অনেক পণ্য উৎপাদকই পণ্য তৈরি করতে পারছেন না কারণ তারা প্রয়োজনীয় সেমিকন্ডাক্টর পাচ্ছেন না। আর এই সেমিকন্ডাক্টর হচ্ছে মাইক্রোচিপের মূল উপাদান।
সিসকো প্রধান চাক রবিনস বিবিসিকে বলছেন, “আমরা মনে করছি ছয় মাসের মধ্যে স্বল্প মেয়াদে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।”
“নির্মাতারা এরই মধ্যে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছেন। আগামী ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে পরিস্থিতি ভালো থেকে আরও ভালো হবে।”
ওই সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টি প্রযুক্তির অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে ৫জি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অফ থিংস এবং ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো বিষয়।
প্রযুক্তি কাণ্ডারীদের মধ্যে প্রায় সবাই বলাবলি করছেন, এই চিপ সঙ্কট সামলাতে কতো দিন লাগতে পারে। এই সময়ে গোটা বিশ্বের ইন্টারনেট সংযোগের অন্তত ৮৫ ভাগ চলে সিসকো সিস্টেমের মাধ্যমে। কাজেই সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান যখন একটি ধারণা দেন, সেটি যথেষ্ট ওজনদার তথ্য।
চাক রবিনস বলছেন, “এই মুহূর্তে সেমিকন্ডাকটর সঙ্কট একটি বিশাল সমস্যা, কারণ, সবকিছুর মধ্যেই এই জিনিসটি লাগে।”
বুঝতে কষ্ট হয় না কেন মার্কিন চিপ নির্মাতা ইনটেল দুই হাজার কোটি ডলার খরচে দুটি নতুন চিপ নির্মাণ কারখানা তৈরি করছে অ্যারিজোনায়।
ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি বিশ্লেষক ড্যান আইভস জানাচ্ছেন, বাজারে এখন মাইক্রোচিপের চাহিদা ধারণার চেয়ে প্রায় শতকরা ২৫ ভাগ বেশি।
এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ব্যবসায়ী নেতাদের এক সভায় ডেকে মাইক্রোচিপ উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি চান চিপ উৎপাদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে যেন শীর্ষে পৌঁছায়। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে প্রযুক্তি ও বাণিজ্য যুদ্ধর মধ্যে এইটিই তার “টপ প্রায়োরিটি”।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেমিকন্ডাক্টর শিল্প সংগঠনের হিসেবে সেমিকন্ডাক্টরের বৈশ্বিক উৎপাদন ক্ষমতার তিন চতুর্থাংশই পূর্ব এশিয়ায়। এর মধ্যে তাইওয়ানের টিএসএমসি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং হচ্ছে বড় খেলোয়াড়।
চীন এদিকে তাইওয়ানকে একীভূত করতে চায়। এর ফলে আগেভাগেই ইউরোপের নেতারাও চাইছেন নিজেদের দেশেই মাইক্রোচিপ উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণ বাড়াতে। চীনের নিজেরই আগামীতে প্রচুর সেমিকন্ডাক্টর লাগবে অথচ দেশটির নিজস্ব তেমন কোনো উৎপাদন সুবিধা নেই।
এই গোটা জটিল সমীকরণটির সহজ সমাধান বাতলেছেন সিসকোর চাক রবিনস। তিনি বলছেন, “যদি আপনার অনেকগুলো উৎস থেকে পাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে আলাদা করে ভাবার দরকার নেই সেটা কোথা থেকে বানানো।”