খড়্গ নামার আগেই ক্রিপ্টোমাইনিংয়ে ধস নেমেছিল চীনে

ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং নিয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের সাম্প্রতিক অভিযানের আগেই দেশটিতে বিটকয়েন উৎপাদনে শক্তির ব্যবহার দ্রুত কমে এসেছিল বলে দেখা গেছে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণায়।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2021, 01:55 PM
Updated : 15 July 2021, 01:55 PM

দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বব্যাপী ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ের কেন্দ্র হয়ে আছে চীন। ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে অনেক বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। এ কাজে চীনের অনেক জায়গাতেই জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয় যা কার্বন দূষণ প্রশ্নে উদ্বেগের বিষয়।

বিশ্বব্যাপী বিটকয়েন নেটওয়ার্কের কম্পিউটারে ব্যবহৃত শক্তির সঙ্গে কোনো দেশে বিটকয়েন নেটওয়ার্কের কম্পিউটারে ব্যবহৃত শক্তির অনুপাতকে বলে "হ্যাশরেট"। কেমব্রিজ সেন্টার ফর অল্টারনেটিভ ফাইন্যান্সের তথ্য অনুযায়ী এ বছরের এপ্রিলে চীনের এই অনুপাত শতকরা ৪৬ ভাগে নেমে আসে, যা আগের বছর সেপ্টেম্বর মাসে ৭৫.৫ শতাংশ ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

একই সময়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাশ রেটের অংশ মাত্র চার শতাংশ থেকে লাফিয়ে বেড়েছে ১৬.৮ শতাংশে। এর ফলে দেশটি বিটকয়েনের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক হয়ে ওঠে। কাজাখস্তানের শেয়ারও রাশিয়া এবং ইরান অন্যান্য প্রধান উৎপাদকদের সঙ্গে প্রায় আট শতাংশে এ উন্নীত হয়।

গবেষণাটি বিটকয়েন মাইনিংয়ের বৈশ্বিক প্রবণতার একটি বিরল ধারণা দেয়। টেসলার মতো প্রতিষ্ঠানও ক্রিপ্টোকারেন্সি উৎপাদন প্রক্রিয়ার এবং পরিবেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিটকয়েন মাইনিংয়ে আর্থিক ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে মে মাসের শেষের দিকে চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিল বা মন্ত্রিসভার কঠোর অভিযানের আগেই চীনে বিটকয়েন মাইনিংয়ের ক্ষমতা হ্রাস পায়।

এই সপ্তাহেই চীনের সর্বশেষ প্রদেশ হিসেবে পূর্ব চীনের আনহুই ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

চীন এই ব্যবসার মূলোৎপাটন প্রক্রিয়া শুরু করার পর বিস্তারিত ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে। এর ফলে সিচুয়ান, ইনার মঙ্গোলিয়া এবং জিনজিয়াংসহ প্রধান চীনা মাইনিং কেন্দ্রগুলি পঙ্গু হয়ে গিয়েছে কারণ মাইনাররা টেক্সাস, কাজাখস্তান সহ বিভিন্ন জায়গায় চলে গিয়েছে বা মেশিন ফেলে দিয়েছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং মেশিনের সবচেয়ে বড় চীনা নির্মাতা বিটমাইন গত মাসেই বেইজিংয়ের নিষেধাজ্ঞার পর বিক্রয় বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং কাজাখস্তানসহ বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের উৎস খুঁজছে।