রয়টার্স জানিয়েছে, রোববার খবরটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান সরকার। ইমরান তার চিঠিতে লিখেছেন, “ক্রমবর্ধমান ইসলামফোবিয়া” বিশ্বজুড়ে উগ্রবাদ ও সহিংসতাকে ইন্ধন দিচ্ছে, বিশেষ করে ফেইসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্গুলোর মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ছে।
“আমি আপনাদেরকে ইসলামোফোবিয়া ও ইসলাম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে একই রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আহবান জানাবো যেমনটা আপনারা হলোকাস্টের জন্য আরোপ করেছেন।” – চিঠিতে লিখেছেন ইমরান খান।
ফেইসবুক এ মাসে জানিয়েছে, হলোকাস্ট অস্বীকৃতি ও বিকৃতির যে কোনো কনটেন্ট তারা নিষিদ্ধ করবে। এজন্য বিদ্বেষমূলক নীতিমালা আপডেটের খবরও জানিয়েছেন তারা।
“একজন এরকম বার্তা পাঠাতে পারে না, যখন কিছু সংখ্যকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বার্তা অগ্রহণযোগ্য, এটি অন্যান্যদের জন্যও অগ্রহণযোগ্য।” – লিখেছেন ইমরান খান। তিনি আরও বলেছেন, “এটি কুসংস্কার এবং পক্ষপাতিত্বের প্রতিফলন ঘটায় যা উগ্রবাদে আরও ইন্ধন যোগাবে”।
ইমরান খানের অনুরোধের উত্তরে ফেইসবুকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান সব ধরনের বিদ্বেষের বিরোধী এবং তারা জাতি, জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তা এবং ধর্মের বিরুদ্ধে আক্রমণে অনুমোদন দেয় না।
“আমরা এ ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য জানা মাত্র সরিয়ে ফেলবো।” – এক ইমেইল বিবৃতিতে লিখেছেন মুখপাত্র। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির “আরও কাজ করতে হবে”।
ইমরান নিজ চিঠিতে ফ্রান্সের পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সেখানে ইসলামকে উগ্রবাদের সঙ্গে জড়িত করা হচ্ছে।
রোববারের শুরুর ভাগে ইমরান খান অভিযোগ করেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নবী মোহাম্মদ (সা.) এর ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শনে উৎসাহ দিয়ে “ইসলামকে আক্রমণ করেছেন”।
ফ্রান্সে শুক্রবার ৪৭ বছর বয়সী স্কুল শিক্ষক সেমুয়েল প্যাটিকে প্রকাশ্য দিবালোকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরে ঘটনাস্থলের কাছেই পাহারায় থাকা পুলিশের গুলিতে হামলাকারী নিহত হন।
চলতি মাসের শুরুতে ইতিহাসের ওই শিক্ষক তার ক্লাসরুমে নবী মোহাম্মদ (সা.)-এর ব্যাঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন। রয়টার্স জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের কাছে মতপ্রকাশের ব্যাখ্যায় ওই ব্যাঙ্গচিত্র দেখান তিনি।
গত মাসেই ফ্রান্সের রম্য ম্যাগাজিন শার্লি এবদুর পুরনো কার্যালয়ের কাছে দুই সাংবাদিক ছুরিকাহত হয়েছিলেন।
বিতর্কিত কার্টুন ছাপার জেরে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি প্যারিসে শার্লি এবদু কার্যালয়ে ঢুকে গুলি চালিয় উগ্রপন্থি মুসলিম দুই ভাই। মারা গিয়েছিল বিশিষ্ট ফরাসী কার্টুনিস্ট-সহ ১২ জন।
সাম্প্রতিক হ্যতাকাণ্ড নিয়ে দেশজুড়ে ক্ষোভ দেখা দেওয়ার পর ম্যাক্রোঁ মৌলবাদী ইসলামের বিপরীতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা নিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে কথা বলেন।
বিবিসি জানায়, ‘ফ্রান্স ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন বন্ধ করবে না’ বলেও এ সপ্তাহের শুরুর দিকে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ। একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার অর্থ তার কথায়, দেশের একতাকেই ক্ষুন্ন করা।
এরই মধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, “মুসলিম এবং ইসলাম নিয়ে ম্যাক্রোঁর সমস্যা কি? তার মানসিক চিকিৎসা দরকার।” ওই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফ্রান্স।