অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে হাজারো নারীর ভুয়া নগ্ন ছবি

এক লাখেরও বেশি নারীর ভুয়া নগ্ন ছবি শেয়ার হয়েছে অনলাইনে। সামাজিক মাধ্যম সাইট থেকে ছবি নিয়ে ডিপফেইক বটের মাধ্যমে বদলে দেওয়া হয়েছে সেগুলোকে। নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2020, 04:49 PM
Updated : 21 Oct 2020, 04:49 PM

গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান সেনসিটি জানিয়েছে, ডিজিটাল পন্থায় কাপড় সরিয়ে নেওয়া হয় ছবি থেকে, এবং পরে ওই ছবি মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে শেয়ার করা হয়। সেনসিটির দাবি, এ প্রযুক্তিটি ‘ডিপফেইক বট’।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে “দেখে প্রাপ্তবয়স্ক মনে হয় না” এরকম অনেকে রয়েছেন। যারা ডিপফেইক বটটি চালাচ্ছেন, তারা পুরো বিষয়টিকে ‘বিনোদন’ আখ্যা দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ওই ডিপফেইক বটটি পরীক্ষা করে দেখেছে। পরীক্ষায় দুর্বল ফলাফল এসেছে বলে জানিয়েছে তারা।

ডিপফেইক মূলত কম্পিউটার সৃষ্ট অ্যালগরিদম যা কোনো ব্যক্তির অনেকগুলো নমুনা ছবি নিয়ে নতুন কৃত্রিম ছবি তৈরি করতে পারে। অনেক সময় এ ধরনের ছবি বা ভিডিও দেখে একেবারেই বাস্তব বলে মনে হয়। তারকাদের ভুয়া পর্ন চলচ্চিত্র তৈরিতে এ প্রযুক্তি ব্যবহারের নজির রয়েছে। সাধারণ কোনো মানুষের ছবিকে নগ্ন ছবির রূপ দিতে এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহারের ব্যাপারটি একদম নতুন বলে উল্লেখ করেছেন সেনসিটির প্রধান নির্বাহী গিয়োর্গো পাট্রিনি।

“ভুক্তভোগী হওয়ার জন্য পাবলিক ছবি সমৃদ্ধ সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট থাকাটাই যথেষ্ট।” – সতর্ক করেছেন পাট্রিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ওই বটটি টেলিগ্রামের ব্যক্তিগত মেসেজ চ্যানেলের ভেতরে রয়েছে। ব্যবহারকারীরা বটকে নারীর ছবি পাঠায় এবং তা পাওয়ার পর মিনিটখানেক সময় নিয়ে ডিজিটাল পন্থায় কাপড় সরিয়ে নগ্ন ছবি ফেরত দেয় এটি। এজন্য কোনো অর্থ নেয় না বটটি।

ডিপফেইক বটটির পরিচালক ‘পি’ নামে পরিচিত। বটের কাজকর্ম প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমি এতো ভাবি না। এটি এমন একটি বিনোদন যাতে কোনো সহিংসতা নেই। কেউ কাউকে এটির মাধ্যমে হুমকি দিতে পারবেন না, কারণ  এর গুণগত মান বাস্তবসম্পন্ন নয়।”

পি আরও বলেছেন, “আমরা নাবালকদের ছবি দেখলে ওই ব্যবহারকারীকে স্থায়ীভাবে ব্লক করে দেই।” এ ধরনের ছবি শেয়ারের দায়ভারও নেননি তিনি। তার মতে, এরকম ছবি শেয়ার হবে কি না সেটি যে ছবি তৈরি করছে তার উপর বর্তায়।

এটি যে ক্ষতিকর, তা ‘পি’ কোনোভাবেই মানতে রাজি নন। তার ভাষ্যে, “বিশ্বে যুদ্ধ চলছে, রোগবালাই রয়েছে, এবং আরও অনেক ক্ষতিকর জিনিস রয়েছে।” শীঘ্রই সব ছবি তিনি মুছে দেবেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।

অন্যদিকে, টেলিগ্রাম এখনও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

গত বছর এরকম ধারার এক অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। ধারণা করা হয়, ওই অ্যাপটির ক্র্যাকড সংস্করণ এখনও ইন্টারনেটে রয়েছে।