এবার ‘ফ্যাক্ট-চেক’ লেবেল সাঁটলো চীনা মুখপাত্রের টুইটে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পর এবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখপাত্রের টুইটে ‘ফ্যাক্ট-চেক’ বা সত্যতা যাচাইকরণ লেবেল সেঁটে দিয়েছে টুইটার।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2020, 08:52 PM
Updated : 28 May 2020, 08:52 PM

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখপাত্র লিজান ঝাও এক টুইটে লিখেছিলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীই হয়তো উহানে মহামারী নিয়ে এসেছিল।” টুইটটি পোস্ট করারও দু্ই মাস পরে এতে সত্যতা যাচাইকরণ লেবেল সাঁটলো টুইটার। হোয়াইট হাউজের সঙ্গে বিতণ্ডা শুরু হওয়ার পরের ঘটনা এটি। -- খবর বিবিসি’র।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমের ব্যাপারে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন ট্রাম্প। এ সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটে সত্যতা যাচাইকরণ লেবেল সেঁটে দেয় টুইটার। ওই ঘটনার পর রক্ষণশীল দলের প্রতি বিমাতাসূলভ পক্ষপাতের অভিযোগে সামাজিক মাধ্যম ‘বন্ধ’ করে দেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনাগুলোর পরেই লিজিয়ান ঝাওয়ের টুইটেও সেঁটে দেওয়া হয় সত্যতা যাচাইকরণ লেবেল। এর মধ্যে একটি টুইটে মে মাসের ১২ তারিখ ঝাও মার্কিন সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোলকে স্বচ্ছতা প্রশ্নে করোনাভাইরাসের দায় চাপান মার্কিন সেনাবাহিনীর উপর।

পরের দিন আরেকটি টুইটের সঙ্গে জুড়ে দেন এক নিবন্ধ। ওই নিবন্ধের দাবি ছিল, করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রে, মানুষকে নিবন্ধটি পড়তে এবং রিটুইট করতে উৎসাহিত করেন তিনি। হাজারো মানুষ রিটুইট করেন সেটি।

দুটি টুইটেই এখন নীল রঙের বিস্ময়সূচক চিহ্ন ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পাশে লেখা রয়েছে “কোভিড-১৯ এর ব্যাপারে সত্যটি জানুন”।

ওই ‘সত্যতা যাচাইকরণ’ লেবেলে ক্লিক করলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি পেইজে ব্যবহারকারীদের নিয়ে যাচ্ছে টুইটার। ওই পেইজে রাখা এক গবেষণায় লেখা রয়েছে প্রাণীকূল থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি হয়েছে, মানুষের মাধ্যমে ছড়ায়নি এটি।

খবরটি প্রথম প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক পোস্ট। সংবাদমাধ্যমটি নিজ প্রতিবেদনে দাবি করেছে, তাদের প্রতিবেদকদের চাপে চীনা কর্মকর্তার টুইটে লেবেল জুড়েছে টুইটার। নিউ ইয়র্ক পোস্ট আরও দাবি করেছে, টুইটারের বিরুদ্ধে ‘দ্বিমুখী’ আচরণের অভিযোগ তুলে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদকরা।

বিষয়টি অবশ্য নিশ্চিত করেননি টুইটার মুখপাত্র, শুধু বলেছেন, “ঝাওয়ের কনটেন্টে কোভিড-১৯ প্রশ্নে ভুল পথে পরিচালিত করার মতো বিষয় ছিল” এবং সেগুলোতে “বাড়তি অংশ” জানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এসব ঘটনার মধ্যেই কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন টুইটার প্রধান জ্যাক ডরসি। এক টুইটে তিনি বলেছেন, “কর্মীদেরকে এসবের বাইরে রাখতে”।

জ্যাক ডরসির ওই টুইটের পেছনের ঘটনা অবশ্য অন্য। ট্রাম্পের টুইটে লেবেল সাঁটার জন্য টুইটারের সততা বিভাগের প্রধান ইয়োয়েল রথ-এর দিকে আঙুল তুলেছেন বহু রক্ষণশীল। অনেক প্রখ্যাত রিপাবলিকান সদস্য, টুইটার কর্মী রথের “হোয়াইট হাউজে নাৎসি” এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে লেখা অন্যান্য অপমানজনক পুরোনো টুইট তুলে ধরেছেন।

টুইটার জানিয়েছে শুধু একজনই ‘সত্যতা-যাচাইকরণ’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন, আর তিনি হচ্ছেন স্বয়ং টুইটার প্রধান জ্যাক ডরসি। “একজন রয়েছেন যিনি আমাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের জন্য শেষ পর্যন্ত দায়বদ্ধ, আর সে মানুষটি আমি” – টুইট করেছেন ডরসি।

“আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বিতর্কিত বিবৃতিগুলোর সুতা মেলানো এবং বিতর্ক প্রসঙ্গে তথ্য দেওয়া যাতে মানুষ নিজেই তা যাচাই করে নিতে পারেন। আরও স্বচ্ছ্বতা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তাই আমাদের কর্মকাণ্ডের কারণ পরিষ্কার বুঝতে পারছেন মানুষ”। - বলেছেন টুইটার প্রধান ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডরসি।

আরও খবর: