কথাটি স্রেফ ভোজবাজির মতো মনে হলেও আদতে 'হাওয়া থেকে পাওয়া' উপাদান ব্যবহার করেই হীরা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক একটি দল বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন সংগ্রহ করে পরিবেশবান্ধব হীরা তৈরি করেছেন।
Published : 01 Nov 2020, 02:27 PM
দলটির দাবি, কার্বন প্রশ্নে বিশ্বের প্রথম “শূন্য প্রভাব” হীরা তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন তারা।
স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদন জানিয়েছে, দলটি বায়ুমণ্ডল থেকে নানাবিধ রাসায়নিক উপাদান সংগ্রহ করেছেন, শক্তির জন্য দ্বারস্থ হয়েছেন সূর্য ও বাতাসের কাছে। মূল্যবান হীরা তৈরির পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করেছেন বৃষ্টির পানিও।
হীরা তৈরির উদ্যোগটি নিয়েছেন সবুজ শক্তি সংস্থা ‘ইকোট্রিসিটি’ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘ফরেস্ট গ্রিন রোভারস’ ফুটবল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ডেল ভিনস। যুক্তরাজ্যের স্ট্রাউড শহরে গড়ে তুলেছেন ‘স্কাই ডায়মন্ড’। এরই মধ্যে তাদের তৈরি হীরাকে “অঘটন ছাড়াই আভিজাত্য” আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
দলটির মূল লক্ষ্য ছিল গতানুগতিক পন্থায় হীরা উত্তোলনের পথকে চ্যালেঞ্জ জানাবে এমন বিকল্প খুঁজে বের করা। উল্লেখ্য, গতানুগতিক হীরা উত্তোলনে বিশ্বকে অনেক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
নিজেদের কৌশল সঠিক করতে পাঁচ বছর ব্যয় করেছেন তারা। নিশ্চিত করেছেন তাদের তৈরি হীরাটি যাতে রাসায়নিক ও বাহ্যিক দিক থেকে পৃথিবীর গর্ভ থেকে উত্তোলিত হীরার মতোই হয়।
এরই মধ্যে এটি সনদ পেয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল জেমোলজিক ইন্সটিটিউট’ থেকে। সবমিলিয়ে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে এরকম একটি হীরা তৈরি হতে।
ভিনস বলেছেন, “সম্পূর্ণ উপাদানই আসে বায়ুমণ্ডল থেকে, এবং এটি শুধু স্বল্প বা শূন্য কার্বন নয়, এটি আদতে নেগেটিভ কার্বন। কারণ আমরা বায়ুমণ্ডলের কার্বনকে একটি স্থায়ী কার্বন কাঠামোতে নিয়ে আসছি, যা হলো হীরা।”
তিনি আরও বলেছেন, “আমাদের আর বড় বড় গর্ত খুঁড়তে হবে না মাটিতে – যার কয়েকটি এতো বড় যে মহাকাশ থেকেও দেখা যায়। আমাদের আর হীরা পাওয়ার জন্য তা করতে হবে না, আমরা চাইলে আকাশ থেকে সম্পূর্ণ অনুকূল প্রক্রিয়ায় এটি তৈরি করে নিতে পারবে।”
“আমরা এটিকে একবিংশ শতাব্দির প্রযুক্তি হিসেবেই দেখছি, একদম ওই ধরনের যার প্রয়োজন পড়বে জলবায়ু এবং অন্যান্য স্থায়িত্ব সংকটের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে, এ পন্থায় আমরা আগের মতোই বা আমরা যেমনটা চাই সেভাবেই জীবনযাপন করতে পারব।”
আগামী বছরের শুরু নাগাদ হীরাগুলো প্রি-অর্ডার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে স্কাই নিউজ।