সঙ্কটে দ্রুত অ্যাপ বানাবেন? মাথায় রাখুন তিন পরামর্শ

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সব খাতের কর্মীরা। এদিক থেকে পিছিয়ে নেই সফটওয়্যার ডেভেলপাররাও। সঙ্কট মোকাবেলায় দ্রুত অ্যাপ বানাতে কাজ করছেন এদের অনেকেই।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2020, 06:32 PM
Updated : 10 June 2020, 06:32 PM

মানুষের সহায়তায় অ্যাপ বানানো তেমনই এক ডেভেলপার মিশেল স্কামেনে। লকডাউনের মধ্যে যখন একদিকে এন৯৫ মাস্ক এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের সঙ্কট চলছে তখন কিছু সহকর্মীর সঙ্গে মিলে একটি অনলাইন বিনিময় সাইট বানিয়েছেন স্কামেনে।

সাইটটির মাধ্যমে যেকোনো জায়গা থেকে একে অপরের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পণ্য শেয়ার এবং সরবরাহের সুযোগ পাবেন গ্রাহক। হাজারো মাস্ক, গাউন এবং অন্যান্য পণ্যের অনুরোধ এবং অঙ্গীকার এসেছে সাইটটির মাধ্যমে-- খবর মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস-এর।

একই সময়ে, এলাকার মুদি দোকানে পণ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানতে গ্রাহককে সহায়তা করতে ‘ডেইলি গ্রসারি স্ট্যাটাস’ নামের একটি ওয়েবভিত্তিক অ্যাপ বানিয়েছেন স্কট স্পেনডলিনি নামের আরেক ডেভেলপার। মাত্র দুই দিনে এই অ্যাপটি বানিয়েছেন স্পেনডলিনি।

সঙ্কটের সময় সবচেয়ে জরুরি বিষয়টি হলো, কোনো সমাধানের বাস্তব রূপটি যত দ্রুত সম্ভব সামনে আনা। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অ্যাপভিত্তিক সমাধান আনতে কাজ করছেন স্পেনডলিনি এবং স্কামেনের মতো অনেক ডেভেলপার।

দ্রুত অ্যাপ বানাতে স্পেনডলিনি এবং স্কামেনে সহায়তা নিয়েছেন ওরাকল অ্যাপ্লিকেশন এক্সপ্রেস বা ওরাকল এপেক্স লো-কোড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্মের।

সঙ্কটের সময় কার্যকর ওরাকল এপেক্স-এর মতো লো-কোড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্মগুলো। কেন? কারণ, কোনো জটিল প্রযুক্তির পেছনের কাজগুলো ডেভেলপারের জন্য সহজ করে দেয় এই প্ল্যাটফর্মগুলো। পেছনের প্রযুক্তি নিয়ে সময় নষ্ট না করে দ্রুত বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে কার্যকর অ্যাপ্লিকেশনে রূপ দিতে পারেন ডেভেলপার। এমনকি ডেভেললার নন এমন ব্যক্তিরাও অ্যাপ বানাতে পারেন এই প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে।

হাতের নাগালে লো-কোড প্ল্যাটফর্ম থাকাটা হলো প্রথম ধাপ। সঙ্কটের সময় অ্যাপ বানানো এবং উন্মোচনের জন্য আরও অনেক বিষয় বিবেচনার দরকার রয়েছে।

ডেভেলপারদেরকে অ্যাপ বানাতে সহায়তা করতে তিনটি পরামর্শ দিয়েছেন স্পেনডলিনি এবং স্কামেনে--

ছবি- রয়টার্স

১. দ্রুত কাজ এগোতে সবকিছু গুছিয়ে নেওয়া

সঙ্কটের সময় অ্যাপ বানানোর ক্ষেত্রে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখানোটা অত্যন্ত জরুরি। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গুছিয়ে কাজ করা।  স্কামেনের ধারণা ছিলো সঙ্কটের সময়ে অ্যাপটিতে গ্রাহকের অংশগ্রহণ থাকবে মাত্র কয়েক সপ্তাহ। লো-কোড প্ল্যাটফর্মে যেহেতু দ্রুত ফলাফল আসে তাই একটি দলের মাধ্যমে এপেক্স প্ল্যাটফর্ম প্রস্তুত করেছেন স্কামেনে।

এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, যে গ্রুপগুলোর ওপর অ্যাপটির সাফল্য নির্ভর করবে, যাদের স্টেকহোল্ডার বলা হয়, এমন প্রতিটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য ব্যবসাবুদ্ধিসম্পন্ন একেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া, যারা ওই গ্রুপগুলোর চাহিদা বুঝবেন। কারণ হিসেবে স্কামেনে বলছেন, এপেক্স আপনাকে এতো দ্রুত অ্যাপ বানাতে দেয় যে, “আপনি দ্রুত ভুল পথে চলে যেতে পারেন।"

ছবি- রয়টার্স

২. বিনামূল্যের ক্লাউড রিসোর্সগুলোর সুবিধা নেওয়া

সঙ্কটের সময় দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে অনলাইনের বিনামূল্যের রিসোর্সগুলো ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন স্কামেনে। ওরাকল এপেক্স ব্যবহার করায় ওরাকল অটোনমাস ডেটাবেইজের সহায়তা নিয়েছে তার দল।

একই কাজ করেছেন স্পেনডলিনি। ওরাকল ক্লাউড ফ্রি টিয়ারের অটোনমাস ডেটাবেইজ ব্যবহার করেছেন তিনি।

স্পেনডলিনি বলেন, “আমার কোনো ডিবিএ নেই, আমি নিজেও কোনো ডিবিএ নই। আমি এতে হাজারো বা শত ডলার খরচ করতে চাইনি, কারণ আমি জানতাম না এটি উন্মুক্ত হবে কিনা।”

“স্বয়ংক্রিয় ডেটাবেইজ ব্যবহারের মানে হচ্ছে, এর ব্যাকআপ নেওয়া হচ্ছে, এটি নিরাপদ এবং এর তদারকি হচ্ছে। আমাকে কিছুই করতে হচ্ছে না,” যোগ করেন স্পেনডলিনি।

ছবি- রয়টার্স

৩. সঙ্কটের অ্যাপটির জীবন কাল বুঝতে পারা

স্পনডেলিনি বলেন, “সঙ্কট মুহুর্তের এই অ্যাপগুলোর দুইটি নির্দিষ্ট পথ রয়েছে, এগুলো হয়তো জনপ্রিয়তা পাবে এবং ফুরিয়ে যাবে বা তথ্য কাঠামোর অংশ হবে” অন্য কোনো খাত বা সরকারি সংস্থার।

দুইটি পথের জন্যই প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্পেনডলিনি। অ্যাপগুলোতে কিছুটা পরিবর্তন এনে সেগুলো অন্য কাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তাই সঙ্কট শেষ হলেই এই অ্যাপগুলোর একেবারে হারিয়ে যায় না বলে তার ধারণা।