আইন মেনে ভারতে টুইটারের ‘কমপ্লায়েন্স অফিসার’ নিয়োগ

ভারতের নতুন আইটি আইন মেনে কর্মী নিয়োগ শুরু করেছে টুইটার ইনকর্পোরেটেড ইন্ডিয়া। সম্প্রতি একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আগামীতে অন্যান্য নির্বাহীদেরও নিয়োগ দেবে মাইক্রোব্লগিং সাইটটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2021, 05:43 PM
Updated : 8 July 2021, 05:43 PM

বৃহস্পতিবার নিজেদের এ পরিকল্পনার ব্যাপারে আদালতকে জানিয়েছে মার্কিন এ সামাজিক মাধ্যম প্রতিষ্ঠানটি। মে মাসের শেষে কার্যকর হয়েছে ভারতের ওই নতুন আইটি আইন। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান যাতে দ্রুত আইনি অনুরোধে সাড়া দিয়ে কোনো পোস্ট মুছে ফেলে এবং ওই পোস্ট কে করেছেন তার বিস্তারিত জানায়, তা অনেকটাই নিশ্চিত করেছে আইনটি। এতে নতুন নির্বাহী নিয়োগ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

কিছুদিন ধরেই ভারত সরকার ও মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছিল। কোভিড-১৯ মহামারীর সময়টিতে সামাজিক মাধ্যমেও মানুষের আনাগোনা বেড়েছে অনেক। ঠিক এমন একটি সময়েই নতুন আইন নিয়ে হাজির হয়েছে ভারত।

এ বছরের শুরুতে টুইটার এবং দেশটির ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদী প্রশাসনের সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ওই সময়টিতে টুইটারকে কৃষক বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত বিতর্কিত এক হ্যাশট্যাগ সরাতে বলেছিল মোদী সরকার।

পরে ভারতে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার পরিবেশেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বিষয়টি। এখন কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান দেশটিতে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ নিয়েও অন্যভাবে চিন্তা করছে।    

টুইটার সম্প্রতি জানিয়েছে, আইন মেনে দুটি পদ পূরণ করার চেষ্টা করবে সাইটটি। এর মধ্যে একটি হলো – একজন সংযোগ কর্মকর্তার চাকরি – এটি ভারপ্রাপ্ত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পূরণ করবে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে, একজন ভারপ্রাপ্ত অভিযোগ কর্মকর্তা জুলাই ১১ বা তা আগে নিয়োগ দেবে টুইটার। রয়টার্স উল্লেখ করেছে, দিল্লি হাই কোর্টে জুনের আট তারিখ এক নথি দাখিল করেছে প্রতিষ্ঠানটি, সেখানেই এ বিষয়ে জানিয়েছে তারা। 

গত সপ্তাহে ভারতের আদালতে দাখিল করা এক নথিতে দেশটির সরকার জানিয়েছে, টুইটার আইটি আইন লঙ্ঘন করায় ব্যবহারকারীর পোস্ট করা কনটেন্টের দায় নিতে হবে তাদের। এদিকে, বৃহস্পতিবার ভারতের হাই কোর্ট জানিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজেদের পদের পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়ার আগে টুইটারকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে। আদালত আরও জানিয়েছে, টুইটার নিয়ম ভাঙলে সরকার স্বাধীনভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

অন্যদিকে টুইটার জানিয়েছে, ভারতে সংযোগ কার্যালয় স্থাপন করছে তারা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

ভারতের প্রযুক্তি মন্ত্রী এর আগে টুইটারকে ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়ম ভাঙার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, সব সামাজিক মাধ্যমকেই নতুন নিয়ম মেনে চলতে হবে।  

মার্কিন এই প্রতিষ্ঠান এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেড়েছে অনেকটাই। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারতীয় পুলিশ অন্তত পাঁচটি মামলা করেছে টুইটার এবং সাইটটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

দুটি প্রদেশে পুলিশ টুইটারের ভারতীয় প্রধান মানিশ মাহেশোয়ারির নাম অভিযোগে উল্লেখ করেছে। মাহেশোয়ারির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার আদালতের নির্দেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জও জানিয়েছে দেশটির উত্তর প্রদেশ।