অতঃপর মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে টিকটক

মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে টিকটক। প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগ, ‘জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা’ ব্যবহার করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করায় যথাযথ প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে টিকটক।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2020, 09:16 AM
Updated : 25 August 2020, 09:16 AM

মামলার অভিযোগ বলছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের পরিচালনা বন্ধ হয়ে যাবে। ‘ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট অফ ক্যালিফোর্নিয়ায়’ টিকটক সোমবার মামলাটি দায়ের করেছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, টিকটকের কারণ ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি’ তৈরি হচ্ছে। মার্কিন আইন প্রণেতারাও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, টিকটকের চীনা মালিক বাইটড্যান্সের কাছে মার্কিন ব্যবহারকারীদের ডেটা চেয়ে বসতে পারে চীন সরকার। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তারা কেউই। পুরো ব্যাপারটিকেই ‘নিরাপত্তা শঙ্কা’ হিসেবে নিয়েছে দেশটি।

টিকটক প্রসঙ্গে দুটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প, প্রথমটিতে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক, উইচ্যাটসহ অন্যান্য আরও বেশ কিছু চীনা অ্যাপকে মার্কিন ব্যবসা গুটানোর জন্য ৪৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশে টিকটকের মার্কিন ব্যবসা অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেওয়া জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টিকটক মামলা করেছে প্রথম নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে।

“আমরা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করাকে হালকাভাবে নেই না। তারপরও আমাদের মনে হয়েছে, আমাদের অধিকার, কর্মীদের অধিকার, এবং আমাদের কমিউনিটির অধিকার সুরক্ষায় আইনী পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া হাতে কোনো পথও খোলা নেই।” – মামলায় বলেছে টিকটক।

“যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে আমাদের এক হাজার পাঁচশ’রও বেশি কর্মী রয়েছেন যারা এই প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে অন্তর থেকে কাজ করছেন প্রতিদিন।” – আগামী বছরগুলোতে আটটি অঙ্গরাজ্যে দশ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে এ কথা বলেছে সোশাল ভিডিও অ্যাপটি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের তিক্ততা বেড়েছে। ভৌগলিক রাজনীতি, প্রযুক্তি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চীনের সঙ্গে বিতণ্ডতা বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের। সামনে মার্কিন নির্বাচন, চীনের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন এমনটা প্রমাণ করতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।      

আইনি প্রতিষ্ঠান ‘অ্যালসটন অ্যান্ড বার্ড’-এর অংশীদার জেসন এম. ওয়েটে বলছেন, আদালত সম্ভবত প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আগ্রহী হবে না, বিশেষ করে যেখানে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কারণ হিসেবে এসেছে। কিন্তু আদালত যদি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় দিয়েই ফেলে তাহলে এটি আসলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাতে নতুন করে নির্ধারণ করতে পারে।

টিকটক আরও বলছে, তাদের প্রধান নির্বাহী, প্রধান আইনী পরামর্শক এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ সব শীর্ষ কর্মকর্তাই যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই রয়েছেন, চীনা আইনের অধীনে নেই। এমনকি টিকটকের ‘কনটেন্ট মডারেশনের’ কাজে কর্মরত দলটিও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক, স্বাধীনভাবে চীনের বাইরে থেকে নিজ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এবং তাদের ওপর চীনের কর্তৃত্ব নেই।

মার্কিন বিচার বিভাগ টিকটকের মামলা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

টিকটকের মার্কিন ব্যবসা কিনতে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আলোচনায় বসেছে মাইক্রোসফট। সোশাল ভিডিও অ্যাপটির ব্যবসা কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আরেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান ওরাকল, গণমাধ্যমে টুইটারের আগ্রহী হওয়ার খবর-ও এসেছিল।