তদন্তের জন্য এক স্বাধীন আইনী প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছিল মাইক্রোসফট পরিচালকরা।
“এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল” সূত্রের উল্লেখ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের এক প্রকৌশলী এক চিঠিতে “বছরের পর বছর ধরে বিল গেটসের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক থাকার” কথা উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হলে, “বোর্ডের কিছু সদস্য মত দেন যে, চার দশক আগে প্রতিষ্ঠা করে এতোদিন নেতৃত্ব দিয়ে আসা এই প্রতিষ্ঠানের বোর্ডে গেটসের থাকা আর শোভন নয়।"
“বোর্ডের তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই মি. গেটস পদত্যাগ করেন।”
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে ওই প্রকৌশলীর নাম ছিল না।
মাইক্রোসফটের এক মুখপাত্র সিএনএনকে নিশ্চিত করেন, “২০১৯ সালের শেষার্ধে মাইক্রোসফট জানতে পারে, বিল গেটস ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক শুরু করতে চেয়েছিলেন।” “একটি স্বাধীন আইনী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় বোর্ডের একটি কমিটি এ বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত পরিচালনা করেছে। তদন্তের পুরোটা সময় জুড়ে মাইক্রোসফট ওই কর্মীকে সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়েছে।”
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিল গেটসের একজন মুখপাত্র বলেন, “প্রায় ২০ বছর আগে একটি প্রেমের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছিল। তবে, বোর্ড থেকে বিলের সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি কোনোভাবেই ওই বিষয় সংশ্লিষ্ট ছিল না। সত্যিকার অর্থে তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই জনহিতৈষী কাজে আরও বেশি সময় দেওয়ার কথা বলে আসছিলেন।”
মুখপাত্র বোর্ড থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মার্চ ২০২০ সালে দেওয়া একটি বিবৃতির দিকেও ইঙ্গিত করেন।
এ বিষয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসে এক প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো। টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল, “গেটস কাজের জায়গায় প্রশ্নবোধক আচরণের পরিচিতি তৈরি করছিলেন।”
এ বিষয়ে “প্রত্যক্ষ জ্ঞান আছে এমন ব্যক্তিদের” উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, “অন্তত কয়েকবার মি. গেটস মাইক্রোসফট এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের নারী কর্মীদের পটানোর চেষ্টা করেছিলেন।”
টাইমস ওই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনি।
গেটসের মুখপাত্র টাইমসকে বলেন, “এটা অত্যন্ত হতাশার বিষয় যে, বিল গেটসের বিচ্ছেদের কারণ, পরিস্থিতি এবং সময়সীমা সম্পর্কে অনেক অসত্য কথা ছড়িয়েছে।”
মুখপাত্র বলেন, “কর্মচারীদের প্রতি দুর্ব্যবহারের দাবিও মিথ্যা”, এবং “গেটসের বিবাহবিচ্ছেদ ঘিরে গুজব এবং জল্পনা ক্রমশ যুক্তির বাইরে চলে যাচ্ছে।”
এটা দুর্ভাগ্যজনক যে পরিস্থিতি সম্পর্কে যারা খুব কম জানেন, তাদেরকেই এই সংবাদের 'সূত্র' হিসাবে নেওয়া হচ্ছে।
বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মুখপাত্ররা রোববার মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিক সাড়া দেননি।
এই মাসের শুরুতেই বিল গেটসের স্ত্রী এবং তাদের ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মেলিন্ডা গেটস বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন।
ব্লুমবার্গ বিলিওনেয়ার ইনডেক্স অনুসারে বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটসের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪৪ বিলিয়ন ডলার।