স্টার্টআপ অ্যাপে ডাক্তার মিলছে কেনিয়ার নাইরোবিতে

খাবার টেবিলে বসে আছেন নাথালি মাইকেরে, কয়েক হাত দূরেই ভিডিও গেইম খেলছে তার সন্তানেরা। এরই মধ্যে ঘরে এলেন সাদা ল্যাব কোট পরা এক ডাক্তার। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে পরীক্ষা করলেন তাপমাত্রা, হৃদস্পন্দন এবং রক্ত চাপ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2020, 03:47 PM
Updated : 28 May 2020, 03:47 PM

এভাবেই মাইকেরের মতো আরও ছয়শ’ নাইরোবিয়ান-কে সেবা দিয়ে যাচ্ছে কেনিয়ান স্টার্টআপ ‘টিআইবিইউ হেলথ’। বাসাভিত্তিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। -- খবর রয়টার্সের।

নভেল করোনাভাইরাস প্রেক্ষাপটে মার্চ মাস থেকে সেবা দেওয়া শুরু করেছে ‘টিআইবিইউ হেলথ’। “মানুষ মনে করেন স্বাস্থ্য মানেই অসুস্থ হলে ক্লিনিক বা হাসপাতালে ছুটতে হবে”। - বলেছেন প্রধান নির্বাহী এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেসন কারমাইকেল। “তারা বুঝতে পারে না… অনেক সময়ই অসুস্থ হলে আপনাকে ক্লিনিকে যেতে হয় না। এটি আপনার কাছেও আসতে পারে।” 

মানুষের বাসায় গিয়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষা-ও করে থাকে টিআইবিইউ।

চিকিৎসা সেবা পেতে একটি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে হয় আগ্রহীদের। ওই অ্যাপের মাধ্যমে ডাক্তারের জন্য অনুরোধ জানালে নিকটবর্তী চিকিৎসা কর্মী বা ডাক্তারের সঙ্গে ‘পেয়ার’ বা ‘জুটি’ করে দেওয়া হয় তাকে। প্রয়োজনে রোগীর বাসায় উপস্থিত হয়ে সেবা দেন ডাক্তার বা চিকিৎসা কর্মী।     

সবমিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে বলে জানিয়েছেন কারমাইকেল। মূল জিনিসটাই হচ্ছে স্বাস্থ্য কিট। “আমরা সাধ্যের সবটুকু করছি।” – বলেছেন কারমাইকেল।

ডাক্তারদের বড় আকারের পিঠের ব্যাগটিতে রক্ত চাপ পরিমাপ থেকে শুরু করে নানাবিধ রোগ নির্ণয়ের কিট এবং ডায়াবেটিসের মতো অসুস্থতার ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে এমন টুল থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস অঙ্গরাজ্য ভিত্তিক ‘হিল’ এবং নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক ‘পেজার’-এর সেবার সঙ্গে মিল রয়েছে নাইরোবির স্টার্টআপ ‘টিআইবিইউ হেলথ’-এর।

প্রতিটি পরামর্শের জন্য এক হাজার কেনিয়ান শিলিং (১০ ডলারের কম) নিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। কেনিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে লক্ষ্য করে নিজেদের সেবা সাজিয়েছে ‘টিআইবিইউ হেলথ’। আফ্রিকা জুড়ে নিজেদের সেবা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে স্টার্টআপটির।

নিরাপদে ডিজিটাল সিস্টেমে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণ করা নিয়ে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে সেবাটিকে। কেনিয়াতে স্বাস্থ্য রেকর্ড ডিজিটাইজ করা শুরু হলেও, অনেক কিছুই এখনও কাগজে-কলমে রয়েছে, বাড়ছে ডেটা হারানো এবং অকার্যকারিতার ঝুঁকি।

“সবকিছুই রোগীর অ্যাপে রয়েছে, ফলে আপনি এখন কোথাও যাওয়ার পর যাক্তার যদি জিজ্ঞাসা করে ‘আপনার মেডিক্যাল রেকর্ড কোথায়?’ আপনাকে আর এখানে-ওখানে দৌড়াতে হয় না।” – বলেছেন কারমাইকেল।

টিআইবিইউ-এর প্রতিষ্ঠাতারা জানিয়েছেন, খুব দ্রুত প্ল্যাটফর্মটি ঘিরে আগ্রহ বেড়েছে। করোনাভাইরাসের ভয়ে লোকজনের হাসপাতালে যেতে না চাওয়া এতে ভূমিকা রেখেছে বলেও মনে করছেন তারা।

“আমরা এখন এটি করতে না পারলে, কখনই আর এটি কাজ করবে না!” – বলেছেন কারমাইকেল।