প্রকল্পের চাপ কমানোর চেষ্টা হিসেবে। প্রতিষ্ঠানটির স্টারলিংক প্রকল্প ভবিষ্যতে সবচেয়ে বেশি মুনাফা আনবে এবং ইলন মাস্কের স্টারশিপ প্রকল্পের তহবিল যোগাবে বলে ধারণা রয়েছে। তবে সোয়ার্মের প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে স্পেসএক্স নির্দিষ্ট কোনটি থেকে লাভবান হওয়ার আশা করছে সে বিষয়টি এখনও পরিস্কার নয়। এই প্রসঙ্গে গোপনীয়তা বজায় রেখে চলেছে উভয়পক্ষ।

এফসিসির কাছে মালিকানা বদলের আবেদনে সোয়ার্ম লিখেছে, “দুই প্রতিষ্ঠানের একীভূত উদ্ভাবনমুখী স্যাটেলাইট সেবা বিশ্বের বঞ্চিত অংশগুলোতে” ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার ক্ষমতা জোরদার করবে। অন্যদিকে “সোয়ার্ম টিমের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ও অভিজ্ঞতা থেকে স্পেসএক্স লাভবান হবে”-- বলা হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।

সোয়ার্মের প্রতিষ্ঠা ২০১৬ সালে। স্যান্ডউইচের সমান ছোট ছোট স্যাটেলাইট ‘স্পেসবি’ বানিয়ে মহাকাশে পাঠায় প্রতিষ্ঠানটি। ভূপৃষ্ঠে ছোট কনজিউমার অ্যান্টেনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে স্যাটেলাইটগুলো।  ওই অ্যান্টেনাগুলো ‘টাইলস’ নামে পরিচিত।

মহাকাশে ১৫০টি স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিকল্পনা ছিলো সোয়ার্মের। এর মধ্যে বর্তমানে কক্ষপথে আছে ১২০টি। আর টাইলস অ্যান্টেনাগুলো এতোই ছোট যে একটি ক্র্যাকারের সমান চিপ ইনস্টল করার জায়গা থাকলেই ওই ডিভাইসের সার্কিট বোর্ডে বসানো যাবে অ্যান্টেনাটি। টাইলস অ্যান্টেনায় জিপিএস বিল্ট-ইন থাকায় ট্র্যাক করা যাবে ওই ডিভাইস। সেন্সর ডেটা পাঠানোর মতো বিভিন্ন কাজের জন্য প্রোগ্রাম করা যায় টাইলস। টাইলস আর স্পেসবি’র মাধ্যমে স্যাটেলাইট সংযোগ সেবা দিতে প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ৫ ডলার নেয় সোয়ার্ম।

সোয়ার্মের তুলনায় স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্পের কাজের ধরন ও উদ্দেশ্য একেবারেই আলাদা। ফাইবার কেবল নির্ভর ইন্টারনেট ব্যবস্থা বা একেবারেই কোনো ইন্টারনেট সংযোগ নেই এমন গ্রামাঞ্চলগুলোতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিতে চায় স্টারলিংক। প্রাথমিক পরিকল্পনার চার হাজার চারশ’ নয়টি স্যাটেলাইটের মধ্যে এক হাজার সাতশ’ এরমধ্যেই মহাকাশে পাঠিয়েছে স্পেসএক্স।

স্টারলিংক সেবার বেটা পরীক্ষকের সংখ্যা এখন প্রায় এক লাখ। তাদের বেশিরভাগ শুরুতে একটি টার্মিনাল কিট কিনেছেন চারশ’ ৯৯ ডলার খরচ করে। এ ছাড়াও প্রতি মাসে খরচ গুনতে হয় ৯৯ ডলার। তবে সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে স্টারলিংক অনেকটা এগিয়ে আছে বলে জানিয়েছে ভার্জ।