লকডাউন উঠলেও বাসা-থেকে-কাজ চালিয়ে যাবে যে প্রতিষ্ঠানগুলো

করোনাভাইরাস বাস্তবতায় অনেক প্রতিষ্ঠানের কাজই চলছে বাসা থেকে। লকডাউন উঠে গেলে আবারও সরগরম হবে অফিস পাড়া। তবে, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পাবেন স্থায়ীভাবে বাসা থেকে কাজ করার সুযোগ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2020, 06:57 PM
Updated : 23 May 2020, 06:57 PM

সিএনএন-এর এক প্রতিবেদন বলছে কোন প্রতিষ্ঠানগুলো লকডাউন উঠে গেলেও বাসা থেকে কাজের রেওয়াজ চালিয়ে যাবে এবং কেন তারা কর্মক্ষেত্রে এই বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসছেন-

১. ফেইসবুক: ফেইসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ শতাংশেরও বেশি ফেইসবুক কর্মী আগামী পাঁচ থেকে দশ বছর দূর থেকেই কাজ করবেন। বিষয়টিকে একদিক থেকে কর্মীদের ইচ্ছাপূরণ, আর অন্যদিকে “আরও বিস্তৃতভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের” তকমা দিয়েছেন জাকারবার্গ।

“যখন আপনি কর্মী নিয়োগ অল্প কয়েকটি বড় শহরের মধ্যে বা ওই শহরের অধিবাসীদের মধ্যে সীমিত করে ফেলবেন, তখন অনেকে বাদ পড়বেন যারা অন্য কোথাও বসবাস করেন, ভিন্ন পরিবেশে বাস করেন বা যাদের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। - নিজ ফেইসবুক পেইজে এক লাইভস্ট্রিমে বলেছেন জাকারবার্গ।

২. টুইটার: নিজেদের কিছুসংখ্যক কর্মীকে “আজীবন” বাসা থেকে কাজ করার সুবিধা দেবে টুইটার, যদি তারা তা করতে চান।

কোন পদমর্যাদার ব্যক্তিরা এই সুবিধার আওতায় পড়বে তা সুনির্দিষ্ট করে জানায়নি টুইটার। তবে, গত কয়েক মাস বাসা থেকে কাজ করে টুইটার দেখেছে দীর্ঘমেয়াদেও এটি করা সম্ভব। “যদি আমাদের কর্মীরা এমন কোনো দায়িত্বে বা অবস্থায় থাকে যে বাসা থেকে তাদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব এবং তারা যদি আজীবনও তা করতে চায়, আমরা সে ব্যবস্থা করবো।”

৩. স্কয়ার: টুইটার প্রধান জ্যাক ডরসির আরেকটি প্রতিষ্ঠান স্কয়ার। এই প্রতিষ্ঠানটিও মহামারীর পরে নিজ কর্মীদেরকে বাসা থেকে কাজ করতে দেবে। কর্মীরা যেখান থেকে যে পরিবেশ থেকে চান, সেখান থেকে তাদেরকে কাজ করতে দেওয়ার  ইচ্ছা স্কয়ারের।

“আগামীতে স্কয়াররা বাসা থেকে কাজ করতে পারবেন, এমনকি অফিস খুলে গেলেও। অফিসের বাইরে থেকে মানুষের কার্যকরীভাবে কাজ করার উপায় গত কয়েক সপ্তাহে আমরা শিখেছি, এবং আমরা সামনেও এটি শিখব”। - বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র। 

৪. শপিফাই: শপিফাই প্রধান নির্বাহী টবি লুটকে জানিয়েছেন, কাজের বিশ্ব নিজ দিক নির্দেশনা পরিবর্তন করেছে। “অফিস কেন্দ্রীকরণের দিন শেষ, আজ থেকে শপিফাই বাই ডিফল্ট ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান”। -এক টুইটে লিখেছেন তিনি। এ ছাড়াও নিজেদের অফিস ২০২১ সাল পর্যন্ত বন্ধ রাখার ব্যাপারেও জানিয়েছেন লুটকে।

পরে অফিস খুললেও অধিকাংশ কর্মীকে স্থায়ীভাবে বাসা থেকেই কাজ করতে দেবে শপিফাই। “এতোদিন অফিসে কাজ হতো। আমাদের সবসময়ই কিছু কর্মী থাকতো যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দূর থেকে অফিসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতো। এখন এটাই ঘুরে যাবে”। - টুইটে লিখেছেন লুটকে।

৫. গ্রুপ পিএসএ    

বাসা থেকে স্থায়ীভাবে কাজ করা কর্মীদের প্রতিষ্ঠানের তালিকায় নাম লিখিয়েছে ফরাসী গাড়ি নির্মাতা পিএসএ। গাড়ি উৎপাদনে কারিগরি কাজের সঙ্গে জড়িত নন, এমন কর্মীদের দূর থেকে কাজ করতে দেবে প্রতিষ্ঠানটি। “এরই মধ্যে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় নেওয়া হয়েছে যথাযথ পদক্ষেপ এবং হয়েছে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা, এরই আলোকে গ্রুপ পিএসএ টেলিওয়ার্কিং আরও দৃঢ় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটিকে উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন এমন কাজকর্মের আদর্শে পরিণত করছে।” -জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের অফিসগুলোকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে। যখন ‘ইন-পারসন’ সহযোগিতার প্রয়োজন পড়বে, তখন যাতে কাজে লাগানো যায় - এমনভাবে অফিসগুলোকে সাজানো হবে।

৬. বক্স

ক্লাউড-স্টোরেজ নির্ভর প্রতিষ্ঠান ‘বক্স’-এর প্রধান নির্বাহী অ্যারন লেভি এক ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার কর্মীকে “যেখান থেকে খুশি” কাজ করতে দেওয়া হবে। 

মহামারীর আগে ১৫ শতাংশ বক্স কর্মী দূর থেকে কাজ করতেন, প্রতিষ্ঠানটি প্রত্যাশা করছে এটি বাড়বে। “ঠিক একই সময়ে, আমরা অফিস হাবের ক্ষমতার ব্যাপারেও জানি যেখানে ‘ইন-পারসন কমিউনিটি’ গড়ে উঠতে পারে, নেটওয়ার্কিং, মেন্টরশিপ এবং সৃজনশীলতা দেখা যায়… এজন্যই আমাদের ভবিষ্যতকে বলা যায় হাইব্রিড”। - বলেছেন লেভি।           

লেভি জানিয়েছেন, বক্সের সাপ্তাহিক মিটিং ভবিষ্যতেও “সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল” হবে এবং কর্মীদেরকে বাসায় কাজের জায়গা উন্নত করতে ভাতা দেবে প্রতিষ্ঠানটি।