অবৈধভাবে তথ্য সংগ্রহ, নজরদারি নিষিদ্ধ করলো চীন

নিজ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য সম্প্রতি নতুন ‘বৈশ্বিক নির্দেশিকা’ উন্মোচন করেছে চীন। নতুন উদ্যোগে অবৈধভাবে মানুষের ডেটা সংগ্রহ করা ও বড়-মাপের নজরদারি চালানোকে আইনবিরুদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2020, 12:04 PM
Updated : 8 Sept 2020, 12:04 PM

কোটি কোটি ব্যবহারকারীর ডেটা নিয়ে চীনা অ্যাপ টিকটিক কী করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন উদ্বেগের টানাপোড়েনের মধ্যে এই নীতিমালা ঘোষণা করলো চীন।

নতুন নীতিমালার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের দিকেও আঙুল তুলেছে চীন। দেশটি জানিয়েছে, তাদের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে ‘নগ্নভাবে হয়রানি’ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রও অনেকটা একই ধরনের ডেটা গোপনতা প্রচেষ্টার ব্যাপারে জানিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সে ডেটা গোপনতা প্রচেষ্টার নাম ছিলো ‘দ্য ক্লিন নেটওয়ার্ক’।

বর্তমানে খুব একটা ভালো সম্পর্কে নেই বেইজিং ও ওয়াশিংটন। টিকটক, হুয়াওয়ে এবং উইচ্যাটকে কেন্দ্র করে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে দেশ দুটির। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসন চেষ্টা করেছে নিরাপত্তা উদ্বেগের দোহাই দিয়ে হুয়াওয়ের মতো চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং টিকটক ও উইচ্যাটের মতো চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করতে।  

এবার সে ব্যাপারে মুখ খুলেছে চীন। দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ওয়্যাং ই বলেছেন, “কিছু কিছু দেশ হিংস্রভাবে একচেটিয়া আচরণ দেখাচ্ছে, অন্য দেশের উপর ময়লা পানি ফেলছে ‘পরিষ্কারকরণের’ নামে এবং নিরাপত্তার নামে নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক শিকারে নেমেছে।

“এটি নগ্ন হয়রানি, এর বিরোধিতা করতে হবে এবং একে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।” – যোগ করেছেন ওয়্যাং।

মঙ্গলবারে ওয়াং আরও জানিয়েছেন, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে ‘ব্যাকডোর’ না বানানোর আহবান জানানো হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়। ব্যাকডোর মূলত প্রতিষ্ঠানের ডেটা, নেটওয়ার্ক ও সেবায় প্রবেশের গোপন পথ। চীনা টেলিকম সেবাদাতা হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে অনেকবার ‘ব্যাকডোর’ রাখার অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিজ দেশের কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে অন্য দেশে বড় মাপের নজরদারি চালাতে বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধভাবে বিদেশী নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করতে মানা করেছে চীনের নতুন বৈশ্বিক ডেটা নিরাপত্তা পরিকল্পনা।

অগাস্টে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ক্লিন নেটওয়ার্ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে চীনা টেলিকম প্রতিষ্ঠান, অ্যাপস ও ক্লাউড সেবাদাতাকে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের ইন্টারনেট কাঠামো থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “স্বাধীনতাকে ভালোবাসে এমন রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্লিন নেটওয়ার্কে যোগ দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।”

ডেটা নিরাপত্তা বিষয়ে চীনের সাম্প্রতিক উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এক আইন বিশেষজ্ঞ। আইনি সংস্থা ‘ডিএলএ পাইপার’ এর প্রযুক্তি ও যোগাযোগ আইনজীবি ক্যারোলাইন বিগ বলেছেন, “চীনের বেশ শক্তিশালী ডেটা নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এর ধারে কাছেও নেই এবং এই মাত্রার কোনো রাষ্ট্রীয় আইনও নেই দেশটির। চীনের এ ঘোষণাটি আদতে গ্রাহকদের সুরক্ষা এবং ডেটা অপব্যবহার বন্ধ করার ব্যবহারিক পদ্ধতি।”