সন্ত্রাস, শিশু যৌনতার কনটেন্ট 'সরানো'র সময় ফ্রান্সে এক ঘণ্টা

সামাজিক মাধ্যম এবং কোনো ওয়েবসাইটে অপরাধমূলক কনটেন্ট পোস্ট করা হলে তা মুছে ফেলতে স্রেফ এক ঘন্টা সময় পাবে প্রতিষ্ঠানগুলো, নতুন এমন একটি আইন পাশ করেছে ফরাসী পার্লামেন্ট।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2020, 10:44 AM
Updated : 15 May 2020, 10:44 AM

যেসব কনটেন্ট ফরাসী কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসমূলক বা শিশু যৌন নিপীড়নমূলক হিসেবে বিবেচনা করবে সেগুলোর ক্ষেত্রে নতুন এই আইন প্রযোজ্য হবে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

নতুন এই আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে না পারলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বৈশ্বিক আয়ের সর্বোচ্চ চার শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হতে পারে, যা বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে কয়েকশ’ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে।

সমালোচকরা বলছেন, নতুন এই আইন মত প্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাত করবে।

ছোট বড় সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে এই আইন। তবে, এতো দ্রুত কনটেন্ট সরানোর মতো কারিগরি সক্ষমতা শুধু ফেইসবুক এবং গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোরই রয়েছে বলেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

দেশটির ডিজিটাল অধিকার সংগঠন ল্য' কোয়াদেরাতু দ্য' নেত বলছে, পুলিশ যে কনটেন্টগুলোকে “সন্ত্রাসী” হিসেবে বিবেচনা করছে সেগুলো এক ঘন্টার মধ্যে সরানোর বিষয়টি অবাস্তব।

সংগঠনটির এক মুখপাত্র বলেন, “বড় প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কারোরই সার্বক্ষণিক নজরদারীর সক্ষমতা নেই যে অনুরোধ আসার সঙ্গে সঙ্গেই কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে পারবে।”

“২০১৫ সাল থেকেই আমাদের এমন আইন রয়েছে, যেখানে পুলিশ কোনো কনটেন্ট সন্ত্রাসমূলক হিসেবে বিবেচনা করলে সেটি সরানোর অনুরোধ করতে পারে। রাজনৈতিক কনটেন্ট সরানোর জন্য ফ্রান্সে এটি একাধিকবার ব্যবহারও করা হয়েছে।”

“কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়া পুলিশকে এতোটা ক্ষমতা দেওয়াটা অবশ্যই মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করছে,” যোগ করেন ওই মুখপাত্র।

গত বছরই এক ঘন্টার মধ্যে কনটেন্ট সরানোর আইন করতে প্রস্তাব আসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে। কিন্তু সমালোচনার মুখে এটি তখন সামনে এগোয়নি।

এবারে প্রস্তাবিত ওই আইনটির নিজস্ব সংস্করণ পাশ করলো ফ্রান্স।

নতুন আইনের আওতায় সন্ত্রাসমূলক বা শিশু যৌন হয়রানি নয় এমন কোনো অবৈধ কনটেন্টের বিষয়েও অভিযোগ সঠিক বিবেচিত হলে সেগুলো সরানোর বেলায়ও প্রতিষ্ঠানগুলো সময় পাবে ওই ২৪ ঘন্টাই।

২৪ ঘন্টার মধ্যে এ ধরনের কনটেন্ট সরাতে ব্যর্থ হলে সাড়ে ১২ লাখ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হতে পারে।

নতুন এই আইন নিয়ে ফেইসববুক বলছে, “আইন বাস্তবায়নে আমরা” ফরাসি নীতিনির্ধারক সিএসএ এবং অন্যদের সঙ্গে নীবিড়ভাবে কাজ করছি।

অন্যদিক ইউটিউব বলছে, তারা ইতোমধ্যেই অবৈধ কনটেন্ট প্রতিহত করছে এবং সরকারের সঙ্গে নতুন যেকোনো অংশীদারিত্বকে তারা সাধুবাদ জানাচ্ছে।