নিউ জিল্যান্ডে ‘আবাসিক’ মর্যাদা পেলেন গুগলের ল্যারি পেইজ

নিউ জিল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ল্যারি পেইজ। সম্পদশালী বিনিয়োগকারী শ্রেণির অধীনে এ অনুমতি মিলেছে তার।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2021, 11:04 AM
Updated : 8 August 2021, 11:04 AM

এ শ্রেণিতে আবেদনকারীদের তিন বছরের মধ্যে দেশটিতে অন্তত এক কোটি নিউ জিল্যান্ড ডলার বিনিয়োগ করতে হয়। মার্কিন হিসেবে এটি দাঁড়াবে ৭০ লাখ ডলারের ঘরে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, জানুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ডে প্রবেশ করেছেন পেইজ। সে সময়টিতে কোভিড-১৯ এর জন্য দেশটির সীমান্ত বন্ধ ছিল।

নিউ জিল্যান্ড সরকার জানিয়েছে, পেইজের ছেলে সম্পর্কিত এক জরুরী চিকিৎসা আবেদনের কারণে তাকে অনুমোদন দিয়েছে তারা। ৪৮ বছর বয়সী পেইজ নভেম্বরে অভিবাসনের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ওই সময় সেখানে উপস্থিত না থাকায় তার আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।

পরে জানুয়ারিতে মার্কিন প্রযুক্তি শতকোটিপতিকে তার সন্তানের জন্য নিউ জিল্যান্ডে প্রবেশ করতে দেয় কর্তৃপক্ষ। মূলত তার ছেলেকে যাতে জরুরী চিকিৎসা সেবার জন্য ফিজি থেকে নিউ জিল্যান্ডে নিয়ে আসা যায় সেজন্যই অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে নিউ জিল্যান্ড সরকার। পেইজের আবেদন অনুমোদন পেয়েছে ফেব্রুয়ারিতে।

এ সপ্তাহে নিউ জিল্যান্ড পার্লামেন্টে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী অ্যান্ড্রু লিটল এ সিদ্ধান্তের পক্ষে কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, “[তার প্রবেশ] জরুরী চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শর্তের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল এবং প্রত্যেকটি আবশ্যকীয় নিয়ম মানা হয়েছে।”

অনেক সমালোচক এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মতামত জানিয়েছেন। তারা এ সিদ্ধান্তের স্পষ্ট অন্যায্যতা তুলে ধরেছেন। এ প্রসঙ্গে অভিবাসন পরামর্শক কেটি আর্মস্ট্রং রেডিও নিউ জিল্যান্ডকে বলেন, “আমাদের জিপি (জেনারেল প্র্যাকটিশনারস) এবং পরিষেবক রয়েছেন যারা নিজ অভিবাসনের জন্য অনন্তকাল ধরে অপেক্ষা করছেন, এদিকে ল্যারি আসলেন এবং একেবারে সরাসরি অভিবাসী হতে পারলেন।”

গুগল সহ-প্রতিষ্ঠাতা পেইজের মোট সম্পদ ১১ হাজার ছয়শ’ কোটি ডলারের বেশি। ২০১৯ সালে গুগলের মালিক প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান পেইজ। কিন্তু এখনও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং নিয়ন্ত্রক শেয়ারধারী হিসেবে রয়েছেন তিনি।

তবে, নিউ জিল্যান্ডে আগ্রহ প্রকাশকারী প্রথম সিলিকন ভ্যালি প্রযুক্তি শতকোটিপতি নন পেইজ। তার আগে পেপাল সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ফেইসবুকে প্রথম দিকের বিনিয়োগকারী পিটার থিল নিউ জিল্যান্ডকে “ভবিষ্যত” আখ্যা দিয়ে ২০১১ সালে দেশটির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। বিবিসি বলছে, এরপর সেখানে প্রচুর বিনিয়োগও করেছেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন হুমকির মুখে অন্যদের চেয়ে শক্তিশালী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে নিউ জিল্যান্ড। গত মাসে প্রকাশিত এক গবেষণায় যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ‘গ্লোবাল সাসটেইনিবিলিটি ইন্সটিটিউট’ এর গবেষকরা দেশটিকে “বৈশ্বিক সভ্যতার পতনের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

সমুদ্র স্তরের উচ্চতাবৃদ্ধির মতো হুমকির সঙ্গে মোকাবেলা প্রশ্নে ভালো অবস্থানে রয়েছে নাতিশীতোষ্ণ পর্বতময় এ দেশটি।