লকডাউনে কোটি ভিডিও মুছে দিয়েছে ইউটিউব

আগের তুলনায় লকডাউনের সময়টিতে সবচেয়ে বেশি ভিডিও সরিয়েছে ইউটিউব। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্ল্যাটফর্মটি থেকে বাদ পড়েছে এক কোটি দশ লাখ ভিডিও।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2020, 01:46 PM
Updated : 27 August 2020, 01:46 PM

বছরের শুরুতেও এ সংখ্যা ছিল ৬০ লাখ। ইউটিউব বলছে, লকডাউনের সময়ে স্বল্পসংখ্যক কর্মী থাকায় নিজেদের স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার “অতিরিক্ত প্রয়োগ” করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। বিবিসি’র প্রতিবেদন বলছে, ইউটিউব স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া ব্যবহারে ভুলের কারণেও অনেক ভিডিও বাদ পড়ে থাকতে পারে।

সাধারণত, “ক্ষতিকর কনটেন্ট” ব্যক্তি পর্যালোচকের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু কোভিড-১৯ বাস্তবতায় সাধারণের চেয়ে স্বল্প পর্যালোচক কাজ করেছেন।

“একটি উপায় হতে পারতো আমাদের প্রযুক্তিকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের প্রয়োগকে যতটুকু পর্যালোচনা সক্ষমতা রয়েছে, তার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।” – এক ব্লগ পোস্টে লিখেছে প্রতিষ্ঠানটি।

অন্য আরেকটি উপায় হচ্ছে, “বিস্তর একটি জাল তৈরি করা যা সম্ভাব্য ক্ষতিকর কনটেন্টের হাত থেকে কমিউনিটিকে বাঁচাতে দ্রুত তা সরিয়ে দেবে”। দ্বিতীয় উপায়টিই বেছে নিয়েছিল ইউটিউব।

এর নেতিবাচক দিকটি হচ্ছে- নীতিমালা লঙ্ঘন না করা স্বত্ত্বেও অনেক ভিডিও-কে ভুলবশত মুছে দিয়েছিল স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া। ফলে কনটেন্ট নির্মাতাদের আপিলের সংখ্যাও বেড়েছে। গতানুগতিক এক লাখ ৬৫ হাজার ৯৪১টি আপিলের জায়গায় মোট আপিল এসেছে তিন লাখ ২৫ হাজার চারশ’ ৩৯টি।

ব্যাপারটি অবশ্য ইউটিউবের কাছে অপ্রত্যাশিত নয়। মার্চেই কনটেন্ট নির্মাতাদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিল ইউটিউব, বলেছিল, “ভিডিও সরানোর সংখ্যা বাড়তে পারে”।

সাধারণত স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় কোনো ভিডিও নামিয়ে নেওয়ার পর, ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে আপিলের মাধ্যমে ওই ভিডিও আবারও প্ল্যাটফর্মে ফিরে আসে। এ হিসেবটিই দ্বিগুণ হয়েছে মহামারীর সময়ে। আপিলের মাধ্যমে নামিয়ে নেওয়া ভিডিও’র ৫০ শতাংশ আবারও ফিরতে পারছে প্ল্যাটফর্মে।

লকডাউনের সময়টিতে ‘উগ্রবাদী সহিংসতা’ এবং ‘শিশু নিপীড়নের’ মতো কঠোর ফিল্টার যোগ করেছিল ইউটিউব। এ কারণেও ভিডিও মুছে দেওয়ার সংখ্যাও তিনগুণ বেড়েছিল।

প্রাথমিকভাবে ভিডিও নামিয়ে নেওয়ার জন্য নিজেদের স্বয়ংক্রিয় ফিচারের উপর নির্ভর করেছে প্ল্যাটফর্মটি। এপ্রিল ও জুনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া মোট ভিডিও নামিয়েছে এক কোটি আট লাখ ৪৯ হাজার ৬৩৪টি।

ভিডিও নামিয়ে নেওয়ার অনুরোধ এসেছে অলাভজনক সংস্থা ও সরকারী সংস্থার মতো ‘নির্ভরযোগ্য ফ্ল্যাগার’দের কাছ থেকেও। সাধারণ ব্যবহারকারীরাও অনেক ভিডিও নামিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করেছেন, এক কোটি ৫৫ লাখ অনুরোধ এসেছে শুধু সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকেই।

এর মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক ভিডিওই নামিয়েছে ইউটিউব।

নামিয়ে নেওয়া এক তৃতীয়াংশ ভিডিও’র ভিউ দশ বা তার চেয়ে কম। 

লকডাউনের তিন মাসের মধ্যে বিশ লাখ চ্যানেলও মুছে দিয়েছে ভিডিও শেয়ারিং এ প্ল্যাটফর্মটি। এ সংখ্যাটিও গত প্রান্তিকের তুলনায় বেড়েছে। এগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশই স্প্যাম, স্ক্যাম ও ভুল পথে পরিচালিত করছিল ইউটিউব ব্যবহারকারীদের।