জ্যেষ্ঠ নির্বাহীদের বেতনবৃদ্ধি আটকে দিচ্ছে আলিবাবা

চীনা ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ নির্বাহীদের বেতন বৃদ্ধি আটকে দিয়েছে এবং পরিবর্তে জুনিয়র স্টাফদের বেতন বাড়িয়ে দিচ্ছে। চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থার খড়্গের মুখে কর্মীবাহিনী অক্ষত রাখার উপায় হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2021, 11:07 AM
Updated : 30 April 2021, 11:07 AM

বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারটি সূত্র জানিয়েছে, আলিবাবার শত শত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই বছর বেতন বৃদ্ধির জন্য বিবেচিত হবেন না, যদি না তারা অসাধারণ কাজ দেখাতে পারেন। বরং হাংজু-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি জুনিয়র কর্মীদের জন্য যথেষ্ট মজুরি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।

কর্মী বেতন বিষয়ে সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্ত আলিবাবার সাবেক অবস্থান থেকে সরে আসার দিকেই ইঙ্গিত করে; বিশেষ করে চীনে কয়েক মাসব্যাপী মূল ভূখণ্ডের বড় এবং শক্তিশালী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোর নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগের বাস্তবতায়। বিশাল এইসব প্রতিষ্ঠানের বাজার আধিপত্য এবং জনমত প্রভাবিত করার ক্ষমতাকে দেশটির নিয়ন্ত্রকরা ভালো চোখে দেখছেন না।

আলিবাবার পরিচালন স্তরের কর্মকর্তারা বছরের পর বছর ধরে বছরে গড়ে ৫% থেকে ১০% বেতন বৃদ্ধি পান এবং তাদেরকে স্টক ইনসেনটিভও দেওয়া হতো বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আলিবাবা নির্বাহীদের বেতন বৃদ্ধি আটকে দেওয়ার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে-- “মেধা আলিবাবা গ্রুপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। আমাদের একটি শক্তিশালী এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রতিদান ব্যবস্থা রয়েছে যা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মেধাবীদের গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রাধিকারকে প্রতিফলিত করে।”

সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় সূত্ররা নাম প্রকাশ করেননি।

ই-কমার্স থেকে ক্লাউড কম্পিউটিং, বিনোদন, লজিস্টিকসহ বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করছে আলিবাবা। ২০২০ সালের হিসাব অনুসারে প্রতিষ্ঠানটির আড়াই লাখেরও বেশি কর্মী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সাধারণত এপ্রিল মাসে বেশিরভাগ কর্মীর বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়।

এর আগে চীনা জায়ান্ট আলিবাবা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আইপিও নিয়ে শেয়ার বাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিল। নির্দিষ্ট তারিখের মাত্র কয়েক দিন আগে অকস্মাত সে অবস্থান থেকে সরে আসে জ্যাক মা’র প্রতিষ্ঠানটি। ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়, জ্যাক মা’র একটি মন্তব্যের সূত্র ধরে চীন সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তৎক্ষণাত আইপিও কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য করা হয় আলিবাবাকে।

সে সময় জ্যাক মা চীনা ব্যাংকিং সিস্টেমে কোনো বাস্তুতন্ত্র নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেন, চীনা ব্যাংকগুলো অনেকটা বিচ্ছিন্ন মহাজনী কারবারের মতো।

জ্যাক মা'র ওই মন্তব্যের পরপরই খড়্গ নেমে আসে আলিবাবার ওপর, বন্ধ হয়ে যায় আইপিওর কার্যকলাপ এবং চীন সরকার দেশটির বিশাল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর টুঁটি চেপে ধরে।