মিয়ানমারে অপরাধের প্রমাণ ‘শেয়ার করেনি’ ফেইসবুক

মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া “গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের” প্রমাণ শেয়ার করেনি ফেইসবুক, এমনটাই ভাষ্য জাতিসংঘের তদন্তকারী দল প্রধানের। সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচারসহ দেশটিতে সংঘটিত অন্যায়ের তদন্তে সহায়তার অঙ্গীকার করলেও প্রমাণ শেয়ার করেনি সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2020, 12:26 PM
Updated : 12 August 2020, 12:26 PM

ইন্ডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম অন মিয়ানমারের (আইআইএমএম) প্রধান নিকোলাস কুয়োমিয়ান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “গুরুতর এই আন্তর্জাতিক অপরাধের অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং পরীক্ষামূলক উপাদান” রয়েছে ফেইসবুকের কাছে। কিন্তু বছর ধরে আলোচনার পরও তারা এগুলো শেয়ার করেনি।

ফেইসবুকের কাছে আইআইএমএম কী ধরনের উপাদান চেয়েছে, সে বিয়য়ে জানতে চাইলে বিস্তারিত জানায়নি তদন্তকারী দলটি।

এদিকে ফেইসবুক দাবি করেছে তারা আইআইএমএম-কে সহায়তা করছে।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর হামলা এবং সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশে পালাতে বাধ্য করায় ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে (আইসিজি) গণহত্যার অভিযোগের মুখে পড়েছে মিয়ানমার।

গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। দেশটি দাবি করেছে, পুলিশ পোস্টে জঙ্গী হামলার প্রতিবাদে বৈধ সেনা অভিযান চালিয়েছে স্বশস্ত্র বাহিনী।

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ফেইসবুক, যা এই সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে।

জবাবে ফেইসবুক জানিয়েছে, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বন্ধ করতে তারা কাজ করছে। পাশাপাশি জেষ্ঠ্য সেনা কর্মাকর্তাসহ বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে, ডেটা মজুদ রেখেছে তারা।

ভবিষ্যতের বিচার কাজে ব্যবহারের লক্ষ্যে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক অপরাধ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে ২০১৮ সালে আইআইএমএম গঠন করে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল।

সোমবার কুয়োমিয়ান বলেন, “দূর্ভাগ্যজনকভাবে এখন পর্যন্ত ফেইসবুকের কাছ থেকে কোনো উপাদান পায়নি মেকানিজম, তবে আমাদের আলোচনা চলছে এবং আমরা আশাবাদী শেষ পর্যন্ত মেকানিজম গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাবে।”

গত সপ্তাহেই মিয়ানমারের গণহত্যার মামলাটি হেইগের আইসিজিতে আনতে গাম্বিয়ার একটি প্রস্তাব বাতিলের চেষ্টা করেছে ফেইসবুক। এরপরই এমন মন্তব্য করছেন কুয়োমিয়ান। এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্য ছিলো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং পুলিশ সদস্যদের পোস্ট এবং যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহ করা।

সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি মার্কিন আদালতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে ওয়াশিংটন এই আবেদন নাকচ করে। এতে মার্কিন আইন ভাঙ্গা হবে বলেও দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে ফেইসবুক জানিয়েছে, তারা গাম্বিয়ার অনুরোধে সাড়া না দিলেও আইআইএমএম-এর সঙ্গে কাজ করছে।