টেসলা মুখ ফেরানোয় মূল্য পতন বিটকয়েনে

মুখের এক কথায় যেমন উঠেছিল তেমনি এক কথাতেই ধপাস। টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক ঘোষণা করেছেন গাড়ির মূল্য হিসেবে টেসলা আর বিটকয়েন নেবে না। এক ধাক্কায় বিটকয়েনের দাম পড়ে গেছে ১০ শতাংশ। ধাক্কা লেগেছে টেসলার শেয়ার মূল্যেও।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2021, 11:12 AM
Updated : 13 May 2021, 11:12 AM

টুইটে ঘোষণা দেওয়ার সময় ইলন মাস্ক জলবায়ু পরিবর্তনে বিটকয়েন মাইনিংয়ের প্রভাবকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

মার্চে টেসলা যখন ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ করার ঘোষণা দেয় তখনই তা পরিবেশবিদ এবং বিনিয়োগকারীদের তোপের মুখে পড়ে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রুয়ারিতে জানায়, তারা দেড় বিলিয়ন ডলার মূল্যের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ডিজিটাল মুদ্রা কিনেছে। বৃহস্পতিবার সেই অবস্থান থেকে সড়ে এলো টেসলা।

টুইটে মাস্ক বলেন, “আমরা বিটকয়েন মাইনিং এবং লেনদেনের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার নিয়ে উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে কয়লার, যেটা থেকে সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমন ঘটে।”

“ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি ভাল ধারণা... কিন্তু পরিবেশের জন্য ক্ষতির বিনিময়ে এটা নেওয়া সম্ভব নয়।”

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে কেনা বিটকয়েন টেসলা বিক্রি করবে না। বরং, বিটকয়েন মাইনিং পরিবেশবান্ধব হওয়ার পর সেগুলো ব্যবহার করবে।

বাজার বিশ্লেষকরা অবশ্য এই পদক্ষেপকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্থায়িত্বের সমর্থক বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ প্রশমিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।

“পরিবেশগত, সামাজিক এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স (ইএসজি) এখন অনেক বিনিয়োগকারীর জন্যই অন্যতম প্রধান বিবেচ্য বিষয়।” বার্মান ইনভেস্ট-এর জুলিয়া লি বিবিসিকে বলেন, “টেসলা একটি পবিশেবান্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়ায়  পরিবেশগত ক্ষেত্রে বিশেষ করে ইএসজিতে আরও ভালো কাজ করতে চাইতে পারে।”

তবে, এটাও ঠিক, তিনি বলেন, “নিন্দুকরা হয়তো বলবেন, ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারকে প্রভাবিত করার জন্য এটি মাস্কের এটি আরেকটি পদক্ষেপ। যেমনটি তিনি অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে করেছেন।”

গত মাসেই টেসলা বছরের প্রথম প্রান্তিকের মুনাফা ঘোষণা করেছে ৪৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যেটি গত বছরে একই সময়ে ছিল এক কোটি ৬০ লাখ ডলার। বিটকয়েন বিক্রি এবং পরিবেশগত ক্রেডিট এই বিক্রয় বৃদ্ধিতে প্রভাব রেখেছে।

মাস্ক নিজে ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতের অন্যতম হাই প্রোফাইল সমর্থক। প্রায়ই এ বিষয়ে তিনি টুইটও করেন।

সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে বিটকয়েন মাইনিংয়ের শতকরা ৭৫ ভাগেরও বেশি চীনে হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রিপ্টোকারেন্সির কার্বন ফুটপ্রিন্ট চীনের ১০টি বৃহত্তম শহরের মধ্যে একটির মতো বড়। কারণ, বিটকয়েন মাইনাররা বছরের বেশিরভাগ সময় জীবাশ্ম জ্বালানি, বিশেষ করে কয়লায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন।