প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ৫ জুলাইতেই সিইও পদ ছাড়বেন বেজোস

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস প্রধান নির্বাহীর পদ ছেড়ে দেওয়ার খবরটি আগেই এসেছিল। এবার প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার সভায় তিনি ঘোষণা দিলেন, দিনটি জুলাই মাসের পাঁচ তারিখ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2021, 11:34 AM
Updated : 27 May 2021, 11:34 AM

প্রতিষ্ঠা এবং প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অ্যামাজন পরিচালনা জেফ বেজোসকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি করে তুলেছে। এবার তিনি প্রতিষ্ঠানটির লাগাম তুলে দিচ্ছেন অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস এর প্রধান অ্যান্ডি জেসি'র হাতে।

বেজোস অ্যামাজনের নির্বাহী চেয়ারপার্সন হবেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিএনএন।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রুয়ারির আয়ের প্রতিবেদনের অংশ হিসাবে নেতৃত্ব পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়। সে সময় অ্যামাজন বলেছিলো, বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে জেসি দায়িত্ব নেবেন। তবে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ তখন জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।

বেজোস বলেন, দিনটি অসম্ভব “আবেগের”— ৫ জুলাই ১৯৯৪ সালে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।

বেজোস বুধবার বলেন, “আমি নির্বাহী চেয়ারপার্সনের ভূমিকায় যেতে পেরে খুব উচ্ছ্বসিত, যেখানে আমি আমার ক্ষমতা এবং মনোযোগ নতুন পণ্য এবং উদ্যোগের দিকে দেব।” ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, অ্যামাজনের বাইরে তার ব্যক্তিগত কার্যক্রম, যেমন ‘বেজোস আর্থ ফান্ড’ এবং ‘ব্লু অরিজিনে’র মতো উদ্যোগে কাজ করার জন্য হাতে আরও সময় পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

বেজোস আশা প্রকাশ করেন, জেসি - যিনি ২৪ বছর ধরে অ্যামাজনে কাজ করছেন এবং ধাপে ধাপে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে অ্যামাজনের সবচেয়ে লাভজনক বিভাগ পরিচালনা করেছেন, তিনি “একজন অসামান্য নেতা” হবেন।

বেজোস বলেন, “তার সর্বোচ্চ মান রয়েছে এবং আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, এই বিশ্ব আমাদের সাধারণ বানিয়ে ফেলবে, অ্যান্ডি সেটা কখনোই হতে দেবে না।”

“যে শক্তি আমাদের বিশেষ করে তোলে, সেটি টিকিয়ে রাখার ক্ষমতা তার আছে।”

মার্চেই অ্যামাজন জানিয়েছে, জেসি যখন অ্যামাজনের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস-এর শীর্ষ পদ ছেড়ে দেবেন, তখন তার জায়গাটি নেবেন সেলসফোর্স মালিকানাধীন সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ‘ট্যাবলো’র সিইও অ্যাডাম সেলিপস্কি।

জেসি এমন একটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিচ্ছেন যেটি একদিকে যেমন ক্রমশ জটিল পরিচালনায় যাচ্ছে তেমনি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের তীক্ষ্ণ নজরেও রয়েছে। বুধবারই অ্যামাজন জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ৮৪৫ কোটি ডলারে এমজিএম কিনছে।

মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আমেরিকান নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরফ থেকেই অভিযোগ উঠেছে এবং তদন্ত হয়েছে। বিগ টেক নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম অ্যামাজন।

অ্যামাজন পরিচালনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সভায় প্রশ্ন উঠলে বেজোস বলেন, "আমি বলব যে আমরা যেখানেই ব্যবসা করি, প্রতিটি ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলির তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হই। “খুচরা বিক্রয় খুবই স্বাস্থ্যকর ব্যবসা এবং 'বিজয়ী একাই সব কিছু নিয়ে যায়' তেমন কাঠামো থেকে অনেক দূরে।”

অ্যামাজন নতুন যেসব প্রকল্পের ওপর বাজি ধরেছে সেগুলোও জেসিকে পরিচালনা করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে টেলিহেলথ অফার, অ্যামাজন কেয়ার এবং এর স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রকল্প-- প্রজেক্ট কুইপার।

বেজোস বলেন, “এই ধারণাগুলির কোনোটিই সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। এগুলোর সবই বিশাল বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমাদের পুরো ইতিহাসই ঝুঁকি নেওয়ার ইতিহাস। এর মধ্যে অনেকগুলি ব্যর্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও অনেকগুলি ব্যর্থ হবে। তবে আমরা বড় ঝুঁকি নিতে থাকব।”