বিচারকের নির্দেশে ফের রেহাই পেলো টিকটক

উইচ্যাটের পর এবার টিকটকের নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে ঠেকালেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের এক বিচারক।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2020, 01:33 PM
Updated : 28 Sept 2020, 01:33 PM

মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিকটককে যে এক সপ্তাহের সময় বাড়িয়ে দিয়েছিল, তা পার হয়ে গেছে শনিবারেই। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুসারে অ্যাপ স্টোর থেকে টিকটককে রোববার মুছে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মার্কিন এক বিচারকের কল্যাণে এ যাত্রাও রেহাই পেলো টিকটক।

মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক কার্ল নিকোলাস টিকটক মালিক বাইটড্যান্সের আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রাথমিক এক নিষেধাজ্ঞা আবেদনে অনুমোদন দিয়েছেন যা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ স্টোর থেকে টিকটককে মুছে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে। রয়টার্স জানিয়েছে, রোববার মধ্য দুপুর (১১.৫৯ মিনিট) নাগাদ টিকটকের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

তবে, টিকটকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করেননি তিনি। এ বছরের নভেম্বরের ১২ তারিখে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরও ভারী নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। টিকটকের ভাষ্যে, ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক অ্যাপ ব্যবহার অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

এর আগে মার্কিন বিচারক কার্ল নিকোলস জানিয়েছিলেন, টিকটকের প্রাথমিক আদেশের প্রেক্ষিতে সরকারকে অবশ্যই নথি জমা দিতে হবে, বা শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটার মধ্যে নিষেধাজ্ঞার আদেশ বিলম্বিত করতে হবে।

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন কর্তাব্যক্তিদের উদ্বেগ, চীনের কাছে চলে যেতে পারে মার্কিন টিকটক ব্যবহারকারীদের ডেটা। টিকটক নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে সেটাই ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন তারা।

টিকটক প্রশ্নে মোট দুটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। প্রথমটির মাধ্যমে টিকটক নিষিদ্ধ করেছেন তিনি, আর দ্বিতীয়টির মাধ্যমে টিকটক মালিক বাইটড্যান্সকে প্রতিষ্ঠানটির যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসা বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন।

টিকটকের মার্কিন ব্যবসা কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিল মাইক্রোসফট, টুইটার, ওরাকল, ওয়ালমার্টের মতো প্রতিষ্ঠান। এর মধ্য থেকে ওরাকলের সঙ্গে অংশীদারি চুক্তিতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে টিকটক।

প্রস্তাবিত চুক্তি বলছে, মার্কিন টিকটক ব্যবহারকারীদের ডেটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেবে ওরাকল, প্রয়োজনে সোর্স কোডও ঘেঁটে দেখতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য মালিকানা স্বত্ত্ব পাবে ওরাকল ও ওয়ালমার্ট।

চুক্তিটির ব্যাপারে পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, এতে তার “আশীর্বাদ” রয়েছে। এ কথার পরপরই টিকটককে সাত দিন সময় বাড়িয়ে দিয়েছিল মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

উল্লেখ্য, নতুন টিকটকের মার্কিন ব্যবসা বিক্রিতে অনুমোদন লাগবে চীনেরও।

পুরো ব্যাপারটি নিয়ে খুশি হতে পারেনি চীন। সে প্রমাণ মিলেছে দেশটির সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়র বরাতে।

চীনের রাষ্ট্র সমর্থিত ইংরেজি দৈনিক চায়না ডেইলির সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছিল, “হয়রানি ও চাঁদাবাজির” ভিত্তিতে সম্পন্ন বাইটড্যান্স-ওরাকল ও ওয়ালমার্টের “অস্বচ্ছ্ব ও অন্যায্য চুক্তি”তে অনুমোদন দেওয়ার কোনো কারণ নেই চীনের।

পৃথক এক সম্পাদকীয়তে চুক্তিটিকে “চাঁদাবাজি” আখ্যা দিয়ে চীনের ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির পিপল’স ডেইলি’র অধীনে প্রকাশিত গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, “বড় দেশ হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাকমেইল সহ্য করবে না, উচ্চ-প্রযুক্তির চীনা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণও চাঁদাবাজদের হাতে দেবে না।”

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলেছে, নভেম্বরের ১২ তারিখের আগে চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে টিকটকের কার্যকারিতা কমানো হতে পারে। ইন্টারনেট কাঠামোগত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হতে পারে, টিকটক কনটেন্টের স্থানান্তর গতি কমাতে। এতে করে ধীরগতির হয়ে যাবে টিকটক, এমনকি বিভ্রাটের কবলেও পড়তে পারে সেবাটি।