‘সোলারউইন্ডস’ ভূক্তভোগীর তালিকায় মার্কিন বিচার বিভাগ

গেল বছরের এক সাইবার আক্রমণের ঘটনায় ২৭ জন সরকারি আইনজীবীর ইমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছিলো বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2021, 11:34 AM
Updated : 1 August 2021, 11:34 AM

বলা হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দেশটির বিচার বিভাগের উপর এমন সাইবার আক্রমণের ঘটনার অতীত নজির নেই এবং ওই ঘটনায় রাশিয়াকেই সন্দেহ করছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।

মার্কিন বিচার বিভাগের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ২৭ জন আইনজীবীর অফিসে কমপক্ষে একটি করে কম্পিউটার হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। এর ফলে তথ্যদাতাদের পরিচয়সহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর ডেটা বেহাত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।

“এর গুরুতর প্রভাবের আশংকা আছে”, বিবিসিকে বলেন মার্কিন বিচার বিভাগের সাবেক আইনজীবী গিল সফার। আইনজীবীদের ইমেইলে “খুব স্পর্শকাতর ও গোপন তথ্য থাকে” বলে জানান তিনি।

হ্যাকাররা যদি গোপন তথ্যদাতাদের পরিচয় জানতে পারে তাহলে তারা ওই তথ্য দিয়ে তাদের গোপন পরিচয় ‘উন্মোচন করে দিতে পারে’ বলে আশংকার কথাও জানিয়েছেন সফার।

‘সোলারউইন্ডস’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সাইবার আক্রমণের ওই ঘটনায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ হাজার কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সাইবার অপরাধীরা অনুপ্রবেশের সুযোগ পেয়েছিলো বলে জানিয়েছে বিবিসি। এই ব্যাপক পরিসরে সাইবার আক্রমণের ঘটনা প্রসঙ্গে মার্কিন নাগরিকরা জানতে পারেন ২০২০ সালের ডিসেম্বরে।

ওই সাইবার আক্রমণের ঘটনায় নিউ ইয়র্কের চারটি অ্যাটর্নি অফিসের কর্মীদের ব্যবহৃত ৮০ শতাংশ মাইক্রোসফট ইমেইল অ্যাকাউন্ট আক্রান্ত হয়েছিলো বলে জানিয়েছে বিবিসি।

“ওই অফিসগুলোতে অনেক স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে তদন্ত চলে”-- জানিয়েছেন মার্কিন বিচার বিভাগের সাবেক আইনজীবী রেনাতো মারিওত্তি। এর মধ্যে উচ্চ স্তরের আর্থিক অনিয়ম নিয়ে তদন্তও আছে এবং বেহাত হওয়া ডেটা এসব ক্ষেত্রে হুমকি দেওয়া বা ব্ল্যাকমেইল করার মতো বেআইনি কাজে ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে, সাধারণ নাগরিকদের কাছে হ্যাকিংয়ের খবর প্রকাশ করার অন্তত সাত মাস আগে- ২০২০ সালের মে মাসেই তাদের কম্পিউটার সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেছিলো হ্যাকাররা।

বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সকল ভূক্তভোগীকে এই প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে এবং “কার্যক্রম, নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত তথ্যের ঝুঁকি” প্রশমণের জন্য কাজ করা হচ্ছে।

গেল এপ্রিলে ‘সোলারউন্ডস’ ও অন্যান্য সাইবার আক্রমণের জেরে রাশিয়ার প্রতি কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রাশিয়া বরাবরের মতোই সাইবার অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায় অস্বীকার করে আসছে।

অন্যদিকে, সরকারি নথি বেহাত হয়ে গেলে, বিদেশি কোনো সরকার সেই নথি ব্যবহার করে জনগনের মতামত এবং নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন মারিওত্তি।