শিক্ষার্থী ভিসা প্রশ্নে আদালতে এমআইটি-হার্ভার্ডের সমর্থনে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নিয়মে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে অনেক বিদেশী শিক্ষার্থীকে। কিন্তু সে নিয়মের বিরোধিতা করে ফেডারেল আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে দেশটির দুই শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2020, 10:28 AM
Updated : 14 July 2020, 03:07 PM

মার্কিন 'হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ' এবং 'ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস প্রয়োগ বিভাগে'র বিরুদ্ধে দায়ের করা ওই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমর্থনে এবার আদালতে হাজির হয়েছে শীর্ষ মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। -- খবর বিজনেস ইনসাইডারের।

বিশেষায়িত জ্ঞানের প্রয়োজন হয় এমন মামলার বেলায় আদালত সাধারণত কেনো বিশেষজ্ঞকে ‘অ্যামিকাস কিউরি’ হিসেবে নিয়োগ দেন। ওই বিশেষজ্ঞ বাদী বা বিবাদীর পক্ষ না নিয়ে আদালতকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। লাতিন ভাষায় অ্যামিকাস কিউরি শব্দদ্বয়ের অর্থ আদালতের বন্ধু।

হার্ভার্ড-এমআইটির মামলায় মার্কিন প্রযুক্তি প্র‌তিষ্ঠনগুলো স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালতে অ্যামিকাস ব্রিফ দাখিল করেছে।

ফেডারেল আদালতে ওই নিয়ম রদ করার অনুরোধ জানিয়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ওই নিয়মের কারণে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে ব্যবসায়। আপত্তি জানানো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফেইসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট, স্পটিফাই, পেপাল এবং আরও ডজনখানেকেরও বেশি প্রতিষ্ঠান।

ট্রাম্প প্রশাসনের ওই নিয়মে অনলাইনে ক্লাস করলেই চলবে এমন কোর্সের শিক্ষাথীদেরকে নিজ নিজ দেশে ফিরতে হতে পারে। হার্ভার্ড এবং এমআইটি গত সপ্তাহেই এমন নিয়মের রদ চেয়েছে ফেডারেল বিচারকের কাছে। আবেদনে বিশ্ববিদ্যালয় দুটি জানিয়েছে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ নিয়ম প্রয়োগের বেলায় এর অর্থনৈতিক প্রভাবের কথা বিবেচনায় আনেনি। এ ছাড়াও অন্যান্য আরও ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয় ওই নিয়মের প্রশ্নে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।

এমআইটি ও হার্ভার্ডের ওই মামলার সমর্থনে আদালতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ফেইসবুক, গুগল, স্পটিফাই এবং আরও অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ওই সিদ্ধান্ত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য মেধাবীদের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতে দেওয়া বক্তব্যে বলেছে - “আমেরিকার ভবিষ্যত প্রতিযোগিতামুখী চরিত্র নির্ভর করছে বিদেশী মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ ও ধরে রাখার ওপর। যারা বিদেশী শিক্ষার্থী হিসেবে পড়তে আসেন তারাও পরবর্তী প্রজন্মের উদ্ভাবকদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয়।”

মাইক্রোসফট প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ সোমবার এক টুইটে বলেছেন, বিদেশী শিক্ষার্থীরা যাতে “মহামারীর সময়ে নমনীয়তার মধ্যে থাকে” সেজন্যই অ্যামিকাস ব্রিফে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। মাইক্রোসফট মালিকানাধীন লিংকডইন এবং গিটহাবও ওই ব্রিফে স্বাক্ষর করেছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্রধানরাও ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন আইন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন, বিশেষ করে বিদেশী শিক্ষার্থীদের প্রাসঙ্গিক নীতিমালা নিয়ে। ট্রাম্পের মুসলিম অভিবাসন আইনের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন ফেইসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গ, যিনি সাধারণত রাজনৈতিক বিবৃতি এড়িয়ে যান। ওই আইনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন গুগল প্রধান নির্বাহী সুন্দার পিচাইও।