যুক্তরাষ্ট্রের উইচ্যাট নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে কোটি ‘চীনা’

চীনা মেসেজিং অ্যাপ ‘উইচ্যাট’ নিষিদ্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রভাব পড়বে দেশটিতে বসবাসরত চীনা বংশোদ্ভুতদের জীবনে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে তাদের।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2020, 08:44 AM
Updated : 8 August 2020, 08:44 AM

যুক্তরাষ্ট্রে মূলত উইচ্যাট ব্যবহার করেন চীনা  শিক্ষার্থী ও প্রবাসীরা। পাশাপািশ চীনে ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে এমন লোকজন ও  চীনা বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিকরা। যুক্তরাষ্ট্রও যে চীনের মতো মেসেজিং অ্যাপ নিষিদ্ধ করে দেবে তা মানতে অনেকেরই কষ্ট হচ্ছে বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

চীনে মার্কিন অ্যাপ ফেইসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং রাশিয়ান নির্মাতাদের তৈরি জার্মানি ভিত্তিক অ্যাপ টেলিগ্রাম নিষিদ্ধ। দেশটির গ্রেট ফায়ারওয়ালের চোখ এড়িয়ে অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে ভিপিএন ব্যবহার করতে হয়।

“আমি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলাম তথ্যে অবাধ প্রবেশাধিকার পেতে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমি ট্রাম্পের শিকার হয়েছি “ – বলেছেন টিংরু নান নামের ইউনিভার্সিটি অফ ডেলওয়ারের চীনা স্নাতক শিক্ষার্থী।

তিনি আরও যোগ করেছেন, “আমি এখন সবসময়ই ভয়ে থাকি যে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ থাকবে না।”

অনেক প্রবাসী এরই মধ্যে বিকল্প পথ খুঁজছেন। চীনে এখনও রয়েছে এমন অ্যাপে অনেকে নিজেদের যোগাযোগ ব্যাকআপ রাখা শুরু করেছেন, এরকম অ্যাপের মধ্যে রয়েছে মাইক্রোসফটের স্কাইপ ও লিংকডইন। অন্যান্যরা ভিপিএন দিয়ে চীনের গ্রেট ফায়ারওয়ালের চোখে ফাঁকি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

উল্লেখ্য, ভিপিএনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পরিচয় পাবলিক নেটওয়ার্কে গোপন থাকে।

“চীনে জিমেইল ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের জন্য ভিপিএন ব্যবহারে প্রয়োজন পড়তো। কথনও ভাবিনি যুক্তরাষ্ট্রেও আমাকে একই কাজ করতে হবে”। - বলেছেন ফিলাডেলফিয়া ভিত্তিক প্রযুক্তি কর্মী তাও লেই।

যোগাযোগের সমস্যার ব্যাপারে জানিয়েছেন অ্যালিসন চ্যান নামের আরেক চীনা মার্কিন বাসিন্দা। তিনি বলেছেন, “আমি নিরাপত্তা তর্কের বিষয়টি বুঝতে পারছি। কিন্তু আমার জন্য পরিবারের সঙ্গে কথা বলাটা বেশি জরুরি। আমার বাবা-মা চীনে বসবাসরত দাদা-দাদীর শারীরিক অবস্থার বিষয়টি নিয়ে বেশি চিন্তিত এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগে প্রধান টু্লটিই উইচ্যাট।”

অনেক প্রবাসী আবার চীন যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বের ব্যাপারটি নিয়েই চিন্তিত। “বাবা মা সংবাদ দেখে আমার চেয়েও বেশি উদ্বিগ্ন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে চীনে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে ভাবার কথাও বলেছেন আমাকে।” – বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে ‘ইউজার এক্সপেরিয়েন্স’ নিয়ে কর্মরত গুয়াংডং চীন থেকে আসা ইউন লি।

বিশ্লেষণী সংস্থা অ্যাপটোপিয়া’র তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ লাখের চেয়েও অনেক বেশি মানুষের উপর প্রভাব পড়বে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিদিন গড়ে এক কোটি ৯০ লাখ ব্যবহারকারী উইচ্যাট ব্যবহার করেন।