গেইম ডাউনলোডে সাবধান, হতে পারেন ক্রিপ্টোমাইনিংয়ের শিকার

গেইমাররা গেইম ডাউনলোড করে গেপনে হ্যাকারদের ক্রিপ্টোমাইনিংয়ে সহায়তা করছেন বলে জানা গেছে সম্প্রতি। যে গেইমগুলো বিনামূল্যে ডাউনলোড করা সম্ভব হচ্ছে এর অনেকগুলোতেই ম্যালওয়্যার আকারে দেওয়া আছে ক্রিপ্টোমাইনিংয়ের কোড।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2021, 12:42 PM
Updated : 26 June 2021, 12:42 PM

গ্র্যান্ড থেফট অটো ৫, এনবিএন ২কে১৯ এবং প্রো এডিশন সকার ২০১৮-এর মতো গেইমগুলো বিনামূল্যে মিলছে বিভিন্ন ফোরামে।

কিন্তু এই গেইমগুলির কোডের ভিতরে লুকানো রয়েছে ক্রিপ্টো-মাইনিং ম্যালওয়্যারের একটি অংশ যার নাম ক্র্যাকোনশ। গেইমটি ডাউনলোড হয়ে গেলে ওই কোড গোপনে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং করে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

গবেষকরা বলছেন, অপরাধীরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অন্তত দুই মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

অ্যাভাস্টের গবেষকরা বলছেন, “ক্র্যাক করা” এই গেমগুলি দ্রুত ক্র্যাকোনশ ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং সাইবার নিরাপত্তা সফটওয়্যার সংস্থাটি এখন প্রতিদিন কম্পিউটারে গড়ে প্রায় আটশ’ ঘটনা শনাক্ত করছে।

অ্যাভাস্ট যেহেতু কেবল এর অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করা পিসিতে ক্ষতিকারক সফটওয়্যার শনাক্ত করে, তাই ক্র্যাকোনোশের প্রকৃত প্রভাব অনেক বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এখন পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি দেশে এই ম্যালওয়্যারের খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে - ফিলিপিন্সে ১৮ হাজার ৪৪৮ জন, ব্রাজিলে ১৬ হাজার ৫৮৪ জন, ভারতে ১৩ হাজার ৭৭৯ জন, পোল্যান্ডে ১২ হাজার ৭২৭ জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ হাজার ৮৫৬ জন এবং যুক্তরাজ্যে আট হাজার ৯৪৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, যখন ক্র্যাকোনশ ইনস্টল করা হয়, তখন এটি নিজেকে রক্ষা করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে রয়েছে-

উইন্ডোজ আপডেট থামিয়ে দেওয়া এবং সকল নিরাপত্তা সফটওয়্যার আনইনস্টল করে ফেলা।

এরপর ডিভাইসে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং প্রোগ্রাম ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে মালিকের অজান্তেই। এ সময়-

তাদের কম্পিউটারে কাজের গতি ধীর হয়ে যেতে পারে, অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন পার্টস ক্ষয়ে যেতে পারে এবং বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যাতে পারে বলে জানিয়েছে অ্যাভাস্ট।

অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির ক্রিস্টোফার বাড বলেন, “ক্র্যাকোনশ দেখিয়েছে, বিনামূল্যে গেইম পাওয়ার চেষ্টায় আপনি চাননি এমন কিছুও এসে হাজির হতে পারে আপনার ডিভাইসে - আর সেটি হচ্ছে ম্যালওয়্যার"।

“এবং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এটি ম্যালওয়্যার লেখকদের জন্য বিষয়টি অত্যন্ত লাভজনক।”

অ্যাভাস্ট বলছে, হ্যাকারদের ডিজিটাল ওয়ালেট ট্র্যাক করে দেখা গেছে, এই কেলেঙ্কারীর মাধ্যমে হ্যাকাররা ‘মোনেরো’ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দুই মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করেছে।

অ্যাভাস্ট বিশ্বাস করে, ম্যালওয়্যারটির স্রষ্টা চেক হতে পারে। কারণ, চেক লোকগাথা অনুসারে ক্র্যাকোনশ শব্দটির অর্থ "পাহাড়ের আত্মা"।