ট্রাম্পের ‘আশীর্বাদে’ সময় বাড়লো টিকটকের

‘টিকটক-ওরাকল’ চুক্তিতে সমর্থন রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যের পরপরই টিকটককে বাড়তি সময় দিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2020, 10:07 AM
Updated : 20 Sept 2020, 10:07 AM

পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুসারে, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ স্টোর থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল টিকটককে। কিন্তু শনিবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, টিকটক এবং ওরাকল ও ওয়ালমার্টের মধ্যে চুক্তিতে “আশীর্বাদ” রয়েছে তার। এর পরপরই টিকটক নিষিদ্ধের সময়সীমা সেপ্টেম্বরের ২৭ তারিখ পর্যন্ত পিছিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এর আগে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন কর্তাব্যক্তিদের উদ্বেগ, চীনের কাছে চলে যেতে পারে মার্কিন টিকটক ব্যবহারকারীদের ডেটা। টিকটক নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে সেটাই ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন তারা।

টিকটক প্রশ্নে মোট দুটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। প্রথমটির মাধ্যমে টিকটক নিষিদ্ধ করেছেন তিনি, আর দ্বিতীয়টির মাধ্যমে টিকটক মালিক বাইটড্যান্সকে প্রতিষ্ঠানটির যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসা বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন।

টিকটকের মার্কিন ব্যবসা কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিল মাইক্রোসফট, টুইটার, ওরাকল, ওয়ালমার্টের মতো প্রতিষ্ঠান। এর মধ্য থেকে ওরাকলের সঙ্গে অংশীদারি চুক্তিতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে টিকটক।

প্রস্তাবিত চুক্তিতে, ‘টিকটক গ্লোবাল’ নামে নতুন বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় থাকবে যুক্তরাষ্ট্রে। ধারণা করা হচ্ছে, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যেই প্রতিষ্ঠিত হবে প্রধান কার্যালয়টি। প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ পরিচালকই থাকবেন মার্কিনী। এ ছাড়াও একজন মার্কিন প্রধান নির্বাহী ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞও থাকবেন টিকটক বোর্ডে।

প্রস্তাবিত চুক্তি আরও বলছে, মার্কিন টিকটক ব্যবহারকারীদের ডেটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেবে ওরাকল, প্রয়োজনে সোর্স কোডও ঘেঁটে দেখতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য মালিকানা স্বত্ত্ব পাবে ওরাকল ও ওয়ালমার্ট।

“আমি চুক্তিটিকে আমার আশীর্বাদ দিয়েছি। নীতিগতভাবে চুক্তিটিতে আমার সম্মতি রয়েছে।” –নর্থ ক্যারোলাইনার এক নির্বাচনী সমাবেশে এ কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি আরও জানিয়েছেন, চুক্তির কারণে অ্যাপটির আনুমানিক দশ কোটি মার্কিন ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, “নিরাপত্তা শতভাগ থাকবে।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুমোদনকে সাধুবাদ জানিয়েছে টিকটক ও বাইটড্যান্স। তবে, এখনও প্রতিষ্ঠানটির চীনা অনুমোদন পাওয়া বাকি রয়েছে। শনিবার পোস্ট করা এক ভিডিওতে টিকটকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী ভ্যানেসা পাপাস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে “থাকতে এসেছি” আমরা।

আগেই ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রে রোববার থেকে নিষিদ্ধ হচ্ছে টিকটক। কিন্তু ট্রাম্পের মৌখিক অনুমোদন আসার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “সাম্প্রতিক ইতিবাচকতার মুখে” আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে সময়সীমা।

বর্তমানে খুব একটা ভালো সম্পর্কে নেই বেইজিং ও ওয়াশিংটন। টিকটক, হুয়াওয়ে এবং উইচ্যাটকে কেন্দ্র করে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে দেশ দুটির। সম্পর্ক অবনতিতে ভূমিকা রেখেছে হংকং বিক্ষোভ, করোনাভাইরাস মহামারী সামাল দেওয়ার মতো বিষয়গুলোও।