মহামারীর সময়ে ফুলেফেঁপে উঠেছিল জুমের ব্যবসা। বাসা থেকে কাজ এবং অনলাইনে পড়ালেখার এ সময়ে জুম পরিচিত একটি নাম হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্বের মানুষের কাছে। দুই বছর আগেও ক্যালিফোর্নিয়ার এ প্রতিষ্ঠানের মূল্যমান ছিল প্রায় এক হাজার ছয়শ’ কোটি ডলারের ঘরে। কিন্তু মহামারীর ধাক্কায় প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন এসে দাঁড়িয়েছে দশ হাজার ছয়শ’ ৭০ কোটি ডলারে।
এখন মহামারীর প্রকোপ আস্তে আস্তে কাটিয়ে উঠছে বিশ্ব। ফলে জুমও নিজের ব্যবসা নিয়ে বিকল্প চিন্তা করছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, রোববার রাতে নতুন প্রতিষ্ঠান কেনার ঘোষণা দেয় জুম। এক বিবৃতিতে অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, এই পদক্ষেপ তাদেরকে “ব্যবসায়িক গ্রাহকদের কাছে জুমের উপস্থিতি বাড়াতে সাহায্য করবে এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির সুযোগকে ত্বরান্বিত করবে।”
বিশ্ব জুড়ে দুই হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে ‘কাস্টোমার সার্ভিস সেন্টার’-এর জন্য সফটওয়্যার ভিত্তিক সেবা দিচ্ছে ফাইভনাইন। নিজ সেবায় প্রতিষ্ঠানটির সংযুক্তিকে ‘সহজাত ও মানানসই’ হিসেবে দেখছেন জুমের শতকোটিপতি প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা এরিক ইউয়ান।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “প্রতিষ্ঠান নিজ গ্রাহকদের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে যোগাযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকে, এবং আমাদের বিশ্বাস এই অধিগ্রহণ নেতৃস্থানীয় গ্রাহক অংশগ্রহণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে যা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের সব ধরণের গ্রাহকের সঙ্গে যেভাবে সংযোগ স্থাপন করে, সেটি পুনঃসংজ্ঞায়িত করবে।”
এ প্রসঙ্গে থার্ড ব্রিজের বিশ্লেষক স্কট কেসলার বলেন, “এটি লক্ষণীয় যে এখন পর্যন্ত এটাই জুমের সবচেয়ে বড় অধিগ্রহণ ও সংযোজন চুক্তি।” জুনে জার্মান প্রতিষ্ঠান কাইটস কেনার পরিকল্পনা জানিয়েছিল জুম। কিন্তু চুক্তির শর্তাবলীর ব্যাপারে জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। উল্লেখ্য, কাইটস রিয়েল-টাইম মেশিন অনুবাদ সেবা দিয়ে থাকে।
বর্তমানে জুম জনপ্রিয় একটি সেবা। কিন্তু সাধারণ গ্রাহকদেরকে অর্থমূল্যের সেবায় টানতে জুমকে নতুন আরও ফিচার যোগ করতে হবে বলে জানিয়ে রেখেছেন বিশ্লেষকরা।
নতুন এ অধিগ্রহণ জুমের সাধারণ গ্রাহকদের উপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট। কারণ ফাইভনাইন মূলত ‘বিজনেস-টু-বিজনেস’ কাঠামোর প্রতিষ্ঠান। চুক্তি সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর জুমের অপারেটিং ইউনিটে পরিণত হবে ফাইভনাইন। ২০২২ সালের প্রথমার্ধ নাগাদ চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
নতুন অধিগ্রহণের মধ্য দিয়ে জুম সম্পূর্ণ নতুন খাত ‘গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের’ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সিং সেবাদাতা এ প্রতিষ্ঠানের অনুমান তারা “দুই হাজার চারশ’ কোটি ডলারের যোগাযোগ কেন্দ্র বাজারে” প্রবেশ করছে।