ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে ৬ পুরস্কারের দুটি বাংলাদেশের

আন্তর্জাতিক ‘ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২০’ প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মত দুটি পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2020, 03:16 PM
Updated : 6 July 2020, 03:16 PM

হংকংয়ে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের ১২টি দল অংশ নিয়েছিল। চূড়ান্ত পর্বে সিলভার মেডেল জেতে ‘টিম ডিজিটাল ইনোভেশন। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ডিইউ নিমবাস’ বেস্ট প্রোটোটাইপ বিভাগে জয়ী হয়।

এর মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার মোট ছয়টি পুরস্কারের মধ্যে দুটি জিতে নেয় বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা।

তাদের মধ্যে সিলভার মেডেল জয়ী দলের সদস্যরা হলেন কামরুল হাসান, রেদোয়ান খান অনিক, নওশাদ হোসেইন এবং কামরুল হাসান। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তা দেওয়ার কাজ বিকেন্দ্রীকরণের ওপর একটি প্রকল্প তৈরি করেছিলেন তারা।

আর ডিউ নিমবাস দলের সদস্য তাহলীল, ইশতিয়াক জাহিদ, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর একটি প্রকল্প তৈরি করেন।

ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধানে প্রকল্প তৈরিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ যোগাতে ২০১৭ সাল থেকে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৬০টি দল এবারের আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে।

ব্লকচেইন হল এমন এক প্রযুক্তি, যাতে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা নিরাপদে এবং এনক্রিপ্টেড অবস্থায় মজুদ রাখা হয়। ওই তথ্য যাতে অননুমোদিতভাবে বদলানো না যায় তার নিশ্চয়তা দেয় এই প্রযুক্তি।

ব্যাংকিং, সরবরাহ চেইন, পাবলিক রেজিস্ট্রি এবং লেনদেন নির্ভর ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে ব্লকচেইন প্রযুক্তি।

আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জয় উপলক্ষে সোমবার এক ভার্চুয়াল আয়োজনে বিজয়ী দলের সদস্যদের অভিনন্দন জানানো হয়।

ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, “আমি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলাম। আমি জানি বাইরের দেশে একজন ছেলে-মেয়েকে কত ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। সে হিসেবে আমরা দিতে পারি না। শুধুমাত্র আমরা যদি উৎসাহ দিই, তাহলেও তারা অনেক দূর এগিয়ে গিয়ে আমাদের অনেক বড় উপহার দেয়। এটা আজ আবার প্রমাণিত হল।”

জাফর ইকবাল বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো দিয়েছিল, সেখানে ব্লকচেইন শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছিল। আমাদের দেশের কিছু তরুণ সেই জিনিসটা অর্জন করে নিয়ে এসেছে। আমি আশা করব সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগকে সহায়তা করা হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের যদি একটু সুযোগ দিতে পারি, তাহলে তারা দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।”

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে বলেন, “প্রথমবারের মত আমরা ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে জয়ী হয়েছি। বর্তমানে প্রতিদিনই দুঃসংবাদ পাচ্ছি। এর মধ্যে একটা আনন্দের সংবাদ যারা আনল, তাদের অভিনন্দন।”     

বিজয়ী দলগুলো যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছে সেগুলোকে সরকারের কাজে লাগাতে পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও ব্লকচেইন অলিম্পিয়াডে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।

“যারা প্রটোটাইপ পুরস্কার পেয়েছে তাদের সরাসরি ভূমি মন্ত্রণারয়ের সাথে কাজ করার সুযোগ করে দেব। ভূমির রেকর্ড নিরাপদ রাখা, প্রতারণা করতে যাতে না পারে সে ব্যাপারে প্রযুক্তিবিদদের আমন্ত্রণ। যাতে তারা কাজ করতে পারে সেজন্য আমরা পেট্রোনাইজ করব।”

ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ এন করিম ভার্চুয়াল এই আয়োজনের সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম কায়কোবাদ, বেসিসের সভাপতি আলমাস কবির অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।